২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

‘বাংলাদেশ সীমান্ত ডিসেম্বরে সিল করা হবে’

‘বাংলাদেশ সীমান্ত ডিসেম্বরে সিল করা হবে’ - সংগ্রহ

ডিসেম্বরের মধ্যে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত সিল করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দা সোনোওয়াল। টাইমস অব ইন্ডিয়ার বরাত দিয়ে খবরটি নিশ্চিত করা হয়েছে।

শনিবার গোহাটিতে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশ সীমান্তের স্থল ও নদীর অংশ সিল করা হবে। আন্ত:সীমান্ত অনুপ্রবেশ ও চোরাচালান বন্ধে রাজ্যের উদ্যেগের অংশ হিসাবে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী রাজ্যের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং অবৈধ অভিবাসী ও বিচ্ছিন্নতাবাদ দমনে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে।

নাগরিকত্ব বিল (সংশোধীত) - ২০১৬ নিয়ে রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার জনস্বার্থের বিরুদ্ধে যাবে না। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী নাগরিকদের জাতীয় নিবন্ধন হালনাগাদ করার উদ্যোগ নিয়েছে আসাম সরকার। ভারতের প্রকৃত নাগরিকদের নিবন্ধন করার উদ্যোগ নেয়ার ক্ষেত্রে আসামই একমাত্র ও প্রথম রাজ্য।

সংশোধীত বিল অনুযায়ী বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের নিপীড়িত সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠিকে ভারতের নাগরিকত্ব দেয়া হবে। তবে এর যোগ্যতা অর্জনের জন্য তাদের অন্তত ছয় বছর ভারতে থাকার প্রমাণ দেখাতে হবে।

উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের বাংলাদেশ অংশের কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে ১৫ বছর বয়সী ফেলানী খাতুন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ-এর গুলিতে নিহত হয়। আর বাংলাদেশী কিশোরী ফেলানীর ওই মরদেহ ঝুলে ছিল কয়েক ঘন্টা সীমান্তে দেয়া কাটা তারের বেড়ার উপরে। এই ছবি প্রকাশের পরে দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনা ও বিতর্কের জন্ম নেয়।

প্রশ্ন উঠে মানুষের জীবনের, মানবাধিকারের। ফলে ২০১৩ সালে ভারত ফেলানী হত্যাকান্ডের বিষয়ে একটি মামলা গ্রহণ করে এবং বিএসএফ-এর নিজস্ব আদালতের বিচারে অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য বেকসুর খালাস পায়। পরে ওই দেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলোর পক্ষে ভারতের সর্বোচ্চ আদালতে সুবিচার প্রার্থনা করে মামলা করা হয়-যা এখনো বিচারের অপেক্ষায় আছে। সীমান্ত হত্যার ঘটনার জন্য বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত আন্তর্র্জাতিক পর্যায়েও ব্যাপকভাবে আলোচিত।

মানবাধিকার সংগঠনগুলোর হিসাব মোতাবেক গত ১২ বছরে এই সীমান্তে কমপক্ষে ৭শ জন বাংলাদেশী নিহত হয়েছেন-যাদের অধিকাংশই অল্প আয়ের কিংবা নিম্নবিত্ত পরিবারের। বিশেষজ্ঞ এবং বিশ্লেষকগণ বলছেন, মূলত অর্থনীতির কারণেই মানুষ অবৈধভাবে ও পন্থায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সীমান্ত পার হয়ে অন্য দেশে প্রবেশ করছে কিংবা পার হওয়ার নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এটিকে অস্ত্র দিয়ে, জোর খাটিয়ে বন্ধ করার প্রবণতা মানুষের মানবাধিকারসহ সামগ্রিক অধিকারের বিপক্ষে। এ সম্পর্কে বিস্তারিত বিশ্লেষণ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ক গবেষণা সংস্থা রামরু’র প্রধান ড. তাসনীম সিদ্দিকী।

 


আরো সংবাদ



premium cement