১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নড়াইলে ঘর থেকে শাশুড়ির লাশ ও আহত পুত্রবধূকে উদ্ধার

অপরাধ
শাশুড়ির লাশ ও আহত পুত্রবধূকে উদ্ধার করেছে পুলিশ - ছবি : নয়া দিগন্ত

নড়াইলের কালিয়া উপজেলার চাঁচুড়ি ইউনিয়নের চাপুলিয়া গ্রামে ঘরের ভিতর থেকে শাশুড়ি আঙ্গুরা বেগমের (৫০) রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পাশের কক্ষ থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে আঙ্গুরার পুত্রবধূ তানজিলা বেগমকে (২৫)।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে আঙ্গুরার লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত আঙ্গুরা চাপুলিয়া গ্রামের সরোয়ার হোসেনের স্ত্রী। এ সময় শাশুড়ি ও পুত্রবধূ ছাড়া অন্য কেউ বাড়িতে ছিলেন না। নিহত আঙ্গুরার মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

প্রতিবেশিরা জানান, আঙ্গুরাদের বাড়ির পাশে তেমন কোনো বাড়ি নেই। স্বামী ও দুই ছেলেও বাড়িতে থাকেন না। তারা বাইরে থেকে দিনমজুরের কাজ করেন। তবে, মা ও স্ত্রীর হতাহতের খবর শুনে তানজিলার স্বামী বালি সরবরাহ শ্রমিক শাকিল দুপুরে বাড়িতে আসেন। তিনিও এ হত্যাকান্ডে ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

কালিয়া থানার ওসি শেখ শমসের আলী বলেন, মঙ্গলবার সকাল ৯টা দিকে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কে বা কারা এ হত্যাকান্ডের ঘটিয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তানজিলাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

আরো পড়ুন :
চট্টগ্রামে নিজ বাসায় বৃদ্ধ মা-মেয়ে খুন
চট্টগ্রাম ব্যুরো, ১৬ জুলাই ২০১৮
নগরীর খুলশী থানার ফ্লোরা আটার মিল এলাকায় নির্মাণাধীন একটি ভবনে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বেলা ১২টায় ওই ভবনের পানির রিজার্ভ ট্যাংক থেকে মা ও মেয়ের লাশ দুইটি উদ্ধার করেছে পুলিশ।

হত্যাকাণ্ডের শিকার মেহেরুন্নেসা বেগম (৬৭) রূপালী ব্যাংকের সাবেক প্রিন্সিপাল অফিসার। ৯৪ বছর বয়সী মা মনোয়ারা বেগমকে সাথে নিয়ে ব্যক্তিগত ওই বাড়িতে থাকতেন তিনি। নিহতদের বাড়ি চাঁদপুর জেলার মতলব থানার নায়েরগাঁও গ্রামে।

সরেজমিন দেখা যায়, আটার মিল এলাকায় একটি পাহাড়ের ওপর দুইটি বাড়ি। স্থানীয়দের কাছে এটি আবাসিক এলাকা হিসেবে পরিচিত। এই দুইটি ভবনের একটির মালিক মেহেরুন্নেসা বেগম। ‘মেহেরুন্নেসা ভবন’ নামে ওই ভবনের নিচতলায় বৃদ্ধ মা মনোয়ারা বেগমকে নিয়ে থাকতেন তিনি। পুরো ভবনটি চার তলার কাঠামো হলেও কেবল নিচতলার কাজই শেষ হয়েছে। মা-মেয়ে ছাড়া আর কেউ ওই বাসায় থাকতেন না।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বৃদ্ধ মা মনোয়ারা বেগমের পাঁচ মেয়ে ও চার ছেলে। এর মধ্যে দুই ছেলে মারা গেছেন। দুই মেয়ে ও এক ছেলে দেশের বাইরে থাকেন। এক ছেলে থাকেন ঢাকায়, এক মেয়ে চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে এবং অন্য মেয়ে থাকেন ময়মনসিংহে। ৯ ছেলেমেয়ের মধ্যে কেবল মেহেরুন্নেসাই বিয়ে করেননি। মাকে নিয়ে তার সংসার।

মনোয়ারা বেগমের নাতি মুশফিকুর রহমান ব্যাপ্তি ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের জানান, আমার দাদু এবং ফুপু দীর্ঘদিন ধরে বাসায় অবস্থান করে আসছেন। দাদুর অসুস্থতার খবর পেয়ে সকালে বাসায় দেখতে আসি। কিন্তু দরজা খুলতে বলার বেশ কিছুক্ষণ কোনো সাড়া না পেয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় দরজা ভেঙে কাউকে দেখতে পাইনি। ঘর অগোছালো এবং কাপড় চোপড় এলোমেলো দেখতে পাই। তারপর অনেকক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর আমরা নিচতলার পানির রিজার্ভ ট্যাংক থেকে তাদের লাশ দেখতে পাই। পরে পুলিশে খবর দিলে তারা ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের দিয়ে লাশ দুইটি উদ্ধার করে।

