২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বিশেষ সাক্ষাৎকারে মাহমুদুর রহমান মান্না

নতুন নির্বাচনের দাবিতে সবাইকে রাজপথে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে

মাহমুদুর রহমান মান্না - সংগৃহীত

গত ২৯ ডিসেম্বর রাতে যে ভোট ডাকাতির নির্বাচন হয়েছে সেটি আমরা মানিনি। এই নির্বাচন বাতিল করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে এবং এই ইস্যুতে সবাইকে রাজপথে ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত।এমনটাই মনে করেন রাজনীতিবিদ ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মাহমুদুর রহমান মান্না। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং সামগ্রিক বিষয় নিয়ে তিনি নয়া দিগন্তের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ইকবাল মজুমদার তৌহিদ।

মাহমুদুর রহমান মান্না বগুড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম আফসার উদ্দিন আহমদ ও মা মেহের আক্তার। তিনি মেহের নিগারের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ। ১৯৬৮ সালে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে ভর্তি হন। ১৯৭৬ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যাথেমেটিকস ও লাইব্রেরি সায়েন্স বিভাগে ভর্তি হন। পরে রাজনীতিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় মাস্টার্স করা হয়নি। মাহমুদুর রহমান মান্না ১৯৬৮ সালে ছাত্রলীগের আহ্বায়ক হন। ১৯৭২ সালে চাকসুর জিএস নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ সালে জাসদ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৭৬ সালে জাসদ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি হন। ১৯৭৯ সালে ডাকসুর ভিপি নির্বাচিত হন। ১৯৮০ সালে তিনি বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ গঠন করেন। ১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত এরশাদবিরোধী আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ছিলেন। ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ২০০৭ সালে আলোচিত এক-এগারো সরকারের সময় সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৯ সালে দলের পদ থেকে বাদ পড়ে যান। বর্তমানে তিনি নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক হিসেবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রথম সারির একজন নেতা। 

নয়া দিগন্ত : দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আপনার মূল্যায়ন? 
মাহমুদুর রহমান মান্না : পরিস্থিতি খুব খারাপ। দেশে কোনো গণতন্ত্র নেই। পরপর দুই তিন টার্ম ছলেবলে কৌশলে গায়ের জোরে ভোট ডাকাতি করে এ সরকার ক্ষমতায় আছে। সরকার সবচেয়ে বেশি করে যে কথাটা বলার চেষ্টা করে তা হলো উন্নয়নের গণতন্ত্র। কিন্তু এই সরকারের সময় কী অর্জন হয়েছে তা একটু ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখা যায় একটি লুটেরা অর্থনীতি সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের দেশে ধনী অনেক বেশি ধনী হয়ে যাচ্ছে, গরিবদের দারিদ্র্য কমার হার খুবই কম। সম্প্রতি ধানচাষিরা ধান পুড়ে ফেলছেন। এর চেয়ে খারাপ পরিস্থিতি আর কী হতে পারে? পাটকল শ্রমিকদের বেতনের জন্য আন্দোলন করতে হচ্ছে, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের রাজপথে কোনো কর্মসূচি করতে দেয়া হচ্ছে না। সব মিলিয়ে সার্বিক পরিস্থিতি খারাপ। 

নয়া দিগন্ত : খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য বিএনপি, ২০ দল, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং সর্বোপরি দেশের জনগণের করণীয় কী? 
মাহমুদুর রহমান মান্না : আন্দোলন করতে হবে। আসলে খালেদা জিয়ার মুক্তিটা গণদাবি, এটা সবাই চায়। খুবই দুর্বল যুক্তিতে, মিথ্যা মামলায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাকে আটকে রাখা হয়েছে। তবে আন্দোলন ছাড়া তাকে মুক্ত করা সম্ভব না। 
নয়া দিগন্ত : এই মুহূর্তে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে একটিমাত্র ইস্যুতে যদি ডাক দেয়া হয় সে ইস্যুটি কী হতে পারে? 
মাহমুদুর রহমান মান্না : নতুন নির্বাচন। গত ২৯ ডিসেম্বর রাতে যে ভোট ডাকাতির নির্বাচন হয়েছে সেটি আমরা মানিনি। এই নির্বাচন বাতিল করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে এবং এই ইস্যুতে সবাইকে রাজপথে ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত। 

