১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিজ্ঞান শিক্ষার গুরুত্ব

-

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। পৃথিবীর মধ্যে এটাই একমাত্র জীবনব্যবস্থা, যা শিক্ষার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব প্রদান করেছে। মহান আল্লাহ তায়ালা তার পরিচিতি ও তার মহত্ত্ব উপলব্ধি করার জন্য মানুষকে প্রকৃতি অধ্যয়ন করার তাগিদ দিয়েছেন। আল কুরআনে অসংখ্যবার সমুদ্র, নদী, উদ্ভিদ, মাটি, পৃথিবী, ঝরনা, পাখি, মহাকাশ, তারকারাজিসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা করতে বলা হয়েছে। ড. মোবারক হোসাইন ‘হজরত মুহাম্মদ সা:-এর শিক্ষাপদ্ধতি ও নেতৃত্বের গুণাবলি নামক প্রবন্ধে বলেছেনÑ রসায়ন, জীববিজ্ঞান, পদার্থ, নৃ-তত্ত্ব, চিকিৎসা, গণিত, তড়িৎ যন্ত্র, স্থাপত্যবিদ্যাসহ বিজ্ঞানের সব শাখার বিষয়ে কুরআন ও হাদিসে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
ড. যুগলুল নাজ্জার বলেন, আল কুরআনে বিজ্ঞান সম্পর্কে প্রায় এক হাজার আয়াত রয়েছে, আর পরোক্ষভাবে প্রতিটি আয়াতই বিজ্ঞানের প্রতি ইঙ্গিত প্রদান থেকে মুক্ত নয়। ড. এম শমশের আলী বলেন, আল কুরআনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পর্কে প্রায় ৭৫০টি আয়াত রয়েছে। মোস্তাক আহমাদ বলেছেন, বিজ্ঞান সম্পর্কে সুষ্ঠুভাবে বর্ণনা দিয়েছে এরূপ আয়াত আল কুরআনে স্পষ্টভাবে বর্ণনা দিয়েছে এবং এরূপ আয়াত আল কুরআনে দুই হাজার ২২২টি। ড. মরিস বুকাইলি বলেন, আল কুরআনে এমন কোনো আয়াত নেই, যাকে বিজ্ঞান আক্রমণ করতে পারে। মোটকথা ইসলামে শিক্ষার মানেই হচ্ছেÑ বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ করে ইসলাম শিক্ষা ও আল্লাহর মহত্ত্ব উপলব্ধি।
ইতিহাস, সমাজবিজ্ঞান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, পদার্থ, রসায়ন, কৃষিবিজ্ঞান, উদ্ভিদ, প্রাণী ও জীববিদ্যা, মহাকাশবিজ্ঞান, ভূগোল, প্রকৌশল, স্থাপত্য ও কম্পিউটার-বিজ্ঞান প্রভৃতির উদ্ভব হয়েছে মহাগ্রন্থ আল কুরআন থেকেই।
মুসলিম বিজ্ঞানীরাই পৃথিবীর সব জ্ঞানবিদ্যা ও বিজ্ঞানের সব শাখার জনক। যেমনÑ ইতিহাসের জনক আল মাসউদি, সমাজবিজ্ঞানের জনক ইবনে খালদুন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে আল মাওয়ার্দি, ফারাবি প্রভৃতি বিজ্ঞানীদের জনক ইবনেসিনা। পদার্থবিজ্ঞান আল কিন্দি, ইবনেসিনা ও ইবনে হাইসামাদের আবিষ্কার। রসায়নের জনক জাবির বিন হাইয়ান, উদ্ভিদ বিদ্যার জনক আল বায়তার, প্রণিবিদ্যার জনক আল জাহিজ, কম্পিউটার বিজ্ঞান, বীজগণিত প্রভৃতির জনক আলখোয়ারিজমি, ত্রিকোণমিতির জনক আবুল ওয়াফা। পাটিগণিতের জনক আবুল কামিল ও ওমর খৈয়াম।
ভূগোলবিদ্যার জনক আলবিরুনি। তিনি নৃ-তত্ত্ব ও খনিজ বিদ্যার জনকও। এভাবে দেখলে দেখা যাবে যে, বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখায় মুসলিমদের সোনালি স্বাক্ষর রয়েছে। মুসলিমরাই সর্বপ্রথম, মানমন্দির, হাসপাতাল, লাইব্রেরি, গবেষণাগার ও বিজ্ঞান একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছে। নিজাযুলমূলক প্রতিষ্ঠিত বাগদাদের নিজামিয়া ইউনিভার্সিটি তৎকালীন পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ ছিল। ইউরোপের ছাত্ররা কেউ এখান থেকে পড়ে গেলে চার পাশের লোকজন তাকে দেখতে আসত। তাই মুসলিমদের হারানো গৌরব ফিরে পেতে হলে বিজ্ঞান শিক্ষায় ফিরে যেতে হবে।
লেখক : নিবন্ধকার


আরো সংবাদ



premium cement