খালা ও নানীর মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন মনোয়ারা বেগমের নাতি বেলাল উদ্দিন (৫০)। তিনি সাংবাদিকদের জানালেন, ২০০৬ সালে এ ভবনটি তৈরি হয়। তখন থেকেই এলাকার একটি সন্ত্রাসী বাহিনী এ জায়গার প্রতি লোভ ছিল। সেই লোভেই মনোয়ারা ও মেহেরুন্নেসাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি বেলাল উদ্দিনের।

খুলশী থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন নয়া দিগন্তকে বলেন, ঘরের মেঝেতে রক্তের দাগ পাওয়া গেছে। ঘরের আলমারি খোলা ছিল, বিভিন্ন জিনিসপত্র এলোমেলো ছিল। যেহেতু কেবল দুই নারীই ওই বাসায় বাস করতেন তাই প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে কেউ পরিকল্পিতভাবে তাদের হত্যা করে পানির ট্যাংকে ফেলে গেছে।

এ দিকে লাশ উদ্ধারের পর থেকেই পুলিশের ক্রাইম সিন ইউনিট, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), নগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) আলামত সংগ্রহের কাজ শুরু করছে।

বগুড়ায় মা ও মেয়ে নৃশংস খুন : নেপথ্যে পরকীয়া!
বগুড়া অফিস, ২১ আগস্ট ২০১৮
সোমবার রাতে বগুড়া শহরের টিনপট্টি এলাকায় নিজ বাসায় সৌদিপ্রবাসীর স্ত্রী ও শিশু কন্যা নৃশংসভাবে খুনের ঘটনার মূল ঘাতক হিসেবে মোবারক হোসেন বকুল (১৯) নামের এক যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। সে শহরের ফুলবাড়ী উত্তর পাড়ার মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। পেশায় ওয়ার্কশপ শ্রমিক বলে জানা গেছে। পুলিশ পরকীয়া সম্পর্ককে খুনের কারণ হিসেবে বলেছে। মঙ্গলবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার আশরাফ আলী এ তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে এসপি বলেন, নিহত রুবি বেগমের স্বামী ইউসুফ শেখের বন্ধু গ্রেফতারকৃত বকুলের বড় ভাই মুকুল। বড় ভাইয়ের সূত্র ধরে ওই বাড়িতে যাতায়াতের সুবাদে রুবির সাথে সম্পর্ক গড়ে ওঠে বকুলের। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কে রূপ নেয়। এরই সূত্র ধরে সোমবার রাত ১১টায় নিজ বাসায় বকুলকে আসতে বলেন রুবি। সেখানে এলে দুজনের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। এরপর রুবি বিয়ের চাপ দিলে দুজনের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বকুল চাকু মারেন রুবির বুকে। এসময় তার চিৎকারে রুবির কন্যা সুরাইয়া (৬) ঘুম থেকে জেগে উঠলে তাকে গলা টিপে হত্যা করে বকুল। এরপর তিনি পালিয়ে যান। এ সময় ওই বাসায় আর কেউ ছিল না। পুলিশ সকালে লাশ উদ্ধার করে। এরপর বকুলকে গ্রেফতার করলে তিনি হত্যার বর্ণনা দেন।

উল্লেখ্য , বগুড়া শহরের টিনপট্টি এলাকায় ঘরের ভিতর থেকে মা ও মেয়ের লাশ মঙ্গলবার পুলিশ উদ্ধার করেছে। সোমবার রাতে কোনো এক সময় তাদের হত্যা করা হয়। এর মধ্যে মা রুবি খাতুনকে(২৬) ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ও তার মেয়ে ছয় বছরের শিশু সুমাইয়াকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।

বগুড়া সদর থানা পুলিশ জানায়, ওই বাড়িতে গৃহবধূ তার মেয়েকে নিয়ে একটি ঘরে থাকতেন। তার স্বামী ইউসুফ শেখ সৌদি আরবপ্রবাসী। ঘরে মা ও মেয়ে থাকতেন। বাড়ির অন্য ঘরে পরিবারের অপর সদস্যরা থাকতেন। সকালে শোবার ঘরের বিছানার ওপর রুবির রক্তাক্ত ও শিশুর শ্বাসরোধ করা লাশ পাওয়া যায়।

বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞাসহ উধ্বর্তন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘনবসতিপুর্ন এলাকায় জোড়া খুনের ঘটনা এলাকায় আলোড়ন ফেলে। ঘরে লাশ পাওয়ার পর সেখানে শত শত লোক ভীড় জমায় লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠান হয়েছে।

বগুড়ার পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, হত্যাকান্ডের ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন ছাড়াও ইতোমধ্যে বেশ কিছু আলামত জব্দ করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের কারণ এখনো সুস্পস্ট নয়, তবে পরকীয়া কারণে এই ঘটনা ঘটতে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement