২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আল্লাহ সুদকে হারাম ব্যবসাকে হালাল করেছেন

-

যারা সুদ খায়, ঘুষ খায়, দুনিয়ালোভী এবং অন্যায়ভাবে অপরের মাল ভক্ষণকারীÑ আল্লাহ তায়ালা ওই সব লোকের বর্ণনা দিচ্ছেন, যাদেরকে কিয়ামতের দিন কবর থেকে পুনর্জীবন দিয়ে উঠানো হবে এবং বিচারের জন্য সমবেত করা হবে। যারা সুদ খায় তারা শয়তানের স্পর্শে মোহাবিষ্ট ব্যক্তির মতো কিয়ামতের দিন দণ্ডায়মান হবে। তারা বলে ব্যবসা সুদের অনুরূপ বৈ তো নয়। ওই সুদখোর লোকেরা তাদের কবর থেকে দিকভ্রান্ত হয়ে উত্থিত হবে। ইবনে আব্বাস রা: বলেন, যারা সুদ খায় তাদের কবর থেকে শৃঙ্খলিত বন্দী হিসেবে তোলা হবে। রাসূলুল্লাহ সা:-কে স্বপ্নে দেখানো হয়েছিল তিনি বলেন যে, আমি একটি লাল রংবিশিষ্ট নদীতে পৌঁছি। যার পানি রক্তের মতো লাল ছিল। তখন আমি দেখি যে এক লোক অতি কষ্টে নদীর তীরে আসছে। কিন্তু একজন ফিরিশতা বহু পাথর জমা করে বসে আছেন আরো একজন ফিরিশতাসহ। লোকটি নদীর তীরে পৌঁছার সাথে সাথে একজন ফিরিশতা তার মুখ হা করে ধরছেন, অপরজন মুখে পাথর ভরে দিচ্ছেন। তখন সে ওখান থেকে পলায়ন করে পুনরায় তীরে ফিরে আসছে। পুনরায় তার সাথে একই রূপ ব্যবহার করা হচ্ছে। নবী সা: বলেন, আমি জিজ্ঞেস করে কারণ জানতে পারি যে, সে সুদখোর ছিল। (ফাতহুল বারী ৩/২১৫)।
আল্লাহ বলেন, ব্যবসা সুদের অনুরূপ নয়, তাই আল্লাহ পাক ব্যবসাকে হালাল করেছেন আর সুদ করেছেন হারাম।
এটা মনে রাখার বিষয় যে, তারা যে সুদকে ক্রয়-বিক্রয়ের ওপর অনুমান করে করত তা নয়। কেননা মুশরিকরা আগে থেকেই ক্রয়-বিক্রয়কে শরিয়তসম্মত বলত না। তাদের উত্তর দেয়া হয়েছে যে, আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী বৈধ-অবৈধতা সাব্যস্ত হয়েছে। এও সম্ভাবনা রয়েছে যে এটা কাফেরদের উক্তি। তাহলে সূক্ষ্মতার সাথে একটি উত্তরও হয়ে গেছে, আল্লাহ তায়ালা একটিকে হালাল করেছেন অপরটিকে হারাম করেছেন, এই জ্ঞান থাকা সত্ত্বেও প্রতিবাদ কিসের। সর্বজ্ঞ মহাবিজ্ঞানময় আল্লাহর নির্দেশের ওপর প্রতিবাদ উপস্থাপন করার তোমরা কে? তার কাজের বিশ্লেষণ করার মানুষের কী অধিকার আছে? তাঁর বান্দাদের ভালোমন্দ তিনিই নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তিনি উপকারী বস্তু হালাল করেন ক্ষতিকর বস্তু হারাম করেন।
বর্তমান সমাজে একটি চাকরি পেতে হলে, স্কুল, কলেজে ভর্তি করাতে হলে, অফিস-আদালতে একটা ফাইল মুভ করতে হলে মোটা অঙ্কের ঘুষ দিতে হয়। সেটাও আরেক প্রকার জুলুম ও সুদ এর মতো ক্ষতিকর প্রথা।
কুরআনুল কারিম হলো সর্বশ্রেষ্ঠ সংবিধান। তাতে মানবজীবনের সব সমস্যার সমাধান আছে। একজন মা দুগ্ধপায়ী শিশুর ওপর তত করুণাময়ী হতে পারে না আল্লাহর করুণা বান্দাদের ওপর যতটুকু আছে। তিনি যা নিষেধ করেছেন তাতে অমঙ্গল আছে। তিনি যা আদেশ করেছেন তাতে মঙ্গল আছে।
আল্লাহ তায়ালার বাণী শ্রবণের পর যে সুদ-ঘুষ খাওয়া বন্ধ করে তাওবা করে আল্লাহর দিকে ফিরে আসবে আল্লাহ তায়ালা তাকে মাফ করে দেবেন।
লেখক : নিবন্ধকার


আরো সংবাদ



premium cement