২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

চৌগাছায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতির বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

-

যশোরের চৌগাছায় যাত্রাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতির বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ফলে দারুণ ভাবে ভেঙ্গে পড়েছে স্কুলটির শিক্ষাকার্যক্রম।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাযায়, বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আমিরুল ইসলাম কোন মিটিং ও রেজুলেশন ছাড়াই স্কুলমাঠ থেকে ১৯টি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে বিক্রি করে নিয়েছেন। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১০ লাখ টাকা। সভাপতি ঐ কাটা গাছ হালাল করতেই ভূয়া কাগজ পত্র তৈরী করে দিতে শিক্ষকদেরকে নানা ভাবে চাপদিতে থাকে। ফলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামানসহ সহকারী শিক্ষকরা গাছ কাটার বিষয়ে বিরোধিতা করে আসছিলেন। এক পর্যায়ে তা বিরোধে রুপ নেয়। ১ লা জুলাই সভপাতির হাতে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরা শারিরীক লাঞ্চিত হয়।
বুধবার শিক্ষকরা এ ঘটনায় অন্যেত্রে বদলীর, সভাপতির অপসরণ ও প্রতিকারের দাবীতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট লিখিত আবেদন করেন। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা শিক্ষাকর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন ও ক্লাস্টার সহকারী শিক্ষা অফিসার অরুপ কুমার লস্কার তদন্তের জন্য স্কুলে যান।
এ সময় উপস্থিত জনসাধারণ, প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষক লাঞ্চিত করার বিচারের দাবী ও স্কুল মাঠের ১৯ টি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কাটার কথা শিক্ষা অফিসারকে জানালে তিনি বলেন গাছ কাটার ঘটনাটি আমার সময়ে ঘটেনি। তবে শিক্ষক লাঞ্চিত করার বিচার আমরা বিভাগীয় ভাবে করব।
এদিকে সভাপতি আমিরুল ইসলাম কোন রেজুলেশন ছাড়াই গত ৩০ মার্চ ২০১৭ সালে স্কুল মাঠ থেকে ৩টি মেহগনি ও ১টি পিটলী গাছ কেটে বিক্রি করেন। যার বাজার মুল্য ২৪ হাজার ১শ টাকা। তিনি সভাপতি হওয়ার পরে সরকারী নীতিমালা লঙ্ঘন করে স্কুলের আঙ্গিনা থেকে মোট ১৯ টি গাছ কেঁটেছেন। যার কোন হিসাব নেই এ ঘটনায় এলাকাবাসী ফুঁসে উঠেছে।
আমিরুল ইসলাম ২০১৬ সালের ১৫ মে সভাপতি মনোনীত হন। সভাপতি হবার পর থেকেই তিনি স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকদের সাথে নানাভাবে খারাপ আচারণ শুরু করেন। যার ফলে মখলেছুর রহমান, শারমিন্নাহার নাইস ও রবিউল ইসলাম নামে ৩ জন শিক্ষক অন্য স্কুলে বদলী হয়ে চলে গেছেন। সর্বশেষ ১৩ মে ২০১৮ কামরুজ্জামান প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। তিনি যোগদানের ২ মাস পার না হতেই সভাপতির হাতে লঞ্চিত হলেন।
এ ব্যাপারে স্কুলের সহকারী শিক্ষক মফিজুর রহমান বলেন, শিক্ষক লাঞ্চনার ঘটনায় সভাপতির অপসারনরে দাবীতে ক্লাস বর্জন করেছি। পামাপাশি বদলীর জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর আবেদন করেছি। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা শিক্ষা অফিসার বেলায়েত হোসেন স্কুলে এসে প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষকদের সাথে সভাপতির হাত মিলিয়ে দিয়ে চলে যান।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চত করে বলেন বদলীর জন্য আবেদন করেছি।
সভাপতি আমিরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষকদের সাথে ভূল বুঝাবুঝি হয়েছিল যা উপজেলা শিক্ষা অফিসার বেলায়েত হোসেন মিমাংসা করে দিয়েছেন। আর গাছ কাঁটার বিষয়টি আদৌ সত্যনয়।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষক লাঞ্চিত ও বদলীর আবেদন পেয়ে বৃহস্পতিবার সরজমিনে তদন্ত করে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষকদের সাথে সমন্বয় করে দিয়েছি। আর গাছ কাটার বিষয়টি আমার সময়ে হয়নি। আমি যতদূর জানি,ওই স্কুলের সভাপতি সংশ্লিষ্ট উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের সাথে বসাবসি করে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলেছেন।
উপজেলা শিক্ষা কমিটির সদস্য ও ভাইস-চেয়ারম্যান দেবাশীষ মিশ্র জয় বলেন, বর্তমান সরকার শিক্ষার ব্যাপারে খুবই আন্তরিক। তাই কারও বিরুদ্ধে সূর্নিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম হাবিবুর রহমান বলেন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ঘটনাটি আমাকে বলেছেন। আমি ঢাকা থেকে ফিরে বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেব।


আরো সংবাদ



premium cement