১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪২৯, ০৮ রমজান ১৪৪৫
`

গরমে তরমুজ : আছে যেসব উপকার

গরমে তরমুজ : আছে যেসব উপকার - ছবি : সংগ্রহ

১) অ্যান্টি অক্সিডেন্টের উৎস : যখন আপনি একটা লাল টুকটুকে ঠাণ্ডা তরমুজের টুকরোতে কামড় বসাবেন, তখন হয়তো আপনার মনে অ্যান্টি অক্সিডেন্টের ভাবনাটা আসবে না। কিন্তু এই ফলটির মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। আর এইসব উপকারী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট শরীর থেকে ফ্রি র‌্যাডিক্যালসকে সরায়, যার ফলে ক্যানসারের আশঙ্কা প্রতিহত হয়। এতে থাকা লাইকোপেন অ্যান্টি অক্সিডেন্টের জন্যই তরমুজের রং লাল। তরমুজের ভিটামিন সি ও লাইকোপেন ফ্রি র‌্যাডিক্যালসকে অতিরিক্ত ইলেকˆট্রন দেয়া আটকায়। এর ফলে ফ্রি র‌্যাডিক্যালস বাড়তে বাড়তে সেলুলার ড্যামেজ হওয়া অনেকটা আটকায়।

২) ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায় : তরমুজ খেলে মানবশরীরে কিডনি অ্যামাইনো অ্যাসিড এল সাইˆট্রুলিনকে অন্য একটি অ্যামাইনো অ্যাসিড এল আরজিনাইনে রূপান্তরিত করে। এই দুটি অ্যামাইনো অ্যাসিড কিডনিকে সুরক্ষা দেয়, পাশাপাশি এটি ডায়াবেটিসের ঝুঁকিকেও অনেটাই কমায়। সমীক্ষায় দেখা গেছে এল আরজিনাইন সাপ্লিমেন্টেশন শরীরে গ্লুকোজ মেটাবলিজম ও ইনসুলিন সেনসিটিভটি বাড়ায়।

৩) এনার্জি দেয় : অনেকে ওয়ার্কআডটের পরের ড্রিংক হিসাবে তরমুজের রস খাওয়ার পরামর্শ দেন। কেননা এর মধ্যেকার এল সাইˆট্রুলিন শরীরকে দ্রুত এনার্জি জোগায়। এটি দীর্ঘ পরিশ্রম বা কাজের পরে আপনার পেশিতে জমে যাওয়া ল্যাকটিক অ্যাসিডকে বেরিয়ে যেতে সাহায্য করে। ফলে ক্লান্তিভাবটা কাটে। পাশাপাশি শরীরে পানির জোগানও দেয়। গরমে সারা দিনে ঘাম হয়ে বা কাজের ফলে শরীরের অনেকখানি পানি বেরিয়ে যায়। কিন্তু কয়েক টুকরো তরমুজ খেলে তা থেকে শরীরে পানির চাহিদা পূরণ হয়। ফলত ডি-হাইড্রেশনের সমস্যা থাকে না।

৪) হার্টকে দেয় সুরক্ষা : তরমুজে থাকা লাইকোপেন শরীরের খারাপ কোলেসেটরল এলডিএলের পরিমাণ অনেকটাই কমায়। এর ফলে হার্ট থাকে সুরক্ষিত, কেননা হার্টের দেয়ালে মেদ জমে রক্ত চলাচলের পথ সরু হয় না। ফলত হার্টে চাপ পড়ে হার্টের অসুখের আশঙ্কাও থাকে না।

৫) ঘন ঘন অ্যাজমার অ্যাটাক হওয়া আটকায় : তরমুজে থাকে বেশ অনেকটা পরিমাণেই ভিটামিন সি। যা অ্যাজমার ঘন ঘন প্রকোপ কমাতে অনেকটাই সহায়ক। পাশাপাশি অ্যাজমার উপসর্গ মানে শ্বাসকষ্ট, বুকে-গলায় অস্বস্তি, বুকে চাপ ধরা ভাবটাও অনেকটা কমায় ভিটামিন সি। সেজন্য ডায়েটে নিযমিত তরমুজ রাখা প্রয়োজন অ্যাজমা রোগীদের। তবে খুব ঠাণ্ডা তরমুজ খাবেন না।

৬) দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করে : তরমুজ এমন একটা ফল, যা দ্রুত ওজন কমাতে খুবই সাহায্য করে। এতে প্রায় ৯৫ শতাংশ পানি ও ক্যালোরি নেই বললেই চলে। খাওয়ার পরে অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভর্তি থাকে। তাছাড়া এই ফলের মিষ্টত্ব কিন্তু ওজন বাড়ায় না। কয়েক টুকরা তরমুজ নিয়ে তাতে খানিকটা টকদই ছড়িয়ে খেলে তা ডেজার্ট হিসেবেও দুর্দান্ত, আবার শরীরে মেদ জমারও ভয় থাকে না।

৭) স্নায়ুকে সঠিকভাবে ক্রিয়াশীল রাখে : তরমুজে থাকা পটাশিয়াম মস্তিষ্কের স্নায়ুকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। শরীরে পটাশিয়ামের ঘাটতি দেখা দিলে তার থেকে কথা জড়িয়ে যাওয়া, স্মৃতিশক্তি ঠিক না থাকা, মস্তিষ্ক ঠিকমতো কাজ না করার সমস্যাগুলো হয়। আপনার যদি রাত্রে শোওয়ার সময়ে পায়ে মাসলে ক্র্যাম্প ধরে খুব ঘনঘন তাহলেও বুঝতে হবে আপনার শরীরে পটাশিয়ামের ঘাটতি হয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রতিদিন এক কাপ করে তরমুজের টুকরো খেলে শরীরে পটাশিয়ামের চাহিদা পূরণ হবে।

৮) প্রদাহ কমানোর সহায়ক : শরীরে ক্রমাগত ইনফ্লামেশন হতে হতে তা থেকে ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যা, ফাইব্রোমায়ালজিয়া, এমনকী ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। আর শরীরে ইনফ্লামেশন তথা প্রদাহ কমানোর অন্যতম সেরা মাধ্যম হলো ডায়েট। তরমুজে থাকা এল সাইˆট্রুলিন আর এল আরজিনাইন নামক অ্যামাইনো অ্যাসিড দুটি অ্যান্টে ইনফ্লেমেটারি উপাদান হিসাবে দুর্দান্ত কাজ করে।

৯) কিডনিকে আরো ভালোভাবে কাজ করতে সাহায্য করে : আমাদের শরীরে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে বিষাক্ত পদার্থ টক্সিন প্রবেশ করে, কিছুটা খাবারের মাধ্যমে, বাকিটা পরিবেশদূষণ থেকে। এখন শরীর থেকে এইসব টক্সিনকে বের করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় কিডনি। কিডনি ছাঁকনির মাধ্যমে ইডরিনের সাহায্যে এইসব টক্সিনকে বের করে দেয়। আর নিয়মিত তরমুজ খেলে কিডনির এই কাজটা খুব ভালোভাবে হয়। আর সেক্ষেত্রে সাহায্য করে তরমুজে থাকা ক্যালসিয়াম আর পটাশিয়াম। সকালের নাস্তায় মাঝারি বাটির একবাটি তরমুজ খেলে কিডনি অনেকটা দ্রুত আর ভালোভাবে কাজ করে।


আরো সংবাদ



premium cement