২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

কল্যাণের পথে দাওয়াত

-

সমাজের সর্বত্র মদ, জুয়া, হেরোইন, গাজা, ইয়াবা, ফেনসিডিলসহ নানান ধরনের নেশা-পানির বিস্তৃতি রয়েছে। যা কিশোর, তরুণ ও যুবকদের ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যে বয়সে কিশোর ও তরুণদের হাতে বই-খাতা থাকার কথা, সে বয়সে তাদের হাতে নেশাজাতীয় দ্রব্য পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। যা পরিবার সমাজ রাষ্ট্রের মানবসম্পদ ধ্বংসের জন্য অশনি সঙ্কেত। ইরশাদ হয়েছে, ‘(হে নবী!) লোকেরা আপনাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবে; আপনি বলে দিন, এই দুটোর মধ্যে রয়েছে মহাপাপ।’ (সূরা বাকারা : ২১৯)। ‘শয়তান তো মদ ও জুয়া দ্বারা তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ ঘটাতে চায় এবং তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ ও নামাজ আদায়ে বাধা দিতে চায়। তবে কি তোমরা নিবৃত্ত হবে না।’(সূরা মায়িদা : ৯১)।
দাওয়াত শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো ডাকা বা আহ্বান করা। সব নবী রাসূল দাওয়াত দিয়েছেন। দাওয়াত দেয়া একটি উত্তম কাজ। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তার চেয়ে কার কথা উত্তম, যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, অবশ্যই আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত।’ (সূরা হা-মীম সিজদাহ:৩৩)। দাওয়াত দেয়ার জন্য কুরআনে তাগিদ দেয়া হয়েছে। কারণ দাওয়াত মানুষের ভুল ও বিভ্রান্তিগুলোকে দূর করে দেয়। দাওয়াতের মাধ্যমে মানুষ সত্য মিথ্যার পার্থক্য নির্ণয় করতে পারে। ইরশাদ হয়েছে ‘তোমাদের মধ্যে থেকে একটি দল থাকা উচিত যারা আহ্বান জানাবে সৎকর্মের প্রতি, নির্দেশ দিবে ভালো কাজের এবং বারণ করবে অন্যায় কাজ থেকে, আর তারাই হলো সফলকাম।’ (সূরা আল ইমরান : ১০৪)।
সব সময় ভালো কাজের দিকে, কল্যাণের পথে দাওয়াত দিতে হবে। যদি কেউ মিথ্যা অশ্লীল মন্দ কাজের দিকে দাওয়াত দেয়, তা হলে কিয়ামত দিবসে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। কারণ মানুষের ভালো মন্দ উভয় আমলনামায় লিপিবদ্ধ থাকে। ইরশাদ হয়েছে, ‘কেহ কোন ভাল কাজের সুপারিশ করিলে উহাতে তাহার অংশ থাকিবে এবং কেহ কোন মন্দ কাজের সুপারিশ করিলে উহাতে তাহার অংশ থাকিবে।’ (সূরা নিসা: ৮৫)। ‘কেউ কোনো সৎ কাজ করলে সে তার দশগুণ পাবে, আর কেউ যদি অসৎ কাজ করে তবে তাকে তারই প্রতিফল দেয়া হবে আর তাদের প্রতি কোনো জুলুম করা হবে না।’ (সূরা আনআম : ১৬০)।
নেশা-পানি থেকে ফেরাতে ইসলামের শিক্ষা দেয়া জরুরি। তরুণদের ইসলামী শিক্ষা দেয়া এখন সময়ের দাবি। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ, তোমাদের কী হলো, যখন আল্লাহর পথে বের হওয়ার জন্য তোমাদের বলা হয়, তখন তোমরা জমিনের প্রতি প্রবলভাবে ঝুঁকে পড়? তবে কি তোমরা আখিরাতের পরিবর্তে দুনিয়ার জীবনে সন্তুষ্ট হলে? অথচ দুনিয়ার জীবনের ভোগ-সামগ্রী আখিরাতের তুলনায় একেবারেই নগণ্য। যদি তোমরা বের না হও, তিনি তোমাদের বেদনাদায়ক আজাব দিবেন এবং তোমাদের পরিবর্তে অন্য এক কওমকে আনয়ন করবেন।’ (সূরা তাওবা : ৩৮-৩৯)।
নেশা-পানি গোনাহের পথ। গোনাহের পথ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার পাশাপাশি অন্যকেও গোনাহের পথ থেকে বেঁচে থাকার জন্য দাওয়াত দিতে হবে। হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা:) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূল সা: ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের কেউ যদি কোনো অন্যায় কাজ অনুষ্ঠিত হতে দেখে, তাহলে সে যেন তা তার হাত দিয়ে ঠেকায়। আর যদি তার সে শক্তি না থাকে, তাহলে যেন মৌখিকভাবে নিষেধ করে। যদি সে মৌখিক বারণ করতেও অপারগ হয়, তাহলে যেন অন্তরে ওই কাজকে প্রতিরোধের চিন্তা করে। আর অন্তরে প্রতিরোধের চিন্তা করাটা হলো ঈমানের দুর্বলতার লক্ষণ।’ (মুসলিম:১/৪৯)। হজরত আনাস (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সা: বলেছেন, ‘মেরাজের রাতে আমি দেখতে পেলাম, কতগুলো লোকের ঠোঁট আগুনের কাঁচি দিয়ে কাটা হচ্ছে। আমি জিব্রাঈল (আ:) কে প্রশ্ন করলাম, এরা কারা? তিনি বললেন, এরা হলো আপনার উম্মতের মোবাল্লিক (প্রচারক)। যারা অপরকে নেক করার নসিহত করত কিন্তু নিজেরা তা আমল করত না।’ (মুসনাদে আহমদ : ২/১৩৫১৪)। সরলতা, অনাড়ন্বর ও সাদাসিধে জীবনযাপন হলো ইসলামের পথ। রাসূল সা: ও তাঁর সাহাবিগণ সাদাসিধে জীবনযাপন করতেন।
লেখক : প্রবন্ধকার


আরো সংবাদ



premium cement
বস্ত্র-পাট খাতে চীনের বিনিয়োগ চায় বাংলাদেশ জামালপুরে সাব রেজিস্ট্রারকে হত্যার হুমকি মামলায় আ’লীগ নেতা গ্রেফতার গাজায় অনাহার যুদ্ধাপরাধ হতে পারে : জাতিসঙ্ঘ ‘প্রত্যেককে কোরআনের অনুশাসন যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে’ মতলব উত্তরে পানিতে ডুবে ভাই-বোনের মৃত্যু প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের শেষ ধাপের পরীক্ষা শুক্রবার লম্বা ঈদের ছুটিতে কতজন ঢাকা ছাড়তে চান, কতজন পারবেন? সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করলেন ভুটানের রাজা জাতীয় দলে যোগ দিয়েছেন সাকিব, বললেন কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই কারওয়ান বাজার থেকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে ডিএনসিসির আঞ্চলিক কার্যালয় এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নিন : প্রধানমন্ত্রী

সকল