২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এ্যাপোলো হাসপাতালে ভারতের প্রথম ইনভেসিভ

ডবল কার্ভ কারেকশন সার্জারি সম্পন্ন
-

চেন্নাই : এশিার বৃহত্তম ও সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য, বিভিন্ন খাতে বিশেষজ্ঞ হাসপাতাল চেইন এ্যাপোলো হসপিটাল এমন একটি সার্জারি সম্পাদনা করেছে যা এক অস্ট্রেলিয়ান শিশুর জীবন বদলে দিয়েছে। ডা: সাজান কে হেগড়ে এবং তার দল বৈপ্লবিক নন-ফিউশন অ্যান্টিরিওর স্কোলিওসিস কারেকশন প্রক্রিয়া ব্যবহার করে একটি মিনিমালি ইনভেসিভ ডবল কার্ভ কারেকশন সার্জারি সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন। রোগী ছিল ১৩ বছর বয়সী একটি মেয়ে, যে মেরুদণ্ডকে একপাশে বাঁকা করে ফেলা অ্যাডোলেসেন্ট ইডিওপ্যাথিক স্কোলিওসিস রোগে আক্রান্ত হয়েছিল।
অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনের ১৩ বছর বয়সী শিশু মিস জ্যাভিয়া মঞ্চে নাচ পরিবেশন করা অবস্থায় তার মা নাচের ভঙ্গিতে একটি পরিবর্তন ল করেন। জ্যাভিয়ার বাবা ওয়েইন রবার্ট এলিসন ও মা মিসেস টিজিয়ানা তেরেসা সিমোনেলি চিন্তিত হয়ে তাদের মেয়ের মেরুদণ্ডের বদলে যাওয়া আকৃতি সংশোধন করার জন্য সার্জন খুঁজতে থাকেন। জ্যাভিয়া অন্য যেকোনো ১৩ বছর বয়সী শিশুর মতোই সুস্থ ছিল; কিন্তু হঠাৎ তার মেরুদণ্ডে বদলে যাওয়ার লণ দেখা দেয়ায় সে প্রায়ই ব্যথা অনুভব করত। এই পরিবর্তন দ্রুত বাড়তে শুরু করে, প্রতিদিনের কাজ চালিয়ে যেতেও তার কষ্ট হতো। চিকিৎসকের মতামত অনুযায়ী সে অ্যাডোলেসেন্ট ইডিওপ্যাথিক স্কোলিওসিসে আক্রান্ত। অন্যান্য দেশের বেশ কয়েকজন সার্জনের সাথে যোগাযোগ করার পর জ্যাভিয়া বাবা-মা চেন্নাইয়ের অ্যাপোলো হাসপাতালে আসেন।
মেরুদণ্ডের এই অস্বাভাবিক ‘এস’ আকারের ডাবল কার্ভ সাধারণত ৮ থেকে ১২ বছর বয়সী কিশোরী মেয়েদের মধ্যে দেখা যায়। এই অসুখটি ১০ থেকে ১৮ বছর বয়সের মধ্যে দুই থেকে তিন শতাংশ শিশুকে প্রভাবিত করে, এমন সময় যখন মানবদেহের সর্বাধিক বৃদ্ধি ঘটে। অ্যাডোলেসেন্ট ইডিওপ্যাথিক স্কোলিওসিস একটি কমন কন্ডিশন, যেখানে মেরুদণ্ডের দৃষ্টিকটু পর্যায়ে বেঁকে যাওয়া বুকে বা পিঠের আকৃতিতে পরিবর্তন ঘটায়, কিছু েেত্র শরীরের উপরের অংশ বেঁকেও যেতে পারে। অসুখ মারাত্মক আকার ধারণ করলে এই বেঁকে যাওয়ার কারণে পিঠে তীব্র ব্যথা হতে পারে এবং হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুসের স্বাভাবিক কাজকে প্রভাবিত করতে পারে।
মেরুদণ্ড বদলে যাওয়ার পরিমাণ সামান্য হলে সাধারণত ব্রেস ব্যবহার করার পরামর্শ দেয়া হয়, যাতে প্রাপ্তবয়স্ক হতে হতে সমস্যাটা আরও প্রকট না হয়। যখন মারাত্মক আকার ধারণ করে, তখন গত ৬০ বছরের প্রথাগত চিকিৎসায় ইমপ্ল্যান্ট আর রড, স্ক্রু বা প্লেটের সাহায্যে মেরুদণ্ডকে স্বাভাবিক আকারে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়। তবে এ ধরনের স্কোলিওসিস কারেকশনের ফলে মেরুদণ্ড শক্ত হয়ে যায়, ফলে রোগী স্বাভাবিকভাবে নড়াচড়া করতে পারে না।
বৈপ্লবিক এই পদ্ধতি সম্পর্কে ডা: সাজান কে হেগড়ে বলেন, ‘এই সমস্যাটির সমাধান করার জন্য ঐতিহ্যগতভাবে ফিউশন সার্জিক্যাল ট্রিটমেন্ট করা হয়, যেখানে মেরুদণ্ডের সাথে ধাতব প্লেট যুক্ত করে দু’টি রডের সাথে আটকে দেয়া হয়। যতণ পর্যন্ত মেরুদণ্ডের আলাদা অংশগুলো একসাথে মিশে একটি হাড় গঠন না করে, ততদিন এই ইমপ্ল্যান্টগুলো মেরুদণ্ডকে একটি স্থানে ধরে রাখে। কিন্তু এখন শিশুদের সারিয়ে তুলতে আজ আমাদের একটি বৈপ্লবিক পদ্ধতি চলে এসেছে। এই কৌশলটি দিয়ে মেরুদণ্ডের আকার সংশোধন করা হয়, বাইরে থেকে কিছু সংযুক্ত করা হয় না। এই সার্জারির পর শিশুরা আগের মতোই স্পোর্টস, জিমন্যাস্টিকস বা নাচসহ স্বাভাবিক কাজগুলো শুরু করতে পারে। পুরনো চিকিৎসা পদ্ধতিতে এটি সম্ভব ছিল না।’
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে কয়েকটি স্পাইন সেন্টারে এই পদ্ধতিটি থাকলেও ভারতের অ্যাপোলো ইনস্টিটিউট অব স্পাইন সার্জারি একমাত্র কেন্দ্র যেখানে এটি ব্যবহার করা হয়। সার্জারির পর মিস জ্যাভিয়াকে ফিজিওথেরাপির অধীনে রাখা হয়েছে। তার দেহভঙ্গি স্বাভাবিক হয়ে রিবকেইজ সেরে উঠছে, শরীর ও কাঁধের সঙ্গতি ফিরে আসছে। সবচেয়ে ভালো খবর হচ্ছে, আস্তে আস্তে সে প্রতিদিনের স্বাভাবিক রুটিনে ফিরে আসছে।
এ্যাপোলো হাসপাতালের বিষয়ে
১৯৮৩ সালে ডা: প্রতাপ রেড্ডি অগ্রগামী হয়ে ভারতের প্রথম করপোরেট হাসপাতাল চেন্নাইয়ের অ্যাপোলো হাসপাতাল চালু করেন। বছরের পর বছর ধরে এ্যাপোলো হাসপাতাল এক লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি কার্ডিয়াক সার্জারি করে ভারতের বৃহত্তম কার্ডিয়াক অনুশীলনের আবাসস্থল হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। শুধু তাই নয়, এ্যাপোলো হাসপাতাল বিশ্বের সবচেয়ে বড় বেসরকারি ক্যান্সার কেয়ার প্রদানকারী এবং একই সাথে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সলিড অর্গান ট্রান্সপ্ল্যান্ট সম্পন্নকারী।
এশিয়ার বৃহত্তম এবং সবচেয়ে বিশ্বস্ত হেলথ কেয়ার গ্রুপ হিসেবে এ্যাপোলো হাসপাতালের পরিচালনায় ৬৪টি হাসপাতালে ৯ হাজার ২১৫টি বেড, দুই হাজার ৫০০ ফার্মেসি, ৯০টিরও বেশি প্রাইমারি কেয়ার ও ডায়াগনস্টিক কিনিক, ১১০টিরও বেশি টেলিমেডিসিন কেন্দ্র এবং ৮০টিরও বেশি অ্যাপোলো মিউনিখ ইন্স্যুরেন্সের শাখা দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে।
স্বাস্থ্যবীমা পরিষেবা, গ্লোবাল প্রজেক্টস কনসালটেন্সি সমতা, ১৫টিরও বেশি মেডিক্যাল এডুকেশন সেন্টার এবং গ্লোবাল কিনিক্যাল ট্রায়ালস, এপিডেমিওলজিক্যাল স্টাডিজ, স্টেম সেল এবং জেনেটিক গবেষণাকে ফোকাস করে একটি গবেষণা ফাউন্ডেশন সব কিছু মিলিয়ে একটি সমন্বিত স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহকারী হিসেবে অ্যাপোলো হাসপাতাল চিকিৎসা েেত্র বিশ্বজয়ী সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে আছে। সেই সাফল্যের পথ ধরে এ্যাপোলো হাসপাতালের সাম্প্রতিক বিনিয়োগ হচ্ছে চেন্নাই, এশিয়া, অ্যাফ্রিকা এবং অস্ট্রেলিয়াজুড়ে প্রথম প্রোটন থেরাপি কেন্দ্র চালু করতে। এ্যাপোলো হাসপাতাল প্রতি চারদিনে প্রায় এক মিলিয়ন মানুষের জীবনে সেবার ছোঁয়া দিয়ে থাকে। আন্তর্জাতিক মানের স্বাস্থ্যসেবা প্রতিটি মানুষের নাগালের মধ্যে আনাই তাদের ল্য।


আরো সংবাদ



premium cement
কাতারের সাথে যৌথ বাণিজ্য কাউন্সিল গঠনে এফবিসিসিআইয়ের চুক্তি টি-২০ খেলতে সিলেটে পৌঁছেছে ভারতীয় নারী ক্রিকেট দল খুলনায় হিটস্ট্রোকে এক ব্যক্তির মৃত্যু ভারতের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কী বলল যুক্তরাষ্ট্র? জিম্বাবুয়ে সিরিজের জন্য বাংলাদেশের প্রাথমিক দল ঘোষণা বৃষ্টির জন্য রাজশাহীতে ইসতিসকার নামাজ আদায় গাজীপুরে মহাসড়কের পাশ থেকে মৃত হাতি উদ্ধার প্রচণ্ড গরমের মধ্যে লোডশেডিং ১০০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা : প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশের গুলির নিন্দা জামায়াতের রাজধানীতে তৃষ্ণার্তদের মাঝে শিবিরের বিশুদ্ধ পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ রাজশাহীতে সাড়ে ৬ কোটি টাকার হেরোইনসহ যুবক গ্রেফতার

সকল