আর্থ্রাইটিস রোগে শল্যচিকিৎসা
- ডা: মিজানুর রহমান কল্লোল
- ০৯ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০
বাস্তবিক অর্থে আর্থ্রাইটিস রোগ আমাদের দেশে বেশির ভাগ রোগী জানেন না কোন রোগের জন্য কোন বিশেষজ্ঞকে দেখাতে হবে। অনেক রোগী কিছু দিন পর পর ডাক্তার পাল্টাতে থাকেন। এতে করে তার ঠিকমতো চিকিৎসা হয় না। আবার অনেক রোগী ভিন্ন ডাক্তারের পেছনে ছুটতে থাকেন, যার কাজ আসলে আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসা দেয়া নয়। আপনি যদি নিয়মিত একজন অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেন তাহলে অধিক লাভবান হবেন। লিখেছেন Ñ
ডা: মিজানুর রহমান কল্লোল
প্রশ্ন : আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসায় কি কখনো অপারেশন লাগে?
উত্তর : হ্যাঁ, ব্যথা কমাতে ও অস্থিসন্ধির উন্নতি ঘটাতে অস্থিসন্ধিতে অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটা অস্থিসন্ধির ক্ষয় হওয়ার প্রক্রিয়াকে মন্থর করে।
প্রশ্ন : কোন ধরনের সার্জারি করা হয়?
উত্তর : বিভিন্ন ধরনের অপারেশন করা হতে পারে। যেমনÑ অস্থিসন্ধিতে সাইনোভিয়াল টিস্যু কেটে ফেলা, জয়েন্ট ক্যাপসুলের মৃত টিস্যু দূর করা, অমসৃণ কার্টিলেজকে মসৃণ করা ইত্যাদি। এতে হাঁটুর নড়াচড়ার উন্নতি ঘটে। অস্থিসন্ধিগুলো স্থিত হয়। অবর্ণনীয় ব্যথা কমাতে ও অকার্যকর অস্থিসন্ধির জন্য অস্থিসন্ধি প্রতিস্থাপন করা হতে পারে।
প্রশ্ন : অস্থিসন্ধির কার্যকারিতা ফিরিয়ে আনতে কিংবা উপসর্গগুলো দূরীভূত করতে চিকিৎসক অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে রোগী কত দিন ওষুধ দ্বারা চিকিৎসা চালিয়ে যাবে?
উত্তর : এই প্রশ্নের কোনো সুনির্দিষ্ট উত্তর নেই। এটা এক রোগী থেকে আরেক রোগীর ক্ষেত্রে ভিন্ন হতে পারে। আপনাকে জানতে হবে যে, যেকোনো ধরনের আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসায় সার্জারিতে খুব কম ক্ষেত্রেই প্রথম সারির চিকিৎসাপদ্ধতি হিসেবে গণ্য করা হয়Ñ তাই বলে এটি যে একেবারে চিকিৎসার সর্বশেষ ধাপ সেটা ভাবারও কোনো কারণ নেই।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে অপারেশনে যাওয়ার আগে আপনি ওষুধের দ্বারা চিকিৎসা নিয়ে কিংবা আক্রান্ত অস্থিসন্ধিতে স্টেরয়েড ইনজেকশন প্রয়োগ করে বেশ কিছু দিন দেখতে পারেন।
কিছু কিছু সার্জারি অস্থিসন্ধির আয়ু বাড়ায় বটে, তবে আর্থ্রাইটিসের ক্ষেত্রে চূড়ান্তভাবে সার্জারির প্রয়োজন নাও হতে পারে।
একজন বিশেষজ্ঞই নির্ধারণ করবেন আপনার কোন ধরনের সার্জারি প্রয়োজন।
প্রশ্ন : আপনার সার্জারি করলে লাভ হবে কি না, তা আপনি বুঝবেন কী করে?
