২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শায়খুল কুরআনের প্রয়োজনীয়তা

-

সারা বাংলাদেশে যেসব মাদরাসা গড়ে উঠেছে সেই সব মাদরাসায় এক বা একাধিক শায়খুল হাদিস দেখতে পাওয়া যায়। এই শায়খুল হাদিসরা সিয়াসিত্তার ছয়টি হাদিস অধ্যয়ন করেন। পরে মাদরাসায় ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে হাদিসের ওপর আলোচনা করেন। এই হাদিস শ্রবণ করার পর মাদরাসার ছাত্ররা ও সাধারণ মানুষ মহানবী হজরত মুহাম্মদ সা:-এর জীবন দর্শন যেমন জানতে পারেন তেমনি মহানবী হজরত মুহাম্মদ সা: কী পছন্দ করতেন আর কী পছন্দ করতেন না তাও জানতে পারেন। বাংলাদেশসহ উপমহাদেশে একাধিক শাইখুল হাদিস তৈরি হলেও দুঃখজনক হলেও সত্যি মহা পবিত্র কুরআনুল কারিমের উপযুক্ত শিক্ষক বা শায়খুল কুরআন তৈরি হচ্ছে না। যে কারণে কুরআনের নূর যারা পথহারা তাদের মাঝে পৌঁছে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
ড. আহমেদ দিদাতের মতো কুরআনের শায়খের অভাব বিশ্ববাসী অনুভব করছে। মুসলমান সম্প্রদায়কে চার পাশ থেকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য যত রকম প্রচেষ্টা দরকার প্রতিপক্ষরা তা করে যাচ্ছে। একজন শায়খুল হাদিসের পক্ষে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা সম্ভব হচ্ছে না। অর্থাৎ এই লড়াইটা এলেমের লড়াই। শুধু হাদিসের পণ্ডিতের দ্বারা ইসলামের প্রতিপক্ষকে থামানো সম্ভব নয়। সম্ভব একজন শায়খুল কুরআনের পক্ষে।
ড. আহমেদ দিদাত আফ্রিকা মহাদেশের দক্ষিণ আফ্রিকাসহ একাধিক দেশে মহাপবিত্র কুরআনুল কারীমকে সম্বল করে পথহারা মানুষকে পথ দেখাতে সক্ষম হয়েছিলেন। তাঁর সান্নিধ্যে যারা গিয়েছিলেন তারাই হেদায়েতের আলোয় আলোকিত হয়েছিলেন। কারণ, পৃথিবীর সব আলো একসময় অন্ধকারে পরিণত হয়ে গেলেও মহাপবিত্র কুরআনুল কারীমের আলো চিরকালীন। কুরআনের আলোয় যারা আলোকিত হতে পেরেছেন পৃথিবীর কোনো অন্ধকার তাকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যেতে পারে না।
সারা বাংলাদেশে প্রতিটি মুসলিম পরিবারের বাড়িতে যতেœর সাথে কুরআনুল কারীম সংরক্ষণ করা হয়। হয় না শুধু কুরআনের শিক্ষা নিজের জীবনে প্রয়োগ করা। আপনার আমার জীবনে কুরআনের প্রয়োগ যিনি শিখিয়ে দেবেন তিনি হবেন একজন শায়খুল কুরআন। যিনি নিজে অন্ধকারমুক্ত হবেন, অন্যকে আলোর দিকে নিয়ে যেতে পারবেন, তখনই তিনি পারবেন যখন তিনি মহানবী হজরত মুহাম্মদ সা:-এর মতো জীবন্ত কুরআনে নিজে পরিণত হতে পারবেন। তা না হলে শুধু বাংলাদেশ কেন, সারা পৃথিবীতে ঘুষ, সুদ, ব্যভিচারসহ সব ধরনের অনাচার চলতে থাকবে। আর এই অনাচার থামাতে পারবে শুধু কুরআনের নূর। অর্থাৎ একজন শায়খুল কুরআন মানুষের অন্তরে যখন কুরআনের আলো পৌঁছে দিতে পারবেন তখন জগৎ পরিপূর্ণ আলোতে আলোকিত হয়ে যাবে।
বাংলাদেশে একাধিক শায়খুল কুরআন তৈরি হবে এটা আমাদের বিশ্বাস। আমাদের সম্মানিত আলেম সমাজের কাছে আমাদের বিনীত ফরিয়াদ, শায়খুল হাদিসের সাথে সাথে শায়খুল কুরআন তৈরি করুন। যে জাতি কুরআনুল কারীম থেকে যত দূরে তারা তত ধ্বংসের কাছাকাছি। আর যারা কুরআনুল কারীমকে বরণ করে নিয়েছেন মহান আল্লাহ তাদের সাথী হয়ে গেছেন।
লেখক : প্রবন্ধকার


আরো সংবাদ



premium cement