২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

কুষ্টিয়ায় গ্রেফতার আতঙ্কে বিএনপি, কারাগারে ১৮ নেতাকর্মী

কুষ্টিয়ায় গ্রেফতার আতঙ্কে বিএনপি, গ্রেফতার ১৮ - ছবি : নয়া দিগন্ত

কুষ্টিয়ায় গ্রেফতার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে বিএনপির নেতা-কর্মিদের মাঝে। মঙ্গলবার রাতে সদর আসনে বিএনপির প্রার্থী জাকির হোসেন সরকারের নির্বাচনী অফিসে যুবলীগের নেতাকর্মীদের হামলার ঘটনায় শহর বিএনপির সভাপতি-সম্পাদকসহ ২৮ নেতাকর্মীর নামে যুবলীগ নেতার করা মামলায় রাতে আটককৃতদের মধ্য থেকে যাচাই বাছাই শেষে ১৮ জনকে গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের বুধবার দুপুরের পর আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেয়। এদিকে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও মামলা দায়েরের পর নির্বাচনী মাঠের চিত্র বদলে যেতে শুরু করেছে। আতঙ্কে অধিকাংশ বিএনপির নেতাকর্মী ঘর ছেড়ে নিরাপদে আশ্রয় নিচ্ছে। এতে প্রচার-প্রচারনায় নেমে বেকায়দায় পড়েছেন ধানের শীষের প্রার্থী জাকির হোসেন সরকার।

মঙ্গলবার রাতে নির্বাচনী কার্যালয় থেকে গ্রেফতার নেতাকর্মীদের নামে কুষ্টিয়া থানায় হামলা মারধর ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করেন সদর উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক নুরুল ইসলাম সুরুজ। মামলায় বিএনপি যুবদল ও ছাত্রদলের ২৮ জন নেতাকর্মিকে আসামী করা হয়। অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে আরও কয়েকজনকে।

রাতে আটককৃতদের মধ্য থেকে যাচাই বাছাই শেষে ১৮ জনকে গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ। আটককৃত কুষ্টিয়া শহর বিএনপির সভাপতি কুতুব উদ্দীনকে প্রধান আসামী করা হয়েছে।

অন্যান্য আসামীরা হলেন, শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক একে বিশ্বাস বাবুসহ শহর কমিটির ২৮ জন নেতা-কর্মী রয়েছে। বুধবার দুপুরের পর আটককৃত নেতাকর্মীদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। থানা থেকে নেতাকর্মীদের শহরের মধ্যে দিয়ে প্রিজনভ্যানে আদালতে নেয়ার সময় তারা ধানের শীষের পক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন। আদালত বিএনপি নেতাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

বিএনপি প্রার্থী জাকির হোসেন অভিযোগ করে বলেন, মঙ্গলবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে কুষ্টিয়া শহরের কোটপাড়ায় কোর্ট স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় তার নির্বাচনী কার্যালয়ে পৌর বিএনপির নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় করছিলেন। এসময় হঠাৎ করে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ১৫-২০ জন নেতাকর্মী লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। তারা কোন কথা না বলে টেবিল চেয়ার ভাঙচুর করে। দশ মিনিট থাকার পর তারা চলে যায়। এর কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে অভিযান চালায়।

তবে যুবলীগ নেতাদের অভিযোগ, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে জেলা যুবলীগের সভাপতি রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি ধানের শীষের প্রার্থী জাকির হোসেন সরকারের নির্বাচনী অফিস কোর্ট স্টেশনের সামনের সড়ক দিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় বিএনপি প্রার্থীর অফিস থেকে যুুবলীগের মিছিলে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করা হয়। এতে আহত হয় বেশ কয়েকজন।

অভিযোগ পেয়ে পুলিশ জাকির হোসেন সরকারের নির্বাচনী কার্যালয়ে অভিযান চালায় পুলিশ। ওই অফিস থেকে বিএনপি নেতা-কর্মীদের আটক করা হয়। এ ঘটনার পর বিএনপির নেতা-কর্মিদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত বিএনপির প্রার্থী বিক্ষিপ্ত ভাবে প্রচারনায় নামলেও কোন নির্বাচনী ক্যাম্প করতে পারেনি।

আর জেলা যুবলীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম বলেন, আমাদের মিছিলে হামলার কারনে তাদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পুলিশ এখন ব্যবস্থা নেবে।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন বলেন, হামলা, মারধর ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে মামলা হয়েছে। আসামীদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement