২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মোংলা বন্দরের ট্রানজিট সুবিধা নিয়ে নেপালে পণ্য রপ্তানি শুরু

মোংলা সমুদ্র বন্দর - সংগৃহীত

বাংলাদেশ ভূ-খন্ডের ট্রানজিট সুবিধা ব্যবহার করে প্রথমবারের মত মোংলা সমুদ্র বন্দর ব্যবহার করে নেপালে পণ্য রপ্তানি শুরু হয়েছে। চীনের একটি বন্দর থেকে ২৫ হাজার ৩৫০ মেট্রিক টন সার নিয়ে বৃহস্পতিবার মোংলা বন্দরে নোঙ্গর করে সেন্ট ভিনসেন পতাকাবাহী এম ভি ঠেয়ো টোকজ নামের একটি জাহাজ।

মোংলা সমুদ্র বন্দরের ট্রানজিট সুবিধা নিয়ে ওই জাহাজের সব পন্য নেপালে যাবে বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছেন। মোংলা বন্দরের হারবাড়িয়ার ৭ নম্বর নোঙ্গরে বর্তমানে সারবাহী ওই বিদেশী জাহাজ অবস্থান করছে।

ট্রানজিট সুবিধার আওতায় ভারত, ভূটান ও নেপালের মোংলা সমুদ্র বন্দর ব্যবহারের অনুমতি আগেই দেয়া হয়। বাকি ছিল এর আনুষ্ঠানিকতা। চীনের একটি বন্দর থেকে ২৫ হাজার ৩৫০ মেট্রিক টন সার নিয়ে বৃহস্পতিবার মোংলা বন্দরে নোঙ্গর করে এম ভি ঠেয়ো টোকজ নামের জাহাজটি।

চীন থেকে আসা এসব সারের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের মেসার্স লিটমন শিপিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপক সৈয়দ মূর্তজা আলী বাপ্পী বলেন, নোঙর করা জাহাজ থেকে প্রাথমিকভাবে ছোট লাইটারেজ জাহাজে (কার্গো জাহাজ) করে সার খালাস করে তা যশোরের নওয়াপাড়ায় আনা হবে। সেখান থেকে বেনাপোল রুটের মাধ্যমে ভারতের বীরগঞ্জ কাষ্টমস ক্লিয়ারেন্স হয়ে মালবাহী ট্রেনে করে নেপালে যাবে এই সার।

নেপালের সাথে ট্রানজিট চুক্তি স্বাক্ষরের পর মোংলা সমুদ্র বন্দরের মাধ্যমে এই প্রথম পণ্য রফতানি হচ্ছে বলে জানান সৈয়দ মূর্তজা আলী বাপ্পী। তিনি আরো বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলের পালা থেকে ওই জাহাজে শ্রমিক বুকিং করে সার খালাসের কাজ শুরু হবে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে জাহাজের পুরো পণ্য খালাস শেষ হবে বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত দেড় মাস আগে চীন থেকে এ জাহাজটি মোংলা বন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। জাহাজে করে আনা নেপাল সরকারের এ সারের আমদানি মূল্য এক কোটি ১১ লক্ষ ৫৪ হাজার টাকা ও রফতানি মূল্য এক কোটি ৩২ লক্ষ ৩৭ হাজার ৭৭০ টাকা বলে জানিয়েছেন আমদানিকারক আমিনুর রশিদ।

আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান দেশ ড্রেডিং কর্পোরেশনের মালিক আমিনুর রশিদ আরো জানান, চীন থেকে নেপালের জন্য প্রতি হাজার মেট্রিক টন ঢালাই সার ৪৪০ ডলার দিয়ে আমদানি করে তা স্থানীয়ভাবে মোড়কজাত করার পর প্রতি হাজার টন সার ৫২২ দশমিক ২০ ডলারে রফতানি করা হচ্ছে। মোট ২৫ হাজার ৩৫০ মেট্রিক টন সার আমদানি করা হয়েছে।

বন্দর সূত্র জানায়, অনেক আগেই মেংলা বন্দরের মাধ্যমে ট্রানজিট সুবিধা নিতে ভারত, নেপাল ও ভূটান বাংলাদেশ সরকারকে প্রস্তাব দেয়। এরপর প্রতিবেশি এসব রাষ্ট্রকে মোংলা বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দেয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। এরপরই মোংলা বন্দর দিয়ে ট্রানজিট সুবিধার মাধ্যমে পণ্য পরিবহনের কাজ বৃহস্পতিবার থেকে দৃশ্যমান হয়।

