২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইসলামে বিচারব্যবস্থা

-

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন শ্রেষ্ঠতম বিচারক। এ পৃথিবীতে মানুষের কৃতকর্মের বদলা দানের জন্য আল্লাহ তায়ালা আখিরাতে আদালত বসাবেন। সেই আদালতে স্যা-প্রমাণের ভিত্তিতে বিচার করা হবে এবং সেখানে শতভাগ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে। আল্লাহর আদালতে মিথ্যা স্যাদানের কোনো সুযোগ থাকবে না বা কোনো সুপারিশও কার্যকর হবে না। সুপারিশ যা থাকবে তা হলো, আল্লাহ যাদের মর্যাদা বাড়িয়ে দিতে চান এমন তাঁর নেক বান্দাহদের তিনি অনুমতি দান করবেন সেসব বান্দাহর জন্য যাদের তিনি মা করতে চান। কেউ নিজের থেকে কারো জন্য কোনো সুপারিশ করতে পারবে না। তাঁর আদালতকে প্রভাবিত করতে পারে এমন মতাবান সেখানে কেউ থাকবে না। আয়াতুল কুরসিতে আমরা পড়ে থাকিÑ ‘কে আছে এমন যে তাঁর অনুমতি ব্যতিরেকে তাঁর কাছে সুপারিশ করবে?’ এ থেকে বোঝা যায় যে আল্লাহ তায়ালা তাঁর নবী-রাসূল (বিশেষ করে মুহাম্মদ সা:) ও তাঁর কিছু নেক বান্দাদের সুপারিশ করার জন্য অনুমতি দেবেন যাদের জন্য তিনি তা পছন্দ করবেন।
অবশ্য এটিা ঠিক কোনো সুপারিশ তাঁর ইনসাফ ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ব্যাঘাত ঘটাতে পারবে না।
আল্লাহ তায়ালা যেমন ন্যায়বিচারক ও ইনসাফকারী ঠিক তেমনি তিনি চান যে, তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে এ দুনিয়ায় যারা বিচারাসনে বসে আছেন তাঁরাও ন্যায়বিচার করবেন। সুবিচার প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের আদেশ করেন যে, তোমরা যেন প্রাপকের হাতে তাদের প্রাপ্য আমানত পৌঁছে দাও। আর যখন তোমরা মানুষের মধ্যে কোনো বিচার-মীমাংসা করবে তখন ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক বিচার-মীমাংসা করবে। আল্লাহ তোমাদের সদুপদেশ দেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব কিছু শুনেন এবং সব কিছু জানেন’Ñ সূরা নিসা ৫৮। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আমাদের রাসূলদেরকে সুস্পষ্ট নির্দেশনাসহ পাঠিয়েছি এবং সেই সাথে রাসূলদের কাছে কিতাব এবং নিরপে ও নির্ভরযোগ্য মানদণ্ড নাজিল করেছি, যেন মানুষ এসবের সাহায্যে নিজেদের মধ্যে সুবিচার ও ইনসাফ কায়েম করে’Ñ সূরা আল হাদিদ ২৫। আল্লাহর রাসূল সা: ইনসাফকারী বিচারক প্রসঙ্গে বলেন, ‘হাশরের ময়দানে বড় ভয়াবহ দিনে যেখানে আরশের ছায়া ছাড়া আর কোনো ছায়া থাকবে না, সেই কঠিন অবস্থায় আরশের ছায়ায় আশ্রয়প্রাপ্তদের মধ্যে অন্যতম হবেন ইনসাফকারী বিচারক।’ বিচারকের নিরপেতা ও সুবিচার করার ওপর আখিরাতে তার নাজাত নির্ভর করবে। এ প্রসঙ্গে রাসূল সা: বলেছেন, তিন ধরনের বিচারক রয়েছেন। তন্মধ্যে একজনমাত্র জান্নাতে যেতে পারবেন। আর অন্য দু’জন জাহান্নামে যেতে বাধ্য হবেন। যে বিচারক জান্নাতে যাবেন সে এমন ব্যক্তি, যে প্রকৃত সত্যকে জানতে পেরেছেন, অতঃপর তদানুযায়ী বিচার ফয়সালা করেছেন। আর যে ব্যক্তি প্রকৃত সত্যকে জানতে পেরেও ফয়সালা করার ব্যাপারে অবিচার ও জুলুম করেছেন, তিনি জাহান্নামে যাবেন। আর যে ব্যক্তি অজ্ঞতা সত্ত্বেও জনগণের জন্য বিচার ফয়সালা করেছেন সেও জাহান্নামি হবে’ (আবু দাউদ ও ইবনে মাজাহ)।
কুরআন ও সুন্নাহ কিছু নির্দিষ্ট অপরাধের জন্য কিছু শাস্তি নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। এগুলোকে হদযোগ্য অপরাধ বা দণ্ডনীয় অপরাধ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। সমাজে শান্তিশৃঙ্খলা রা করা আল্লাহর হক এবং হদ হলো আল্লাহর অধিকার লঙ্ঘনের জন্য নির্ধারিত শাস্তি। যেহেতু এটি আল্লাহর হক তাই কোনো ব্যক্তি বা সমাজ তা রহিত করতে বা তার দায় থেকে কাউকে অব্যাহতি দিতে পারে না। আল্লাহর নির্ধারিত শাস্তিযোগ্য অপরাধ হলোÑ ব্যভিচার, ব্যভিচারের সাীবিহীন অপবাদ, চুরি, মদপান, দাঙ্গা-হাঙ্গামা করা, ইসলাম ত্যাগ করা, রাষ্ট্রদ্রোহিতা করা। যেমন, ব্যভিচারের শাস্তিÑ অবিবাহিত নারী-পুরুষ হলে ১০০ বেত্রাঘাত এবং বিবাহিত হলে প্রস্তরাঘাতে হত্যা করা। আল্লাহর বাণী, ‘ব্যভিচারিণী ও ব্যভিচারীর প্রত্যেককে ১০০ বেত্রাঘাত করবে। আল্লাহর বিধান কার্যকরীকরণে তাদের প্রতি দয়া যেন তোমাদের প্রভাবান্বিত না করে, যদি তোমরা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসী হও। মুমিনদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্য করে’Ñ আন্নূর ২। তিনি আরো বলেন, ‘যারা সতীসাধ্বী রমণীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে এবং চারজন সাী উপস্থিত করে না, তাদের ৮০টি বেত্রাঘাত করবে এবং কখনো তাদের স্যা গ্রহণ করবে না। তারাই তো সত্য পরিত্যাগকারী’Ñ আন্নূর ৪। চুরির শাস্তি হস্তচ্ছেদ, মদপানের শাস্তি ৮০টি বেত্রাঘাত, দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি, ইসলাম ত্যাগ ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। চুরির শাস্তি প্রসঙ্গে আল্লাহর বাণী, ‘পুরুষ কিংবা নারী, চুরি করলে তাদের হস্তচ্ছেদন করো। এটি তাদের কৃতকর্মের ফল এবং আল্লাহর নির্ধারিত আদর্শ দণ্ড। আল্লাহ পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়’Ñ মায়েদা ৩৮। আর দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও অরাজকতা সৃষ্টির শাস্তি প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, ‘যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং জমিনে ধ্বংসাত্মক কাজ করে বেড়ায় তাদের শাস্তি হলো তাদের হত্যা করা অথবা ক্রুশবিদ্ধ করা অথবা বিপরীতভাবে তাদের হাত ও পা কেটে ফেলা অথবা তাদের দেশ থেকে নির্বাসিত করা। দুনিয়ায় এটিই তাদের লাঞ্ছনা ও পরকালে তাদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি’Ñ মায়েদা ৩৩। আল্লাহর দ্বীনের ভিত্তিতে পরিচালিত রাষ্ট্রে অরাজকতা সৃষ্টি আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সা:-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণারই শামিল। মুরতাদের শাস্তি প্রসঙ্গে রাসূল সা: বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইসলাম ত্যাগ করে তাকে তোমরা মৃত্যুদণ্ড দাও’। আল্লাহর নির্ধারিত এ দণ্ড কার্যকর করার মতা কেবল শাসক বা তার প্রতিনিধির এবং তা কার্যকর করা অত্যাবশ্যক। শাসকের প থেকে মা করার কোনো সুযোগ নেই।
