১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কুরআন পড়ি বুঝে বুঝে

-

কুরআন মানবজাতির জন্য পথপ্রদর্শক। আর সব মানুষ যেন কুরআন পড়তে ও বুঝতে পারে তাই এই গ্রন্থকে করা হয়েছে পাঠ ও বোঝার ক্ষেত্রে সহজ। আল্লাহ নিজেই বলছেনÑ
‘আর অবশ্যই আমি কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্য, তাই কোনো উপদেশ গ্রহণকারী কেউ আছে কি?’ (আল-কামার : ১৭)।
কুরআন বোঝার জন্য একটি চমৎকার বই ‘কুরআন পড়ি বুঝে বুঝে’ বইটি সম্পাদনা করেছেন, সোসাইটি ফর কুরআন রিসার্চের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এমদাদুল হক চৌধুরী।
প্রথমত, পবিত্র কুরআনে মোট শব্দ সংখ্যা প্রায় ৭৮ হাজার, এর মধ্যে ১২৫টি শব্দ এসেছে প্রায় ৪০ হাজার বার। এই ১২৫টি শব্দের অর্থ, কোন শব্দটি কতবার পুনরাবৃত্তি হয়েছে, তার তালিকা। পবিত্র কুরআনে ছয়টি শব্দ এসেছে প্রায় ১০ হাজার বার। বলা হয়ে থাকে আল কুরআনে এমন কোনো আয়াত নেই যেখানে এই ছয়টি শব্দের একটি শব্দ পাবেন না। এই ছয়টি শব্দ দিয়ে কুরআনিক ঝবহঃবহপব গঠনের চমৎকার কৌশল।
দ্বিতীয়ত, বইটিতে গ্রামার ছাড়া কুরআন বোঝার জন্য কিছু কৌশল দেয়া হয়েছে। ফলে, কুরআন বোঝার ক্ষেত্রে গ্রামাটিক্যাল জটিলতা তেমন একটা নেই বললেই চলে। গ্রামার ছাড়া কুরআন বোঝার কিছু প্রাকটিস শিটও বইটিতে দেয়া আছে।
তৃতীয়ত, আল কুরআনে ‘ক্বাদ, সাওফা, লাম, ইত্যাদির কোনো কোনো ক্ষেত্রে কী অর্থ বহন করে তার চমৎকার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
চতুর্থ, আল কুরআনে ব্যবহৃত সব ‘হরফুন জের, বা অব্যয়’Ñ পুরো তালিকা দেয়া হয়েছে।
পঞ্চমত, আল কুরআনের সূরা বাকারার সব শব্দের অর্থ রুকু ভিত্তিক দেয়া হয়েছে।
ষষ্ঠ, আল কুরআনে ব্যবহৃত সর্বাধিক ফে’লগুলোর সিগাসহ তুলে ধরা হয়েছে। এবং কোন ফে’লটি কুরআনে কতবার এসেছে তার সংখ্যাও তুলে ধরা হয়েছে।
রাসূল সা: কুরআনের প্রতিটি শব্দ ও বাক্য গভীরভাবে অনুধাবন করে বুঝে তিলাওয়াত করতেন। হজরত হুজায়ফা ইবনে ইয়ামান রা: থেকে বর্ণিতÑ তিনি বলেন, একদিন রাতে আমি রাসূল সা:-এর সাথে নামাজ পড়ছিলাম। তিনি খুব ধীরে ধীরে তিলাওয়াত করছিলেন। যখন আল্লাহর গুণগানের আয়াত আসত তখন তিনি সুবহানাল্লাহ বলতেন। প্রার্থনার আয়াত এলে প্রার্থনা এবং কোনো কিছু থেকে পানাহ চাওয়ার হলে ‘আউজুবিল্লাহ’ বলে পানাহ চাইতেন। (মুসলিম)। এ থেকে বোঝা যায়, রাসূল সা: বুঝে বুঝে তিলাওয়াত করতেন। না বুঝে তিলাওয়াত করাকে রাসূল সা: পছন্দ করতেন না। তরুণ সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস রা: রাসূল সা:-এর কাছে এসে বলল, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমি প্রতিদিন কুরআন খতম করতে চাই। রাসূল সা:- বললেন, তিন দিনের কম সময়ে খতম করো না। কারণ এতে কুরআনের কিছুই বোঝা যাবে না। (তিরমিজি)। রাসূল সা:-এর সংস্পর্শধন্য সাহাবিরাও কুরআন গবেষণায় ছিলেন সজাগ ও সতর্ক। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা: বলেন, আমাদের মধ্যে কেউ ১০ আয়াত শিখে তা বুঝে অনুধাবন এবং আমল না করা পর্যন্ত সামনে বাড়ত না। (তাফসিরে তাবারি : ৮১)। তাবেয়ী আবদুর রহমান আবদুল্লাহ রহ: বলেন, আমাদের যারা কুরআন শেখাতেন তারা বলতেন, আমরা রাসূল সা: থেকে ১০ আয়াত শিখতাম, বুঝতাম এবং আমল করতাম। তারপর সামনে সবক নিতাম। এভাবে কুরআন শেখার পাশাপাশি বোঝা এবং আমলও চর্চা হয়ে যেত আমাদের। (মুকাদ্দামা ইবনে কাসির)। উল্লেখ্য, লেখকের এ জাতীয় আরো একটি বই ‘বুঝে বুঝে সালাত আদায়’ এটিও পাঠক সমাদৃত।
বইটি প্রকাশ করেছে নিউক্লিয়াস পাবলিকেশন, প্রচ্ছদ : ফরিদী নোমান, হাদিয়া : ৩৫০ টাকা

 


আরো সংবাদ



premium cement