সূত্র জানায়, ট্রানজিটের বিপরীতে কোনো শুল্ক আদায় করার সুযোগ নেই। তবে এই পণ্য পরিবহনের অবকাঠামো ব্যবহার, তা রক্ষণাবেক্ষণ, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ইত্যাদির সেবার জন্য মাশুল আদায় করা যাবে। বার্সেলোনা কনভেনশনের ধারা-৩ অনুযায়ী, ট্রানজিটের সুবিধার বিনিময়ে যেকোনো ধরনের অর্থ গ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে তবে ট্রানজিট পরিচালনা ব্যয় নির্ধারণ করে তা আদায় করার সুযোগ রয়েছে। গ্যাটের পঞ্চম ধারার ৩ থেকে ৬ উপধারার শর্ত অনুসারে দুই ভাগে মাশুল আদায় করা যায়।

পণ্য প্রবেশ ও বহিঃর্গমন পয়েন্টে বিভিন্ন সেবার বিনিময়ে মাশুল ও সার্ভিস চার্জ আদায় এবং ট্রানজিট পণ্যবাহী যানবাহনের ওপর নিবন্ধন ফি, শুল্ক ও কর, টোল ইত্যাদি আদায় করা যায়। স্থানীয় পরিবহণ ও ট্রানজিট পরিবহনের জন্য এসব ফি একই হারে প্রযোজ্য হবে।

তবে বাংলাদেশের শুল্ক আইনে ট্রানজিট বাবদ ফি ও সার্ভিস চার্জ আরোপ-সংক্রান্ত ধারা ১২৯ অর্থবিল ২০১১-১২ দ্বারা বাতিল করা হয়েছে। অর্থাৎ বাংলাদেশে ট্রানজিট মাশুল আরোপের আপাতত কোনো সুযোগ নেই।

এদিকে মোংলা সমুদ্র বন্দরের পণ্য আমদানিকারক ব্যবসায়ী এইচ এম দুলাল ও সৈয়দ জাহিদ হোসেন বলেন, ভারত, নেপাল ও ভূটানের পণ্যবাহী জাহাজ মোংলা বন্দরে ট্রানজিট সুবিধা ব্যবহারের কারণে এ বন্দরে পণ্য খালাস-বোঝাইয়ের পরিমান অনেক বেড়ে যাবে। একই সাথে জাহাজের সংখ্যাও বাড়বে। এ জন্য এ অঞ্চলে কর্মসংস্থান যেমন বৃদ্ধি পাবে তেমনি অর্থনৈতিক অবস্থার অনেক উন্নতি হবে।

তারা আরো বলেন, ট্রানজিটের ফলে মোংলা বন্দরের ওপর চাপ বাড়বে। এ জন্য বন্দরের সক্ষমতা আরো বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। বন্দরের ফেয়ারওয়েতে ড্রেজিং করা প্রয়োজন, জেটিতেও আমাদের আট মিটার ড্রাফটের জাহাজ যেন ভিড়তে পারে সেজন্য ড্রেজিং করতে হবে। ড্রেজিং না করার কারনে অনেক জাহাজ পণ্য খালাস করতে চট্রগ্রাম বন্দরে যেতে হয়। এ বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে।

এদিকে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর ফারুক হাসান, মোংলা বন্দরের হারবার মাষ্টর কমান্ডার দ্রুবুল হুদা জানিয়েছেন, বন্দরের হারবাড়িয়ার ৭ নম্বর নোঙ্গরে এম ভি ঠেয়ো টোকজ জাহাজের নোঙ্গর করার বিষয়ে তারা অবগত নন। তবে হারবার কন্ট্রোলে দায়িত্বরত কর্মকর্তা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৯ টায় সার বোঝাই এম ভি ঠেয়ো টোকজ নামের জাহাজটি নোঙ্গর করেছে।


আরো সংবাদ



premium cement
তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে ১২ উপজেলায় মানববন্ধন রোববারই খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শনিবার ক্লাসসহ ৪ নির্দেশনা ময়মনসিংহ ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের ঈদ পুনর্মিলনী বাস্তবায়নের আহ্বান ৩ গণকবরে ৩৯২ লাশ, ২০ ফিলিস্তিনিকে জীবন্ত কবর দিয়েছে ইসরাইল! মৌলভীবাজারে বিএনপি ও যুবদল নেতাসহ ১৪ জন কারাগারে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট কারীদের চিহ্নিতকরণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি ১২ দলীয় জোটের কলিং ভিসায় প্রতারণার শিকার হয়ে দেশে ফেরার সময় মারা গেল মালয়েশিয়া প্রবাসী নারায়ণগঞ্জ যুবদলের সদস্য সচিবকে আটকের অভিযোগ হাতিয়া-সন্দ্বীপ চ্যানেলে কার্গো জাহাজডুবি : একজন নিখোঁজ, ১১ জন উদ্ধার হঠাৎ অবসরের ঘোষণা পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়কের বগুড়ায় গ্যাসের চুলার আগুনে বৃদ্ধা নিহত

সকল