২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পবিত্রতা আল্লাহ পছন্দ করেন

-

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা হলো ঈমানের অঙ্গ। যেকোনো ইবাদত কবুল হওয়ার পূর্বশর্ত হলোÑ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা। শরীর পাক-সাফ থাকলে মনে প্রফুল্লতা আসে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন শরীর রোগ-বালাইমুক্ত থাকে। স্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও সুস্বাস্থ্যের জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অপরিহার্য। আল্লাহ তায়ালা নিজে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র। তাই তিনি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাকে ভালোবাসেন। আল্লাহর ভালোবাসা লাভ করতে হলে আমাদের প্রত্যেকে অবশ্যই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তাওবাকারীদের ভালোবাসেন এবং ভালোবাসেন অধিক পবিত্রতা অর্জনকারীদেরকে।’ (সূরা বাকারা : ২২২)। হজরত মালিক আশয়ারী রা: হতে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূল সা: এরশাদ করেছেনÑ পবিত্রতা ঈমানের অংশ। (মুসলিম : ২২৩)।
যেকোনো বিষয়ে আমল করার পূর্বে পাক-সাফ হতে হবে। পরিষ্কার-পরিছন্নতার গুরুত্ব এতটাই বেশি যে, দান-সদকা করার ক্ষেত্রেও উত্তম জিনিস তথা পবিত্র জিনিস দান করার জন্য কুরআনে নির্দেশ করা হয়েছে। হারাম বা নিষিদ্ধ কোনো জিনিস দান করলে তা কবুল হবে না। সব ধরনের হারাম জিনিস কিংবা অপবিত্র জিনিস আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করা থেকে বিরত থাকতে হবে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা: হতে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূল সা: এরশাদ করেছেন, পবিত্রতা ছাড়া কোনো নামাজ-ই কবুল হয় না। আর হারাম মালের সদকাও গৃহীত হয় না। ( মুসলিম প্রথম খণ্ড, পৃ.২০৪)।
অপবিত্রতা গোনাহের কারণ। গোনাহের কাজ মানুষকে জাহান্নামের দিকে ধাবিত করে। জাহান্নামের কঠিন আগুন থেকে বাঁচতে হলে, অবশ্যই আমাদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। এ জন্য নিয়মিত অজু-গোসল করতে হবে। হাত-পায়ের নখ কেটে পরিষ্কার রাখতে হবে। মাথার চুল ও দাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা: হতে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, রাসূল সা: দু’টি কবরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি বললেনÑ কবর দু’টিতে শায়িত ব্যক্তিদের ওপর আজাব হচ্ছে। তেমন কোনো বড় কারণে এ আজাব হচ্ছে না। এদের একজনের আজাব হচ্ছে এ কারণে যে, সে প্রস্রাবের মলিনতা ও অপবিত্রতা হতে বেঁচে থাকার অথবা পবিত্র থাকার কোনো চেষ্টাই করত না। আর দ্বিতীয় জনের ওপর আজাব হওয়ার কারণ হচ্ছে, সে চোগলখুরি করত। (বুখারি : ২১৮)। হজরত আবু হোরায়রা রা: থেকে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূল সা: এরশাদ করেছেন, প্রস্রাবই বেশির ভাগ কবরের আজাবের কারণ হয়ে থাকে। (ইবনে মাজাহ : ৩৪৮)।
পবিত্র কোনো বস্তু বা কিতাবকে স্পর্শ করার পূর্বে অবশ্যই পাক-পবিত্র হয়ে নিতে হবে। যেমন- কুরআন একটি পবিত্র কিতাব। দুনিয়ার মধ্যে সবচেয়ে পবিত্র স্থান হলো মসজিদ। অপবিত্র অবস্থায় কুরআন মাজিদকে যেমন স্পর্শ করা যায় না, তেমনি অপবিত্র অবস্থায় পবিত্র কোনো স্থানেও গমন করা যায় না। কুরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয় এটি মহিমান্বিত কুরআন, যা আছে সুরক্ষিত কিতাবে। কেউ স্পর্শ করবে না পবিত্রগণ ছাড়া।’ (সূরা ওয়াকিয়াহ : ৭৭-৭৯)। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জনের তৌফিক দান করুক। আমিন।
লেখক: ইসলামিক চিন্তাবিদ ও গবেষক

 

 


আরো সংবাদ



premium cement