২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দাঁতের চিকিৎসায় ভিটামিন ‘কে’

-

ভিটামিন ‘কে’ একটি ফ্যাট সলিউবল ভিটামিন। ভিটামিন ‘কে’ প্রাকৃতিকভাবে দু’টি রূপে পাওয়া যায়। একটি হলো ভিটামিন কে১ বা ফাইটোমেনডিওন, আর অন্যটি হলো ভিটামিন কে২। ভিটামিন কে১, পাওয়া যায় শাকসবজিতে। নবজাতকের ক্ষেত্রে প্রাথমিক ভিটামিন ‘কে’ এর অভাব অস্বাভাবিক নয়, যখন ভিটামিন কে২ এর কোনো গঠন হয় না। নবজাতকের ক্ষেত্রে রক্তপাতজনিত রোগের প্রতিরোধক ব্যবস্থা হিসেবে জন্মের পর এক মিলিগ্রাম ভিটামিন কে১ প্রদান করা নিরাপদ। অন্যান্য ভিটামিনগুলোর মতো ভিটামিন ‘কে’ও আমাদের শরীরে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়ে থাকে। বিশেষ করে দাঁত তোলার পর বা কোনো সার্জারির পরে রক্তজমাট বাঁধার প্রক্রিয়ায় ভিটামিন ‘কে’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ভিটামিন ‘কে’ শরীরে গ্রহণ করার পর অন্ত্রনালীতে শোষিত হয়ে থাকে। ভিটামিন ‘কে’ অন্ত্রনালীতে শোষণের পরিমাণ আবার নির্ভর করে পিত্ত লবণের উপস্থিতির পরিমাণের ওপর। আর ভিটামিন ‘কে’ এর সিনথেসিস বা সংশ্লেষণ হয়ে থাকে মানবদেহের লিভার বা যকৃতে।
ভিটামিন ‘কে’ এর প্রধান কাজগুলো
১) ভিটামিন ‘কে’ রক্ত জমাট বাঁধায় সাহায্য করে থাকে।
২) লিভারে যাওয়ার পর ভিটামিন ‘কে’ বিভিন্ন রক্ত জমাট বাঁধার ফ্যাক্টর বা উপাদানের সংশ্লেষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। যেসব ফ্যাক্টর ভিটামিন ‘কে’ দ্বারা সংশ্লেষণ হয়ে থাকে সেগুলো হলো:
ক) উপাদান -২ বা প্রথমবিন।
খ) উপাদান -৭,
গ) উপাদান -৯ বা ক্রিসমাস ফ্যাক্টর,
ঘ) উপাদান -১০ বা স্টুয়ার্ট পাওয়ার ফ্যাক্টর।
যেসব কারণে লিভারে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ‘কে’ পৌঁছাতে পারে না এবং শরীরে ভিটামিন ‘কে’ এর অভাব দেখা যায় সেগুলো হলো :
ক) অবস্ট্রাকটিভ জন্ডিস : সাধারণ পিত্তথলি বা সিসটিক ডাক্টে পাথর থাকলে এ ধরনের সমস্যা হতে পারে।
খ) ভিটামিন ‘কে’ এর শোষণ ব্যাহত হলে।
গ) লিভারের মারাত্মক রোগে ভিটামিন ‘কে’ এর বিপাকক্রিয়া ব্যাহত হলে শরীরে ভিটামিন ‘কে’ এর স্বল্পতা দেখা দিতে পারে।
ঘ) রক্ত জমাট বাঁধাদানকারী উপাদান অর্থাৎ অ্যান্টিকোয়াগুলেন্ট দ্বারাও ভিটামিন ‘কে’ এর বিপাকক্রিয়া ব্যাহত হয়ে শরীরে ভিটামিন ‘কে’ এর অভাব হতে পারে।
ঙ) ভাইরাল হেপাটাইটিস এবং অগ্নাশয়ের ক্যান্সারের কারণে ভিটামিন ‘কে’ এর অভাব দেখা দিতে পারে।
দাঁতের চিকিৎসার সময় সংশ্লিষ্ট সমস্যাগুলো দূর করতে হবে। এ সময় ভিটামিন ‘কে’ ওষুধ আকারে দেয়া যেতে পারে। জরুরি সার্জারি করার ক্ষেত্রে ফাইটোমেনডিওন ৫ থেকে ২৫ মিলিগ্রাম রোগীর শিরায় ইনজেকশন আকারে দেয়া যেতে পারে। এটি দেয়ার ৪০ ঘণ্টা পর প্রথমবিন টাইম দেখা উচিত। এরপরও যদি সমস্যা না যায়, তাহলে বুঝতে হবে রোগীর প্যারেনকাইমাল লিভার রোগ রয়েছে। সেক্ষেত্রে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে রোগীর চিকিৎসা করা উত্তম।
লেখক : ওরাল অ্যান্ড ডেন্টাল সার্জন হজরত শাহ্ আলী বাগদাদী র: মিরপুর মাজার শরিফ জেনারেল হাসপাতাল, মিরপুর-১।
মোবাইল : ০১৮৭৫২১৮৯৭


আরো সংবাদ



premium cement