২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

এনজিওর ঋণের টাকা পরিশোধ করেও কৃষক কারাগারে!

-

যশোরের চৌগাছায় এনজিওর ঋণের টাকা পরিশোধ করেও সাজেদুর রহমান (৫৬) নামে এক কৃষককে কারাগারে যেতে হয়েছে। তিনি উপজেলার স্বরুপদাহ ইউনিয়নের হিজলী গ্রামের মৃত মোবাশ্বের আলীর ছেলে।

চেক ডিজ-অনার মামলায় আদালত তাকে এক বছরের জেল ও ৩৬ হাজার পাঁচশত টাকা জরিমানা করে রায় দিয়েছে।

জানা যায়, এক বছরে ৮৯ হাজার ৬শ’ টাকা পরিশোধ করতে হবে শর্তে ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসে আর্স বাংলাদেশ নামে একটি এনজিওর চৌগাছা শাখা থেকে কৃষিকাজের জন্য ৮০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেন সাজেদুর রহমান। তিনি নির্ধারিত সময়ে কয়েক কিস্তিতে ঋণের ৪৬ হাজার ৬শ’ টাকা প্রদান করেন। ঋণের বাকি ৪৩ হাজার টাকা পরিশোধ করতে না পেরে এনজিওর কর্মকর্তাদের নিকট থেকে সময় নেন। তিনি সে সময়ের মধ্যেও টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন। তিনি ব্যর্থ হলে ঐ কৃষকের নিকট থেকে জামানত হিসেবে রাখা ইসলামী ব্যাংক চৌগাছা শাখার ৬৫ হাজার টাকার চেক দিয়ে এনজিওটি ২০১৬ সালে ঐ কৃষকের বিরুদ্ধে যশোরের আদালতে একটি চেক ডিজ-অনার মামলা করেন। যার নং এসসি/৮২৮/১৬।

সাজেদুর রহমান মামলার কথা জানতে পেরে ধারদেনা করে ২০১৭ সালের ২৯ অক্টোবর বকেয়া ৪৩ হাজার টাকা এনজিও অফিসে গিয়ে পরিশোধ করেন। পরিশোধের রশিদ নং ৯৪৭২, তারিখ-২৯-১০-২০১৭। টাকা পরিশোধ করার পরও এনজিও কর্মকর্তা মামলা প্রত্যাহার না করায় ২০১৭ সালের ৯ নভেম্বর মাননীয় আদালত সাজেদুর রহমানকে এক বছরের কারাদন্ড ও ৩৬ হাজার ৫শ টাকা জরিমানা করে রায় প্রদান করেন।

এনজিওর পক্ষ থেকে এ রায়ের ব্যাপারে তাকে কোনো কিছু বলা হয়নি এবং তিনিও জানতেন না।

এদিকে আদালতের রায়ের ৯ মাস পর ঐ কৃষকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু হয়। ১৬ জুলাই রাতে চৌগাছা থানা পুলিশের এসআই অনিল মুখার্জী কৃষক সাজেদুর রহমানকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার তাকে এক বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে জেল হাজাতে পাঠান।

এ ব্যাপারে কৃষক সাজেদুর রহমানের দুই ছেলে আনোয়ার হুসাইন ও বাবলুর রহমান বলেন, ‘আর্স বাংলাদেশে এনজিওর টাকা পরিশোধ করার পরেও তারা চেক-ডিজঅনার মামলাটি প্রত্যাহার না করায় আব্বুকে কারাগারে যেতে হয়েছে। আমরা পরে এনজিও কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে তারা দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এব্যাপারে আমরা আমাদের উকিল আব্দুল গফুরের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আদালতে ৩৬ হাজার পাঁচশত টাকা জমা দিয়ে তার জামিন চাইতে হবে।’

সাজেদুর রহমানের স্বজনদের অভিযোগ, ঋণের সমদয় টাকা পরিশোধের পরও আর্স বাংলাদেশ চৌগাছা শাখার এনজিও কর্মকর্তারা পরিকল্পিতভাবে রাগের বসে এ ঘটনাটি ঘটিয়েছেন।

এ ব্যাপারে আর্স বাংলাদেশ চৌগাছা শাখার ব্যবস্থাপক মিল্টন হোসেন বলেন, টাকা পরিশোধের আগেই মামলার রায় হয়ে গেছে। বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না।

দেখুন:

আরো সংবাদ



premium cement

সকল