২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

হৃদরোগকে কিভাবে প্রতিরোধ ও বিপরীতমুখী করা যায়?

হৃদরোগকে কিভাবে প্রতিরোধ ও বিপরীতমুখী করা যায়? - ছবি : সংগ্রহ

ধমনিগত হৃদরোগের সব থেকে যুক্তিসঙ্গত সমাধান পাওয়া যায় একটি স্থায়ী পদ্ধতি বা প্রণালীতে, যা কেবল ধমনির অবরোধকে আয়ত্তে আনে না... উপরন্তু একে বিপরীতমুখীও করে তোলে। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে ধীরে ধীরে এই অবরোধ তৈরি হয়েছে কোলেস্টেরল রক্তের সাথে হৃৎপিণ্ড বেষ্টনকারী ধমনির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে এবং ধমনির অভ্যন্তরের দেয়ালে সঞ্চিত হয়। এই পদার্থগুলোর বেশির ভাগ নরম চর্বিপিণ্ড প্রথিত (সূক্ষ্মভাবে বোনা) কোষ দ্বারা সংযুক্ত এবং বিপরীতমুখী অবস্থায় থাকে। অধুনা প্রমাণিত হয়েছে যে, কোলেস্টেরল এবং চর্বি সহজে রক্তে দ্রবীভূত করা যায় এবং এগুলোকে বেছে অবরোধ অবস্থা থেকে সরিয়ে নেয়া যায়, যদি এই পদ্ধতিকে কার্যকর করার জন্য একটি আদর্শ পরিবেশ বা অবস্থা সৃষ্টি করা যায়।

এই আদর্শ পরিবেশ বা অবস্থা সৃষ্টি অত্যন্ত আবশ্যক। করোনারি আর্টারি ডিজিজ প্রিভেনশন অ্যান্ড রিগ্রেশন (সিএডিপিআর) হৃদরোগ নিরাময় কর্মসূচি সাহায্য করে এবং রোগীকে প্রশিক্ষণ দেয় কিভাবে এক সাথে সব বিপদসৃষ্টিকারী উপাদানগুলোকে নির্মূল করা যায়। যতœসহকারে কিছু যোগ ব্যায়াম নির্বাচন করে, ধ্যানের অভ্যাস এনে এবং একই সাথে বাস্তবিক সম্ভব উপায়ে মানসিক চাপ প্রশমন করে একটা আদর্শ অবস্থা কিভাবে সৃষ্টি করা যায়। ধমনিগত হৃদরোগ সম্পর্কে পরিপূর্ণ শিক্ষা ও বোধ তৈরি করা, তামাক সেবন ও ধূমপান সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা এবং খাদ্য সচেতনতা আনা হচ্ছে এই প্রশিক্ষণের অঙ্গ। এই প্রশিক্ষণ নির্দেশ দেয় কিভাবে একটা যথাযথ জীবন ধারণ প্রণালী অনুসরণ করা যায়, যার দ্বারা ধমনির অন্তঃস্থ অবরোধকে বিপরীতমুখী করে তোলা যায় এবং রোগীকে আগের সুস্থ অবস্থায় আনা যায়। এসব করতে হয় হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের, চিকিৎসকদের, পথ্য বিশেষজ্ঞদের এবং যোগ ব্যায়ামের শিক্ষকদের নির্দেশনায়। যার দ্বারা হৃদরোগীদের ক্ষেত্রে উদ্ভূত জটিলতা এড়ানো যায়।

সব হৃদরোগী রোগ প্রতিরোধের কিছু কিছু উপায় সম্পর্কে অল্প বিস্তর বা সামান্য জানেন এবং এগুলো অভ্যাস করেন যথেষ্ট নির্ভুলভাবে নয় এবং সঙ্গতিপূর্ণ নিয়মিত নয়। ফলে সব প্রচেষ্টাই বিফল হয় এবং শেষ পর্যন্ত শল্যচিকিৎসার কাছে নিজেকে সমর্পণ করতে হয়। এ ধরনের ঘটনা না ঘটলে রোগীরা কখনো হাসপাতালে যেতেন না।

‘সিএডিপিআর প্রোগ্রাম’ গত ৫-৬ মাস ধরে বহু পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং প্রচেষ্টার দ্বারা এই বিশেষ জ্ঞান তৈরি করেছে। প্রত্যেক রোগী, যারা এই কর্মসূচির প্রারম্ভিক অধ্যায়ে যোগদান করেছেন, তারা এই কর্মসূচিকে ধীরে ধীরে উন্নত করে তুলতে সাহায্য করেছেন। হৃদক্রিয়ার অচলাবস্থা বা অন্য সব জটিলতা বহুল পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে।

‘সিএডিপিআর প্রোগ্রাম’ কোনো জাদু নয়- এটা কোনো জাদুকরের মতো বা দেবতার মতো কাজ করে না- যারা এক মুহূর্তে অবরোধ দূর করতে পারেন। অন্তত দুই সপ্তাহ সময় প্রয়োজন হয় প্রাথমিক উন্নতির লক্ষণ দেখার জন্য। উন্নতি নির্ভর করে রোগীর প্রচেষ্টার ওপর, তার বয়স, তার পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতা এবং অনুরূপ বিষয়গুলোর ওপর। সিএডিপিআর প্রোগ্রামে যোগদানের পর আমাদের রোগীদের পূর্বাপেক্ষা উন্নতির যে লক্ষণ আমরা পেয়েছি, যেগুলো প্রমাণ করে যে, ব্লকেজ বা অবরোধকে বিপরীতমুখী করা যায় অর্থাৎ সম্পূর্ণভাবে সারানো যায়।
কোনো কিছু শেখার ব্যাপারে বই পড়া একটা ভালো পথ... কিন্তু সেটাকে হাতে-কলমে প্রয়োগগত প্রশিক্ষণের পরিবর্তে ব্যবহার করা যায় না।

তৎসত্ত্বেও যা নিশ্চিতভাবে সাহায্য করে, তা হচ্ছে একটা ঘটনা- যখন আপনি এমন একজনকে পেয়েছেন, যিনি আপনার প্রয়োজন মতো সব জ্ঞাতব্য বিষয় আপনাকে জানাতে পারেন- ‘সিএডিপিআর সেন্টারে হৃদরোগ কর্মসূচি তৈরি হয় যোগ ব্যায়াম, ধ্যান, হৃৎপিণ্ডের পুনর্নবীকরণ ব্যায়াম এবং খাদ্য তালিকার সমন্বয়ে।

লেখক : অধ্যাপক, ইমুনোলজি বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ, ঢাকা।
চেম্বার : হলিস্টিক হেলথ কেয়ার সেন্টার, ৫৭/১৫ পান্থপথ, ঢাকা। ফোন : ০১৭১১৫৯৪২২৮


আরো সংবাদ



premium cement
বদরের শিক্ষায় ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : সেলিম উদ্দিন ইসলামের বিজয়ই বদরের মূল চেতনা : ছাত্রশিবির পরিবেশ দূষণে বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার মানুষের মৃত্যু : বিশ্বব্যাংক নোয়াখালীতে ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ‘আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল কাজ করে যাচ্ছে’ পুকুরে পাওয়া গেল ১০০ ইলিশ অবন্তিকার আত্মহত্যা : জবির সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের জামিন আবারো নামঞ্জুর পাথরঘাটায় বদর দিবস পালনে দেড় হাজার মানুষের ইফতারি আদমদীঘিতে ৭২ হাজার টাকার জাল নোটসহ যুবক গ্রেফতার সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পদক্ষেপ নেয়া হবে : মন্ত্রী

সকল