২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

তাকাফুল : ইসলামী ইন্স্যুরেন্স-৩

-

ইসলামী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি অনেকটা সমবায়ভিত্তিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারহোল্ডার বা মালিক এবং পলিসি হোল্ডাররা পারস্পরিক সহযোগিতা ও সংহতির ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানটির আয় এবং দায়দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নেন।
পারস্পরিক সাহায্য-সহযোগিতা, দান-অনুদান অবশ্যই পুণ্যের কাজ।
আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে আমরা চিনি বা না চিনি, জানি বা না জানি, যেকোনো মানুষকেই সাহায্য করা যায়।
একশত বা পাঁচশত বা এক হাজার লোকও যদি একত্র হয়ে প্রতিজ্ঞা করে যে, আমরা কারো বিপদ-আপদে সাহায্য করব বা পরস্পরকে সাহায্য করব এবং তার দুঃখ-যাতনায় বা অভাব দূরীকরণে আর্থিকভাবে এগিয়ে যাবো; তা কি ইসলামবিরোধী হতে পারে?
একশত লোক যদি এমন হলফ করে যে, তারা সবাই একটা সাধারণ তহবিলে মাসে একশত টাকা হারে জমা করবে; আর সে টাকায় যা লাভ হয় তা পূর্ব নির্ধারিত নীতিমালা ও শর্ত অনুযায়ী ভাগ করে নেবেÑ তা কি শরিয়তবিরোধী হবে? যেখানে হাদিসে বলা হয়েছেÑ ‘মুসলমানরা তাদের পাস্পরিক শর্তানুযায়ী আমল করতে পারে।’
একশত লোক প্রতি মাসে ১০০ টাকা হারে জমা করলে এক বছরে হবে ১,২০,০০০ (এক লাখ বিশ হাজার) টাকা। এ থেকে দ্বিতীয় বছরে সম্ভাব্য ন্যূনতম লাভ হবে ১২ হাজার টাকা। এই একশত লোক যদি সম্মত হয়ে শর্ত করে যে, ‘আমরা এ বছর যদি আমাদের মধ্যে কেউ মারা যায়, তা হলে নিজেরা কোনো লাভ না নিয়ে, ওই এক লাখ বিশ হাজারের পুরো আয় ওই মৃত সদস্যের পরিবারকে সাহায্যার্থে তা দান করে দেবো’। তা হলে সেটি কি ইসলামবিরোধী হয়ে যাবে? না, কখনো হবে না। আর এরই নাম হচ্ছে ইসলামী ইন্স্যুরেন্স।
যদিও আমরা বাহ্যিক দৃষ্টিতে দেখতে পাচ্ছি যে, দৈব-দূর্বিপাক ও বিপদগ্রস্ত লোককে সাহায্যের স্লোগান নিয়ে পাশ্চাত্যের লোকেরা এই ইন্স্যুরেন্স সিস্টেম চালু করেছে; তা প্রকৃত অর্থে বাস্তব নয়। বাস্তবে এটা হচ্ছে ইসলামের আদর্শ। ইসলাম এই আদর্শ মুসলিম উম্মাহকে অনেক আগেই শিক্ষা দিয়েছে এবং মুসলমানরা তা হাজার বছর আগে থেকেই লালন-পালন করে আসছে। ইসলামের ইতিহাস ঘাঁটলে তার ভূরি ভূরি প্রমাণ পাওয়া যাবে। তবে হ্যাঁ, এ টুকু বলা যায় যে, তার প্রাতিষ্ঠানিক রূপ প্রদানে অন্যরা অগ্রগামী হয়ে গেছে; যেখানে অগ্রগামী হওয়ার কথা ছিল আমাদের, মুসলমানদের।
লেখক : মুফতি, ইসলামিক ফাউন্ডেশন


আরো সংবাদ



premium cement