১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪২৯, ০৮ রমজান ১৪৪৫
`

হৃদপিণ্ড থেমে যাওয়ার ৬ ঘন্টা পর বেঁচে উঠলেন তিনি

- ছবি : সংগৃহীত

ছয় ঘন্টা ধরে হৃদযন্ত্রের স্পন্দন বন্ধ ছিল এমন এক নারীকে আবার বাঁচিয়ে তোলা সম্ভব হয়েছে যাকে ডাক্তাররা খুবই বিরল এবং বিস্ময়কর এক ঘটনা বলে বর্ণনা করছেন।

অড্রে স্কুম্যান নামের এই মহিলা থাকেন স্পেনের বার্সেলোনায়। তিনি স্পেনের পাইরেনিস পার্বত্য এলাকায় এলাকায় তার স্বামীর সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। সেখানে তারা তুষার ঝড়ের কবলে পড়েন।

অড্রে স্কুম্যান এরপর মারাত্মক হাইপো থারমিয়ায় আক্রান্ত হন। তার হাঁটতে-চলতে অসুবিধা হচ্ছিল। তিনি অচেতন হয়ে পড়ে যান। তার হৃদযন্ত্র একদম বন্ধ হয়ে যায়। কোন হৃদস্পন্দনই পাওয়া যাচ্ছিল না।

অড্রে স্কুম্যানের স্বামী রোহানের ধারণা ছিল তার স্ত্রী মারা গেছেন। ইমার্জেন্সি সার্ভিসের জন্য যখন তারা অপেক্ষা করছেন, তখন তিনি স্ত্রীর পালস পাচ্ছিলেন না। তার স্ত্রী শ্বাস নিচ্ছেন বলেও মনে হচ্ছিল না। হৃদস্পন্দনও বন্ধ ছিল।

দুঘন্টা পর যখন উদ্ধার কর্মীরা এসে পৌঁছালেন, মিসেস স্কুম্যানের শরীরের তাপমাত্রা নেমে গেছে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। উদ্ধারকর্মীরা তাকে বার্সেলোনার এক হাসপাতালে নিয়ে যান। তিনি যে বেঁচে আছেন, তার কোন লক্ষণই পাচ্ছিলেন না তারা।

হাসপাতালের ডাক্তার এডুয়ার্ড আরগুডো বলছেন, পাহাড়ের যে প্রচন্ড ঠান্ডার কারণে অড্রে স্কুম্যান অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন সেটাই হয়তো আবার তার জীবন বাঁচিয়ে দিয়েছে।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, হাসপাতালে আনার পর তাকে দেখে মনে হচ্ছিল তিনি মারা গেছেন।

"তবে তিনি যেহেতু হাইপোথার্মিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন, আমাদের মনে হচ্ছিল অড্রের বেঁচে ওঠার একটা সম্ভাবনা আছে।"

ড: আরগুডো বলছেন, অড্রে স্কুম্যান যখন অচেতন হয়ে পড়েছিলেন তখন হাইপোথার্মিয়াই তার শরীর এবং মস্তিস্ককে রক্ষা করেছিল। যদিও এই হাইপোথার্মিয়া তাকে প্রায় মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। যদি স্বাভাবিক তাপমাত্রায় এত দীর্ঘ সময় তার হৃদযন্ত্র বন্ধ থাকতো, তাহলে কিন্তু তিনি মারা যেতেন।

সময়ের সঙ্গে যুদ্ধ
অড্রে স্কুম্যানকে হাসপাতালে আনার পর ডাক্তাররা একটি বিশেষ মেশিন ব্যবহার করে তার শরীরের রক্ত বের করে এনে তাতে অক্সিজেন সঞ্চালন করেন। এরপর সেই রক্ত আবার তার শরীরে ফিরিয়ে দেয়া হয়।

তার শরীরের তাপমাত্রা যখন ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায় তখন ডাক্তাররা একটি 'ডিফিব্রিলেটর' ব্যবহার করে হৃদপিণ্ড চালু করতে সক্ষম হন। তবে ততক্ষণে প্রায় ছয় ঘন্টা সময় পেরিয়ে গেছে।

স্কুম্যানকে ১২ দিন পর হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়। তিনি এখন সুস্থ, হবে হাইপোথার্মিয়ার কারণে তার চলাফেরায় হাতের অনুভূতিতে কিছু সমস্যা রয়ে গেছে।

ডাক্তার আরগুডো বলেন, মিসেস স্কুম্যানের কিছু স্নায়বিক ক্ষতি হয়ে যায় কীনা সেটা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন ছিলেন। তবে যেভাবে তিনি সুস্থ হয়ে উঠলেন, সেটাকে অস্বাভাবিক ঘটনা বলে বর্ণনা করছেন তিনি।

"কারও হদযন্ত্র এত দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকার পর আবার চালু হওয়ার এরকম ঘটনা আর নেই।"

স্কুম্যান সুস্থ হয়ে উঠার পর জানান, যে ছয় ঘন্টা তার হৃদযন্ত্র কাজ করেনি, সে সময়ের কোন স্মৃতি তার নেই। হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে যখন আমি জেগে উঠি, তখন আমি জানতাম না আগের এক বা দুদিন ধরে কী হচ্ছিল।

স্কুম্যান এখন হাইপোথারমিয়ার ব্যাপারে পড়াশোনা করে বুঝতে পারছেন, তার বেঁচে উঠার ঘটনাটা কীরকম অবিশ্বাস্য। তিনি হাসপাতালের ডাক্তারদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাদের কাজের জন্য।

"এটা একটা দৈব ঘটনা, তবে ডাক্তারদের কারণেই আমি বেঁচে গেছি।" বিবিসি।


আরো সংবাদ



premium cement
গাজায় ত্রাণ প্রবেশে ইসরাইলের নিষেধাজ্ঞা যুদ্ধাপরাধের শামিল : জাতিসঙ্ঘ সঙ্গীতশিল্পী খালিদকে বাবা-মায়ের পাশে গোপালগঞ্জে দাফন রাণীনগরে টমটম গাড়ির ধাক্কায় নিহত ১ স্লিপিং ট্যাবলেট খে‌লেও সরকা‌রের ঘুম আসে না : গয়েশ্বর জনসাধারণের পারাপারে গোলাম পরওয়ারের খেয়া নৌকা উপহার ভোলায় হঠাৎ অসুস্থ ২৯ শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি করোনায় ১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৩১ ‘অসহায় ও দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানো প্রত্যেকের ঈমানী দায়িত্ব’ নারায়ণগঞ্জের বাজারগুলোতে হঠাৎ পেঁয়াজের দাম অর্ধেকে নামল ‘নবীর শিক্ষা জালিম সরকারের বিরুদ্ধে সত্য কথা বলাই সর্বোত্তম জিহাদ’ আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ স্থগিত অস্ট্রেলিয়ার

সকল