২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বাগেরহাট-২ আসন

আওয়ামী লীগে কোন্দল বাড়ছে সুবিধাজনক অবস্থানে বিএনপি

আওয়ামী লীগে কোন্দল বাড়ছে সুবিধাজনক অবস্থানে বিএনপি - ছবি : সংগৃহীত

বাগেরহাট-২ আসনে বা সদর আসনে একটি পৌরসভা, ১৭টি ইউনিয়ন ও ১১৯টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। মোট ভোটার দুই লাখ ৮৪ হাজার ৬৩ জন। নতুন ভোটার বেড়েছে ৩১ হাজার ৬১৪ জন। এ আসনের আয়তন ৪৪৯ বর্গ কিলোমিটার। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলার এই গুরুত্বপূর্ণ আসনে কোন দল থেকে কে প্রার্থী হচ্ছেন তা নিয়ে বিভিন্ন দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে চলছে নানা আলোচনা। বিশেষ করে প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নিয়ে আলোচনার শেষ নেই। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই এই দুই দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা বিভিন্ন স্থানে পোস্টার, ফেস্টুন, মামলা-হামলায় সমবেদনা আর রাজনৈতিক কর্মসূচিতে হাজিরা দিয়ে জানান দিচ্ছেন তাদের উপস্থিতি। নিয়মিত খোঁজখবর নিচ্ছেন নেতাকর্মীদের। 

কথিত রয়েছে, হজরত খানজাহান (রহ:)-এর পুণ্যভূমি বাগেরহাট সদর আসন ও হজরত শাহজালাল (রহ:)-এর পুণ্যভূমি সিলেট সদর আসন থেকে যে দলের প্রার্থী বিজয়ী হন তারাই সরকার গঠন করে থাকে। কাজেই গুরুত্বপূর্ণ এ আসনে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। তবে বর্তমানে এ আসনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব, মনোকষ্ট আর গ্রুপিং একটু বেশিই দৃশ্যমান। অন্য দিকে বিএনপিতে কিছুটা দ্বন্দ্ব থাকলেও তুলনামূলক আওয়ামী লীগের চেয়ে দলটি সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। 

দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে বাগেরহাট-২ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মীর সাখাওয়াত আলী দারু। ১৯৭৯ সালের সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী আ স ম মোস্তাফিজুর রহমান এমপি হন। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির শেখ আব্দুর রহমান এমপি হন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী আ স ম মোস্তাফিজুর রহমান আওয়ামী লীগের প্রার্থী মীর সাখাওয়াত আলী দারুকে পরাজিত করে আবারো এমপি হন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির বিতর্কিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিনা ভোটে বিএনপির প্রাথী আ স ম মোস্তাফিজুর রহমান কয়েক মাসের জন্য এমপি নির্বাচিত হন। এরপর একই বছরের ১২ জুন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মীর সাখাওয়াত আলী দারু নির্বাচিত হন।

মোস্তাফিজুর রহমানের মৃত্যুর পর ২০০১ সালের নির্বাচনে বাগেরহাট সদর আসন থেকে নির্বাচিত হন বিএনপির প্রার্থী বিশিষ্ট শিল্পপতি এম এ এইচ সেলিম। এ সময় তিনি বাগেরহাটের বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করায় ভোটাররা তার প্রতি আকৃষ্ট হন। পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে বিভিন্ন মামলায় আটক হওয়ার পর জামিনে মুক্ত হয়ে তিনি রাজনৈতিক জীবনে অনীহা প্রকাশ করেন। এরপর বিএনপির হাল ধরেন তার ভাই এম এ সালাম। ২০০৮ সালের নির্বাচনে এ আসনে বিএনপি তথা জোটের প্রার্থী হন এম এ সালাম। 

মীর সাখাওয়াত আলী দারু অসুস্থ হওয়ায় ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে দারুর ভাই মীর শওকাত আলী বাদশা এমপি নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনে মীর শওকাত আলী বাদশা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।

আওয়ামী লীগ থেকে মীর শওকাত আলী বাদশা আবারো প্রাথী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে তার ভাবী ফরিদা আক্তার বানু লুসী প্রার্থী হতে আগ্রহী। তিনি ইতোমধ্যে সর্বত্র পোস্টার লাগানোর মাধ্যমে প্রার্থিতার জানান দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনগুলোর বিভিন্ন সভা, সমাবেশ ও মিছিলে তার উপস্থিতি লক্ষণীয়। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় আইন উপকমিটির সদস্য, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা শেখ আলী আহমেদ খোকন প্রার্থী হতে আগ্রহী। মনোনয়নপ্রত্যাশীদের পোস্টার, ফেস্টুন বাগেরহাটের অলিগলিতে শোভা পাচ্ছে। 

এ ব্যাপারে শেখ আলী আহমেদ খোকন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলএম করার পর আইন পেশার শুরু থেকেই আজ অব্দি খুলনাসহ এলাকার নেতাকর্মীদের বিভিন্ন মামলা-মোকদ্দমায় সুপ্রিম কোটে আইনগত সহায়তা দিয়েছি। ওয়ান-ইলেভেনের দুঃসময়েও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে একজন আইনজীবী হিসেবে ভূমিকা রেখেছি। ছোটবেলা থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মনে প্রাণে লালন করি। ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে কর্মজীবন পর্যন্ত নিজেকে বঙ্গবন্ধুর একজন একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে নিজেকে প্রস্তুত করেছি। এখন বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার আশীর্বাদ নিয়ে বাগেরহাট ও কচুয়াবাসীসহ মানবকল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করতে আগ্রহী। 

এ দিকে বিএনপি থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে এম এ সালামের নাম উচ্চারিত হচ্ছে। এ মুহূর্তে এম এ সালামের বিকল্পও নেই বলে বিএনপির একটি গ্রুপ এবং ছাত্রদলসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা মনে করেন। তবে এ আসনে বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ এখনো তার ভাই এম এ এইচ সেলিমকেই বিএনপির প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান। তবে এম এ সালামকে অরাজনৈতিক ও অতি মাত্রায় চাটুকারনির্ভর হওয়ার অভিযোগ করেন জেলা যুবদল ও বিএনপির কিছু নেতা। এ আসনে ওই গ্রুপটি জেলা বিএনপির সহসভাপতি, ঢাকা মহানগর বিএনপির সাবেক সহদফতর সম্পাদক ও ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার সহকারী একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খানকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চায়। তবে প্রার্থী যেই হোন এ আসনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বিএনপি আর আওয়ামী লীগের প্রার্থীর মধ্যে। 

এ ছাড়া এ আসনে ইসলামী আন্দোলন থেকে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শেখ আতিয়ার রহমান, জাতীয় পার্টি থেকে হাজরা জাহিদুল ইসলাম বাবুল ও সিপিবি থেকে জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ফকরুল হাসান জুয়েল প্রার্থী হতে পারেন বলে ধারণা করছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।


আরো সংবাদ



premium cement
প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন ভারতীয় ৩ সংস্থার মশলায় ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান সাবেক শিবির নেতা সুমনের পিতার মৃত্যুতে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের শোক গণকবরে লাশ খুঁজছেন শত শত ফিলিস্তিনি মা ভারতের লোকসভা নির্বাচনে আলোচনায় নেতাদের ভাই-বোন ও সন্তান সংখ্যা চীনে শতাব্দীর ভয়াবহ বন্যার শঙ্কা, ঝুঁকিতে ১৩ কোটি মানুষ ভারতের মাঝারি পাল্লার নতুন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা ৩ দিনের ব্যবধানে দ্বিতীয়বার চেন্নাইকে হারাল লক্ষৌ ইসরাইলের সামরিক ঘাঁটিতে হামলা হিজবুল্লাহর যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশী : ১ মেক্সিকো, ২ ভারত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতেও পাকিস্তানে যাবে না ভারত!

সকল