নয়া দিগন্ত : ঐক্যফ্রন্টের অনেক শীর্ষ নেতা বিভিন্ন সময়ে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে রাজপথে আন্দোলন করার দাবি জানিয়েছেন। আসলে কারা আন্দোলনের ডাক দেবেন এবং খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করবে? 
মাহমুদুর রহমান মান্না : বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি অবশ্যই আলাদা করে বলতে হবে। যখন আমি দেশে নতুন করে একটি নির্বাচনের কথা বলছি, তার মানেই হচ্ছে এটার মধ্যে খালেদা জিয়ার মুক্তির কথা আছে। নির্বাচন এই সরকারের অধীনে নয় একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দিতে হবে। সেখানে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিটা অটোমেটিক চলে আসে। এটা সত্যি যে আমরা তার মুক্তির জন্য বড় ধরনের কোনো কর্মসূচি দেইনি। যে বিএনপির সরাসরি নেত্রী তিনি, তারাও তার মুক্তির জন্য তেমন কোনো কর্মসূচি দিতে পারেনি। তবে বিএনপি খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য যদি বড় কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করে আমরা সেই কর্মসূচির পক্ষে আছি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবির পাশাপাশি তার মুক্তির দাবির বিষয়টি আরো শক্তিশালী হয়, তা চাই। 
নয়া দিগন্ত : এ সরকার মেয়াদ পূর্ণ করতে পারবে বলে মনে করেন? 
মাহমুদুর রহমান মান্না : এই মুহূর্তে আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে যে পারবে। তবে ভেতর থেকে দেখলে দেখা যাবে, এ সরকারের এক বছরও টিকে থাকার কোনো সক্ষমতা নেই। তবে যতক্ষণ পর্যন্ত রাজপথে আন্দোলন না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত সুস্পষ্টভাবে কোনো কিছু বলতে পারব না। 

নয়া দিগন্ত : দেশে খুন, গুম ও ধর্ষণের মতো সামাজিক অপরাধ বৃদ্ধির মূল কারণ কী দেখেন? 
মাহমুদুর রহমান মান্না : এখন তো মনে হয় অপরাধ সবচেয়ে বেশি করছে পুলিশ। এই খুন বলেন, গুম বলেন, ধর্ষণ বলেন, এগুলোর পেছনে দায়ী তো রাষ্ট্র, রাষ্ট্র মানে সরকার। যতক্ষণ পর্যন্ত এসব অপরাধের সুষ্ঠু বিচার না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত এসব অপরাধ হ্রাসের সম্ভাবনা নেই। আমি আবারো মনে করি যে এগুলো বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ হলো আমাদের রাজনৈতিক নৈরাজ্য রাজনীতিহীনতা ও রাজনীতির নামে এক ধরনের স্বৈরাচার এবং ব্যক্তি স্বেচ্ছাচারিতা। 

নয়া দিগন্ত : এই মুহূর্তে দেশের জনগণের প্রতি আপনার কী বার্তা থাকবে? 
মাহমুদুর রহমান মান্না : আমরা হয়তো উপযুক্ত আন্দোলন করতে পারিনি। তবে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান থাকবে ধৈর্যশীল হন হতাশাগ্রস্ত হওয়া যাবে না।


আরো সংবাদ



premium cement
বাংলাদেশকে এভিয়েশন হাব হিসেবে গড়তে সহযোগিতা করতে চায় যুক্তরাজ্য অশ্লীল নৃত্য পরিবেশনের অভিযোগে ৫ জন‌ আটক ঈশ্বরদীতে বৃষ্টির জন্য ইসতেসকার নামাজ তীব্র তাপদাহে খাবার স্যালাইন ও শরবত বিতরণ করল একতা বন্ধু উন্নয়ন ফাউন্ডেশন গলাচিপায় পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু উপজেলা নির্বাচনে অনিয়ম হলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে : ইসি শিশু সন্তান অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি, সৎ বাবাসহ গ্রেফতার ২ উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যুবককে কুপিয়ে হত্যা রা‌তে বৃ‌ষ্টি, দিনে সূর্যের চোখ রাঙানি শিশুদের হাইড্রেটেড-নিরাপদ রাখতে বাড়তি সতর্ক হওয়ার আহ্বান ইউনিসেফের অর্থ আত্মসাৎ: সাইমেক্স লেদারের এমডি ও তার স্ত্রী কারাগারে

সকল