২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আরোগ্য দানের মালিক আল্লাহ

-

আল্লাহ তায়ালা মাঝে মধ্যে রোগ-বালাই দিয়ে বান্দার ঈমানের দৃঢ়তা বা ওজন পরীক্ষা করে থাকেন। তিনি দেখতে চান, বিপদ-আপদকালীন সময়ে তাঁর বান্দাদের মধ্যে কে বা কারা, তাঁর ওপর অবিচল আস্থা বা বিশ্বাস রেখে, ধৈর্যের সাথে সামনের দিকে এগিয়েছে। কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান-মাল ও ফল-ফলাদির স্বল্পতার মাধ্যমে।’ (সূরা বাকারা : ১৫৫) ‘আর ভালো এবং মন্দ দ্বারা আমি তোমাদেরকে পরীক্ষা করে থাকি।’ (সূরা আম্বিয়া : ৩৫)।
মানুষের ভালো-মন্দ উভয়ের বিষয়ে আল্লাহ তায়ালা সমভাবে ক্ষমতাবান। আমরা অসুস্থ হলে, তিনিই আমাদের সুস্থতা দান করেন। রোগ-ব্যাধি থেকে আরোগ্য লাভের ক্ষেত্রে চিকিৎসক শুধু চেষ্টা করতে পারেন। মানুষ একে অপরের জন্য কেবল দোয়া করতে পারে। আরোগ্য দানের বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে আল্লাহ তায়ালার দয়ার ওপর নির্ভর করে। আল্লাহর সাহায্য বা দয়া ছাড়া কঠিন রোগ-ব্যাধি থেকে কারোরই আরোগ্য লাভ করা সম্ভব নয়। তিনি যদি কারো ওপর আজাব-গজব দান করেন, কেউ তা প্রতিরোধ করতে পারবে না। সৃষ্টি জগতের সব কিছুই তাঁর ইচ্ছার অধীন। কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যদি আল্লাহ তোমাকে কোনো দুর্দশা স্পর্শ করেন, তবে তিনি ছাড়া তা দূর করার কেউ নেই। আর যদি কোনো কল্যাণ দ্বারা স্পর্শ করেন, তবে তিনিই তো সব কিছুর ওপর ক্ষমতাবান। আর তিনিই তাঁর বান্দাদের ওপর ক্ষমতাবান।’ (সূরা আনআম : ১৭-১৮) ‘কে আছে অসহায় ও বিপন্নের ডাকে সাড়া দেয় যখন সে ডাকে এবং কষ্ট ও বিপদ দূরীভূত করে দেয়?’ (সূরা নামল : ৬২)
আল্লাহ ছাড়া যেমন, মানুষের কোনো সাহায্যকারী নেই। তেমনি দুনিয়া এমন কোনো রোগ নেই, যে বোগের ওষুধ বা প্রতিষেধক সম্পর্কে আল্লাহ মানুষকে জ্ঞান দান করেননি। হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূল সা: ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহ তায়ালা এমন কোনো রোগ অবতীর্ণ করেননি। যার নিরাময়ের উপকরণ তিনি সৃষ্টি করেননি।’ (বোখারি : ৫২৭৬)
যা কিছু মানুষের জন্য কল্যাণকর, আল্লাহ তায়ালা বান্দাদের তা দান করে থাকেন। আল্লাহ তায়ালা রোগ-বালাইর মধ্যেও মানুষের জন্য কল্যাণ রেখেছেন। দুনিয়াতে আল্লাহ যা কিছু সৃষ্টি করেছেন, সবকিছুই মানুষের উপকারার্থে। এ জন্য পানি, বৃক্ষ-লতা, রোদ-বৃষ্টি ও ফলফলাদি থেকে শুরু করে সবকিছুর মধ্যেই ঔষধি গুণ ক্ষমতা রয়েছে। যখন মানুষের মধ্যে বালা-মুসিবতের আগমণ ঘটে। তখন আল্লাহ তায়ালা বালা-মুসিবতের পাশাপাশি বান্দার জন্য কল্যাণও পাঠিয়ে দেন। হজরত আয়েশা রা: থেকে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূল সা: ইরশাদ করেছেন, ‘মুসলমানের ওপর যেসব বিপদ-আপদ ও বালা-মুসিবত পতিত হয় এর দ্বারা আল্লাহ তার গোনাহ মাফ করে দেন। এমনকি যে কাঁটা তার দেহে বিদ্ধ হয় এর দ্বারাও তার গোনাহ মাফ হয়।’ (বোখারি : ৫২৩৮)
যখনই আমাদের কোনো রোগ-ব্যাধি আক্রমণ করবে। তখন কঠিন ইস্পাতের ন্যায় অন্তরে আল্লাহর রহমতের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস রেখে, ধৈর্যের সাথে আল্লাহর কাছে আরোগ্য লাভের জন্য সাহায্য চাইতে হবে। অতীত জীবনের ভুলত্রুটির জন্য বেশি বেশি তওবা ইস্তেগফার পড়তে হবে। তাহলে আল্লাহ অবশ্যই কঠিন রোগ-বিমার শেফা দান করবেন।
লেখক : প্রবন্ধকার


আরো সংবাদ



premium cement