ইসলামের বিচারব্যবস্থা একান্ত সাীনির্ভর। নিজের জানা তথ্যের ভিত্তিতে বিচার করা বিচারকের জন্য বৈধ নয়। এ প্রসঙ্গে আবুবকর রা:-এর উক্তিÑ ‘আমি যদি কোনো ব্যক্তিকে কোনো শাস্তিযোগ্য অপরাধ করতে স্বচে প্রত্য করি, তবু আমার কাছে স্যাপ্রমাণ উপস্থিত না হওয়া পর্যন্ত আমি তার ওপর হদ কার্যকর করব না’। বিচারপ্রার্থীকেই প্রমাণ করতে হবে যে, অভিযুক্ত ব্যক্তি সত্যিই অপরাধ সংঘটিত করেছে। সত্য স্যা গোপন করা যেমন অপরাধ তেমনি মিথ্যা স্যাদানও বড় অপরাধ। এ জন্য রাসূল সা: সতর্ক করে বলেন, ‘তোমরা কেউ তোমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে আমার কাছে মিথ্যা নালিশ নিয়ে এসো না। আমি তোমাদের স্যাপ্রমাণের ভিত্তিতে রায় দিয়ে থাকি।’ রাসূল সা: বলেন, (আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা: বর্ণিত), ‘সবচেয়ে বড় মিথ্যা হলো, মানুষ তার দুই চোখকে এমন জিনিস দেখাবে যা এ দুটো চোখ দেখেনি’Ñসহিহ বুখারি। মিথ্যা স্যাদানকে তিনি শিরকের সমতুল্য বড় গুনাহ বলে উল্লেখ করেছেন। যারা মিথ্যা স্যা দেয়, মিথ্যা স্যাদানে উদ্বুদ্ধ করে এবং জেনে-বুঝে এর পাবলম্বন করে এরা সবাই মুশরিক ও জালেম এবং দাউ দাউ করে জ্বলা আগুনই তাদের ঠিকানা। এ জন্য ইসলাম স্যা গ্রহণের েেত্র সাীর সততা ও ন্যায়পরায়ণতার ওপর গুরুত্বারোপ করে। শাস্তিদানের েেত্র দু’টি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। এক. অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি নিজেই তার অপরাধ স্বীকার করে অথবা দু’জন ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তি যদি কারো বিরুদ্ধে সাী প্রদান করে। কিন্তু কারো বিরুদ্ধে ব্যভিচারের অভিযোগ আনতে হলে চারজন সাীর স্যা প্রয়োজন যারা স্বচে দেখেছে। আর কেউ যদি কারো বিরুদ্ধে ব্যভিচারের অভিযোগ নিয়ে আসে এবং চারজন সাী হাজির করতে না পারে তাহলে অপবাদ দেয়ার শাস্তি হিসেবে ৮০টি বেত্রাঘাত। স্যাদানে বিলম্ব ইসলাম স্বীকার করে না। এ প্রসঙ্গে উমর রা: বলেছেন, ‘কোনো দল যদি কোনো হদ-এর জন্য স্যা দেয় এবং ঘটনার অব্যবহিত পরেই স্যা না দেয়, তবে তারা কোনো বিদ্বেষের কারণেই স্যা দিয়েছে বুঝতে হবে এবং তাদের স্যা গৃহীত হবে না।’ স্যাদানের ব্যাপারে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি হলো, কারো সম্মুখে কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে সে সওয়াবের আশায় তার বিরুদ্ধে স্যা প্রদান করবে আর যদি সে নীরবতা অবলম্বন করে তবে বুঝতে হবে সে তার ভাইয়ের দোষ লুকিয়ে রাখতে চায়। তাতেও সে সওয়াব পাবে। কারণ হাদিসে স্পষ্ট বলা হয়েছে, কেউ তার ভাইয়ের দোষ গোপন রাখলে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার দোষ গোপন রাখবেন। এতে তাকে খালেস তাওবা করার সুযোগ দিয়ে নতুন জীবনযাপনের সুযোগ করে দেয়া হতে পারে। আবার ব্যক্তি নিজ থেকেও তার দোষ গোপন রাখতে পারে।
অনেক সময় শয়তানের প্ররোচনায় মানুষ অন্যায় করে বসতে পারে। এমতাবস্থায় শাসক বা আদালতে তা উপস্থাপন না করে সে খালেছ দিলে তাওবা করে সংশোধিত হতে পারে। এ প্রসঙ্গে রাসূল সা: বলেন, ‘হে মানব সকল, এখন সময় এসেছে যেন তোমরা আল্লাহর নিষিদ্ধ কাজগুলো থেকে বিরত থাক। যে কেউ এই নিকৃষ্ট অপরাধের কোনটিতে লিপ্ত হয়ে পড়ে, সে যেন আল্লাহর গোপনীয়তার সুযোগ গ্রহণ করে, নিজেকে লুকিয়ে রাখে। তবে যার অপরাধ আমাদের সামনে প্রকাশিত হবে, আমরা তার ওপর আল্লাহর কিতাবকে কার্যকরী করব’। ইসলাম কাউকে তার নিজের বিরুদ্ধে স্যাদানে বাধ্য করে না। রিমান্ডে নিয়ে অত্যাচার-নির্যাতন করে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে স্বীকারোক্তি প্রদানের তো প্রশ্নই উঠে না। এমনকি ব্যভিচারের মতো অপরাধ যেখানে দু’জনের সংশ্লিষ্টতা থাকে, সেখানে একজন স্বীকার এবং অন্যজন অস্বীকার করতে পারে। অস্বীকারকারীর ওপর জোর-জুলুম করার কোনো