উত্তর : যদি আপনার অস্থিসন্ধির ব্যথা দীর্ঘ দিন নন সার্জিক্যাল চিকিৎসায় যেমন ওষুধ, বিশ্রাম, স্পিøন্টিং কিংবা স্টেরয়েড ইনজেকশনে ভালো না হয়, তাহলে আপনার চিকিৎসক আপনাকে একজন অর্থোপেডিক সার্জনের কাছে রেফার করবেন। অর্থোপেডিক সার্জনকে মাঝে মধ্যে কেউ কেউ অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ বলে থাকেন।
এক্স-রে বা অন্য কোনো ইমেজিং টেকনিকের দ্বারা আপনার অস্থিসন্ধিতে কিছু নির্দিষ্ট সমস্যা পাওয়া গেলে সার্জারি করালে অবস্থার উন্নতি ঘটতে পারে। উদাহরণস্বরূপ আপনার সাইনোভিয়াম মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেলে, বাঁকা হাঁটু থাকলে কিংবা অন্য কোনো অস্থিসন্ধির স্থিতিগত সমস্যা থাকলে, হাঁটুর এক দিকে কার্টিলেজ থাকলে বা হাঁটুতে কিছু দিন পর পর ব্যথা হলে আপনার চিকিৎসক আপনাকে সার্জারি করার জন্য একজন অর্থোপেডিক সার্জনের কাছে রেফার করতে পারেন।
প্রশ্ন : অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ কী করবেন?
উত্তর : অর্থোপেডিক সার্জন আপনার অস্থিসন্ধি বা হাড়ের জোড়া পরীক্ষা করে দেখবেন, আপনাকে এক্স-রে করাবেন এবং আরো কিছু পরীক্ষাও করাতে পারেন। এরপর সিদ্ধান্ত নেবেন কোন ধরনের সার্জারি করলে আপনি উপকৃত হবেন।
প্রশ্ন : সার্জন আপনাকে অপারেশনের কথা বললেই কি আপনি অপারেশন করাতে বাধ্য?
উত্তর : অবশ্যই না। আপনার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কেউ কোনো কিছু করবেন না। তবে মনে রাখবেন যে, সার্জনরা খুব ব্যস্ত থাকেন, তারা যদি না ভাবেন যে অপারেশনে আপনার সত্যিকার কোনো লাভ হবে না তাহলে অযথা তারা আপনাকে অপারেশনে যাওয়ার পরামর্শ দেবেন না। তারা তখনই আপনাকে অপারেশনের কথা বলবেন যখন সত্যিকার অর্থেই আপনার অপারেশন করা প্রয়োজন। যা হোক, অনেক আর্থ্রাইটিসের রোগীকে এ ব্যাপারে চিন্তা করার জন্য কিছুটা সময় দিতে হবে এবং তাদের মন ঠিক করতে হবে।
বাস্তবিক অর্থে আমাদের দেশে বেশির ভাগ রোগী জানেন না কোন রোগের জন্য কোন বিশেষজ্ঞকে দেখাতে হবে। অনেক রোগী কিছু দিন পর পর ডাক্তার পাল্টাতে থাকেন। এতে করে তার ঠিকমতো চিকিৎসা হয় না। আবার অনেক রোগী ভিন্ন ডাক্তারের পেছনে ছুটতে থাকেন, যার কাজ আসলে আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসা দেয়া নয়। আপনি যদি নিয়মিত একজন অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেন তাহলে অধিক লাভবান হবেন।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, অর্থোপেডিকস ও ট্রমা বিভাগ, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল।
চেম্বার-১ : পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লি:, ২, ইংলিশ রোড, ঢাকা।
ফোন: ০১৭২২৯১৬৪৭৯ (সঞ্জয়)
চেম্বার-২ : আজগর আলী হসপিটাল, ১১১/১/এ ডিস্টিলারি রোড, গেন্ডারিয়া, ঢাকা।
ফোন : ০১৭৮৭৬৮৩৩৩৩।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা