২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিনয়ী মানুষকে আল্লাহ পছন্দ করেন

-


বিনয় চরিত্রের ভূষণ। বিনয় মানুষের মনের সৌন্দর্য প্রকাশ করে। বিনয় একজন মানুষকে সহজে সর্বোচ্চ মোকামে পৌঁছে দেয়। বিনয়ী ব্যক্তিকে সবাই পছন্দ করে। অহঙ্কারী বা বদমেজাজি ব্যক্তিকে আল্লাহ অপছন্দ করেন। পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘(হে বৎস), কখনো অহঙ্কারবশে তুমি মানুষের জন্য গাল ফুলিয়ে রেখে তাদের অবজ্ঞা করো না এবং জমিনে কখনো ঔদ্ধত্যপূর্ণভাবে বিচরণ করো না; নিঃসন্দেহে আল্লাহ পাক প্রত্যেক অহঙ্কারীকেই অপছন্দ করেন। তুমি মধ্যম পন্থা অবলন্বন করো, তোমার কণ্ঠস্বর নিচু করো, কেননা আওয়াজগুলোর মধ্যে সবচেয়ে অপ্রীতিকর আওয়াজ হচ্ছে গাধার আওয়াজ।’ (সূরা লুকমান: ১৮-১৯)।
হজরত রাসূল সা:-এর প্রতি আরবের লোকদের আকর্ষণের ভিত্তি ছিল বিনয়। তিনি কখনো কারো সাথে কর্কশ ভাষায় কথা বলতেন না। কাউকে গালমন্দ করতেন না বা কটুকথা বলতেন না। মন্দ নামে কাউকে ডাকতেন না। কুরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা আল্লাহ পাকের ইবাদত করো, কোনো কিছুকেই তাঁর সঙ্গে অংশীদার বানিও না এবং মাতা-পিতার সাথে ভালো ব্যবহার করো, যারা ঘনিষ্ঠ আত্মীয়, এতিম, মিসকিন, আত্মীয় প্রতিবেশী, অনাত্মীয় প্রতিবেশী, পথচারী, সঙ্গী ও তোমার অধিকারভুক্ত দাসদাসী, অবশ্যই আল্লাহ পাক এমন মানুষকে কখনো পছন্দ করেন না, যে অহঙ্কারী ও দাম্ভিক।’ (সূরা নিসা:৩৬)।
আল্লাহ তায়ালা নম্র ব্যবহারকারীকে পছন্দ করেন। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে একে অপরের সাথে নম্র ব্যবহার করার নির্দেশ প্রদান করেছেন। কুরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা ন্যায়পরায়ণতা, সদাচরণ ও আত্মীয়স্বজনকে দান করার নির্দেশ দেন এবং তিনি অশ্লীলতা, অসৎ কাজকর্ম ও সীমালঙ্ঘনজনিত সব কাজ থেকে নিষেধ করেন, তিনি তোমাদের উপদেশ দেন, যাতে করে তোমরা এ থেকে শিক্ষাগ্রহণ করতে পারো।’ (সূরা নাহল: ৯০)। হজরত আয়েশা সিদ্দিকা রা: থেকে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূল সা: এরশাদ করেছেন, হে আয়েশা, আল্লাহ তায়ালা অতি নম্র ব্যবহারকারী। সুতরাং তিনি নম্রতা ভালোবাসেন। তিনি নম্রতার জন্য এমন কিছু দান করেন যা কঠোরতার জন্য দান করেন না; এমনকি অন্য কিছুর জন্যও তা দান করেন না। (মুসলিম: ৬৩৬৫)।
মূলত বিনয়ী বা আবেদ লোকেরা কখনো, কোনো অবস্থানেই জাহেল লোকের কথায় উত্তেজিত বা রাগান্বিত হন না। কুরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘রহমানের বান্দা তো হচ্ছে তারা, যারা জমিনে নেহায়েত বিনম্রভাবে চলাফেরা করে এবং জাহেল লোকেরা যখন তাদের সম্বোধন করে, তখন তারা নেহায়েত প্রশান্তভাবে জবাব দেয়।’ (সূরা ফুরকান: ৬৩)। হজরত আবু হোরায়রা রা: থেকে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূল সা: এরশাদ করেছেন, দানের দ্বারা সম্পদ কমে না। ক্ষমার দ্বারা আল্লাহ তাঁর বান্দার ইজ্জত ও সম্মান বৃদ্ধি করা ছাড়া আর কিছুই করেন না। আর যে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে বিনয় ও নম্রতার নীতি অবলম্বন করে, আল্লাহ তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন। (মুসলিম : ২৫৮৮)।
লেখক : প্রবন্ধকার


আরো সংবাদ



premium cement