সুযোগ নেই। এ প্রসঙ্গে আহমদ ও আবু দাউদ সাহল ইবনে সা’দ থেকে বর্ণনা করেছেন, ‘এক ব্যক্তি রাসূল সা:-এর কাছে এলো এবং জনৈক মহিলার নামোল্লেখ করে তার সাথে ব্যভিচার করেছে বলে জানালো। তৎণাৎ রাসূল সা: দূত পাঠিয়ে ওই মহিলাকে ডেকে আনলেন। তাকে জিজ্ঞেস করা হলে সে অস্বীকার করল। রাসূল সা: মহিলাকে ছেড়ে দিলেন এবং পুরুষটির ওপর হদ কার্যকর করলেন। এটা ছিল তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ব্যভিচারের শাস্তি’। ইসলামে শাস্তিদানের েেত্র কোনো তাড়াহুড়ো নেই এবং অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হলে কাউকে শাস্তি দেয়া যায় না। সন্দেহ-সংশয় যেখানে রয়েছে সেখানে দণ্ড কার্যকর করা হয় না। এ প্রসঙ্গে আয়েশা রা: বর্ণিত হাদিসÑ ‘মুসলমানদের ওপর থেকে শাস্তি যতটা পারো রহিত করো। তাকে অব্যাহতি দেয়ার সুযোগ থাকলে অব্যাহতি দাও। কেননা শাসকের জন্য ভুলক্রমে শাস্তি দেয়ার চেয়ে ভুলক্রমে মাফ করা উত্তম’।
ধারণা-অনুমান ও সন্দেহ-সংশয়ের ওপর ভিত্তি করে কাউকে ধরে আনা এবং রিমান্ডে জুলুম-নির্যাতনের মাধ্যমে স্বীকারোক্তি আদায় ইসলাম অনুমোদন করে না। কারো অপরাধ সুস্পষ্টভাবে প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত ধরে নিতে হবে সে একজন ভালো মানুষ। ধারণা-অনুমান করে কাউকে ধরা বিবেক-বুদ্ধি ও ইসলামী নীতি-আদর্শের পরিপন্থী। কারণ আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! বেশি ধারণা ও অনুমান করা থেকে বিরত থাকো, কারণ কোনো কোনো ধারণা ও অনুমান গুনাহ। দোষ অন্বেষণ করো না। আর তোমাদের কেউ যেন কারো গীবত না করে। এমন কেউ কি তোমাদের মধ্যে আছে, যে তার নিজের মৃত ভাইয়ের মাংস খাওয়া পছন্দ করবে? দেখো তা খেতে তোমাদের ঘৃণা হয়। আল্লাহকে ভয় করো। আল্লাহ বেশি পরিমাণে তওবা কবুলকারী এবং দয়ালু’Ñ সূরা হুজুরাত ১২।
রাসূল সা: যে ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলেছিলেন তার ভিত্তি ছিল আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস ও আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার অনুভূতি। তাই সে সমাজে অপরাধ ছিল শূন্যের কোটায়। তারপরও নফস ও শয়তানের প্ররোচনায় কোনো অন্যায় সাধিত হলে স্বেচ্ছায় দণ্ড ভোগ করার ল্েয ছুটে এসেছেন রাসূল সা:-এর কাছে। কারণ তারা জানতেন দুনিয়ার এ শাস্তির তুলনায় আখিরাতের শাস্তি বড় ভয়াবহ ও বেদনাদায়ক এবং এ শাস্তি ভোগের মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধের কাফফারা হয়ে আখিরাতে মুক্তি লাভ সম্ভব।
সমাজে শান্তিশৃঙ্খলা ও স্বস্তি বজায় রাখার জন্য আইনের কঠোর ও নিরপে প্রয়োগের সাথে সাথে ইসলাম মানুষের মধ্যে নৈতিকতা বিকাশের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছে। মা, সহনশীলতা, উদারতা সৃষ্টিতে নানাভাবে ভূমিকা রেখেছে।
আখিরাতে বিশ্বাসের ভিত্তিতে উদ্বুদ্ধকরণের পরও সমাজের কিছু লোক যারা আইন ভঙ্গ করে সমাজে অশান্তি সৃষ্টি করে, তাদের দমনের ল্েযই মূলত বিচার। এ বিচার দৃষ্টান্তমূলক। অনেক সময় দণ্ড কার্যকর করার সময় একদল লোক তা দেখবে বলা হয়েছে। এ ছাড়া চোরের কাটা হাতটা গলার সাথে ঝুলিয়ে রাখার কথা বলা হয়েছে। যাতে মানুষ সতর্ক হয়ে যায়। এ বিচার ও দণ্ড মানুষের স্রষ্টা ও মালিক মহান আল্লাহ প্রদত্ত। এর মধ্যেই রয়েছে মানুষের জীবন ও নিরাপত্তা।
লেখক : শিক্ষাবিদ


আরো সংবাদ



premium cement