২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গরমে পুষ্টি

গরমে পুষ্টি - ছবি : সংগ্রহ

প্রচণ্ড গরমে শরীরের মধ্যে বিভিন্ন রকম পরিবর্তন দেখা যায়। অত্যাধিক গরমে শরীরে ঘামতে থাকে এতে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় পানি, লবণ ও খনিজ উপাদান বেরিয়ে যায়। এছাড়াও যেমন :

১। দেহে সোডিয়াম কমে যায়।
২। পটাসিয়াম কমে যায়।
৩। অনেক সময় বমি হতে পারে।
৪। খাদ্য হজমে ব্যাঘাত হওয়া ও পেট ফেঁপে যাওয়া।
৫। ডায়রিয়া।
৬। আমশায়।
৭। জ্বর ইত্যাদি দেখা যায়।

গরমে শরীর সুস্থ রাখতে ঘুম ও খাবারের গুরুত্ব অপরীসিম। গরমে সঠিক পুষ্টির লক্ষ্যে সুস্বাস্থ্য রক্ষায় যে দিকগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তা হলো-
১। প্রথম ও প্রধান সাবধানতা হলো প্রচণ্ড গরমে বাইরের খোলা জায়গার, পানি, শরবত আখের রস, পরিহার করা। এগুলো তৈরিতে প্রধান কাঁচামাল ‘পানি’ বিশুদ্ধ ও নিরাপদ নয়। তাই ওই পানীয় গ্রহণের ফলে সৃষ্ট ডায়রিয়া, কলেরা, শরীরের প্রয়োজনীয় পানি ও খনিজ উপাদানের ঘাটতি হবে।
রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমবে, চিকিৎসা ক্ষেত্রে আর্থিক ব্যয় বাড়বে এমনকি মারাত্মক ডায়রিয়ায় মৃত্যু ঝুঁকিও রয়েছে।

২। নিরাপদ বিশুদ্ধ পানি পান নিশ্চিত করা, জীবাণুমুক্তভাবে ঘরের তৈরি শরবত, পানি জাতীয় শাক-সবজি যেমন : লাউ, মিষ্টিকুমড়া, চালকুমড়া, টমেটো, শশা, ঝিংগা, চিচিঙ্গা, বেগুন, সাজনা ইত্যাদি এবং ফলের মধ্যে ডাব, বেলের শরবত, তরমুজ, বাঙ্গি, জাম, জাম্বুরা, জামরুল খাওয়া যেতে পারে।
৩। উল্লেখ্য, ফল ও সবজি কাটার সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা ও প্রতিবার হাত ধোয়া।

৪। গরমে গোশত, বড় মাছ, ভুনা, ভাজা, পোলাও, খিচুড়ি, ফাস্টফুড কমিয়ে, ছোট মাছ, পাতলা আম-ডাল, পাতলা দুধ/ টকদই, করলার ঝোল তরকারি, লেবু-চিনির শরবত, সালাদ, আমের টক, টমেটোর টক ও রসালো ফল খাওয়া যেতে পারে।
৫। গরমে সাদা ভাত- পোলাও, বিরিয়ানি ও পরটা থেকে অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর।
৬। গরমে রান্নায় তেলের ব্যবহার একেবারে কমিয়ে ফেলা। যেমন প্রতিজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি মাসে ৫০০ মিলি লিটার (১/২ লিটার) তেলই যথেষ্ট।
৭। যারা নিয়মিত হাঁটেন তারা শুধুমাত্র সময় পরিবর্তন করলেই চলবে। যেমন : সকালে না হেঁটে বিকেলে। সন্ধ্যার পর অথবা খুব ভোরে হাঁটা আরামদায়ক।
৮। গরমে খুব বেশি হাঁটা, ব্যায়াম, অত্যধিক পরিশ্রম, পরিহার করুন, কেননা সবার আগে আপনার সুস্বাস্থ্য।
৯। পোশাক পরুন পরিষ্কার ও আরামদায়ক।
১০। নিজস্ব পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন।

গরমে আপনার নিজস্ব পরিচর্যা ও যত্ন আপনাকে সুস্থ রাখতে সহায়ক হবে। গরমে থাকা যাবে স্বস্তিতে।
প্রতিরোধ করা যাবে, ডায়রিয়া, কলেরা ও আমাশয়ের মতো পানিবাহিত ও খাদ্যবাহিত বিভিন্ন রোগ।
নিম্নে কয়েকটি তরল খাবারের নমুনা দেয়া হলো যা ‘গরমের’ জন্য উপযোগী।

১। পাতলা পরিজ
২। পাতলা সুজি
৩। ডালের স্যুপ
৪। ফলের রস
৫। সবজি স্যুপ
৬। ঘোল
৭। পাতলা দুধ
৮। দুধ ও কলার শরবত
৯। চিনি/গুড়ের শরবত
১০। লিকার চা
১১। ছানার পানি
১২। গ্লুকোজের পানি
১৩। জিলেটিন
১৪। ডাবের পানি
১৫। দইয়ের লাচ্ছি
১৬। লেবুর লবণ পানি
১৭। বিশুদ্ধ নিরাপদ পানি।

গরমে সুস্থ থাকতে নিজস্ব সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।
লেখক : পুষ্টি বিশেষজ্ঞ, খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগ
শমরিতা হাসপাতাল, ঢাকা। ফোন : -০১৭১২০০৮২২১


আরো সংবাদ



premium cement