২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

উপহার দেয়া গাড়ি থেকে খালেদা জিয়ার নাম মুছে দিল ইবি প্রশাসন

ইবি
ইবির এই গাড়ি থেকে খালেদা জিয়ার নাম মুছে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন - ছবি : নয়া দিগন্ত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে (ইবি) উপহার দেয়া দুইটি গাড়ি থেকে বেগম খালেদা জিয়ার নাম মুছে ফেলেছে ক্যাম্পাস প্রশাসন। এনিয়ে ভিসির সাথে সাক্ষাৎ করে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছে ইবি জিয়া পরিষদ।

প্রশাসন বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘প্রশাসনিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েই গাড়ি থেকে খালেদা জিয়ার নাম মুছে ফেলা হয়েছে।’

জানা যায়, শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তাদের ভোগান্তি লাঘবে ১৯৯২ সালে এবং ১৯৯৫ সালে যথাক্রমে গাড়ি নম্বর ‘চ-০৮০০০২’ একং ‘চ-০৮-০০০৩ ইবির পরিবহণ পুলের উপহার হিসাবে দেন। এর পর থেকে গাড়ির বডিতে ‘প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উপহার’ বাক্যটি লেখা ছিল। উপহার দেওয়ার পর থেকে যত বারই গাড়ি রং করা হয়েছে এই লেখা মুছা হয়নি বলে জানা যায়।

তবে সম্প্রতি ওই গাড়ি দুটি রং করতে গিয়ে প্রশাসন গাড়ির বডি থেকে খালেদা জিয়ার নাম মুছে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দুটি গাড়ির মধ্যে ইতোমধ্যে ‘চ-০৮০০০৩’ গাড়িটি রং সম্পূর্ণ করেছে এবং অন্য গাড়িটি এখন রং সম্পূর্ণ হয়নি।

পরিবহন প্রশাসক প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘গাড়িগুলো নতুন করে রং করায় নতুন গাড়ি বলে মনে হচ্ছে। নতুন গাড়িতে খালেদা জিয়ার উপহার লেখা থাকলে সাধারণ মানুষ মনে করবে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় না থেকেও গাড়ি দিয়েছে। এমন সংশয় থেকে সর্বোচ্চ প্রশাসনকে বিষয়টি অবগত করলে তারা নাম বাদ দিয়েই গাড়ির রং সম্পন্ন করতে নির্দেশ দেয়।’

তবে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় না থাকলে অন্য দল হাসিনার দেয়া গাড়ি থেকে তার নাম মুছে ফেলতে পারবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক কালচারটাই আজ এরকম হয়ে গেছে। এ অবস্থা থেকে আমাদের বেড়িয়ে আসা উচিৎ।’

জিয়া পরিষদের নেতৃস্থানীয় নেতাদের সাথে কথা হয়েছে বিষয়টি নিয়ে। তারা স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘সিদ্ধান্তটি নিয়ে প্রশাসন ‘কুয়ার ব্যাঙ’ হিসাবে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছে। অন্যের অবদান স্বীকার করার সৎ সাহস থাকলে প্রশাসন এই প্রত্যাখ্যানযোগ্য সিদ্ধান্ত নিত না। প্রগতি প্রগতি বলে ঢোল বাজালেও আসলে এটি গাড়ি থেকে খালেদা জিয়ার নাম মুছে ফেলাটা ছোট মানসিকতার পরিচয় বহন করে।’

এদিকে নাম মুছার বিষয়ে প্রশাসনের যুক্তিকে অজ্ঞতার সামিল হিসাবে দেখছেন জিয়া পরিষদ। তাদের দাবি এটি পরস্পরের মধ্যে প্রতিশোধমূলক অবস্থার সৃষ্টি করবে। জিয়া পরিষদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত লিখিত স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘অন্যের অবদান অকপটে স্বীকার করে সত্য প্রকাশে ভূমিকা পালন করবেন।’

আরো পড়ুন :
ইবির ডায়েরি থেকে জিয়ার নাম বাদ
১৬ জুন ২০১৭
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমানের নাম ইবির পকেট ডায়েরি থেকে বাদ দেয়ার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জিয়া পরিষদ। গতকাল বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলা হয়, কুষ্টিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশের একমাত্র ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরুর পর থেকে দীর্ঘ ২০ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত ডায়েরিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে জিয়াউর রহমানের নাম উল্লেখ থাকত। বর্তমান সরকারের সমর্থক ও মদদপুষ্ট ভিসি শহীদ জিয়ার নাম বাদ দিয়ে পকেট ডায়েরি প্রকাশ করে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাষ্ট্রপতি মুক্তিযুদ্ধের সংগঠককে অপমান করার যে ধৃষ্টতা প্রদর্শন করেছেন তার নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের নেই।

বিবৃতিতে বলা হয়, দেশে প্রতিহিংসার রাজনীতির যে অপসংস্কৃতি তারা শুরু করেছে ভবিষ্যতে এটি তাদের জন্য বুমেরাং হবে। এতে বলা হয়, শহীদ জিয়ার নাম এ দেশের ১৬ কোটি মানুষের হৃদয়ে অক্ষয় হয়ে আছে। শহীদ জিয়ার নাম যারা মুছে ফেলার অপকর্মে লিপ্ত তারা ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। বিবৃতিতে অবিলম্বে ইবির পকেট ডায়েরিতে শহীদ জিয়ার নাম সংযুক্ত করে ডায়েরি প্রকাশের দাবি জানিয়ে যারা এই অপকর্মে জড়িত তাদেরকে জাতির সামনে ক্ষমা চাওয়ারও দাবি জানানো হয়।

বিবৃতি প্রদানকারী নেতারা হলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান কবীর মুরাদ, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান জাবির প্রফেসর এম সলিমুল্লাহ খান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জিয়া পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা: আবদুল কুদ্দুস, প্রফেসর ড. শফিকুল ইসলাম, প্রফেসর ড. লুৎফর রহমান, প্রফেসর ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, প্রফেসর ড. জি কে এম মোস্তাফিজুর রহমান, জিয়া পরিষদের মহাসচিব প্রফেসর ড. মো: এমতাজ হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আবদুল্লাহ মাসুদ, প্রফেসর ড. হাসানাত আলী, অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ, সহকারী মহাসচিব কৃষিবিদ মনোয়ারুল ইসলাম এনাম, ড. মোস্তফা কামাল পাশা, প্রকৌশলী রুহুল আলম, শহীদুল ইসলাম শহীদ প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি।


আরো সংবাদ



premium cement