১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

প্রাকৃতিক চিকিৎসা

-

প্রকৃতিক চিকিৎসা হচ্ছে উৎকৃষ্ট চিকিৎসা। তবে কি মেডিক্যাল চিকিৎসার কোনো দরকার নেই? অবশ্যই আছে। চিকিৎসার ও চিকিৎসকের সফলতা সেখানেই যেখানে এই প্রাকৃতিক চিকিৎসাকেই কাজে লাগিয়ে রোগী সুস্থ করে তোলা যায়।

ধরা যাক, আপনি সাধারণ সর্দি জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। এখন চিকিৎসক আপনাকে কিভাবে সাহায্য করতে পারেন :

১. আপনাকে বুঝিয়ে বলবেন, এটি একটি সাধারণ ভাইরাসজনিত সমস্যা যা সাধারণত এমনিতেই অর্থাৎ বিশেষ কোনো ওষুধপত্র ছাড়াই ভালো হয়ে যায়।

২. জ্বর বা সর্দির জন্য সামান্য কিছু ওষুধ যেমন জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল এবং সর্দির জন্য প্রয়োজন হলে অ্যান্টি হিস্টামিন জাতীয় ওষুধ দিতে পারেন।

৩. দু-তিন দিন বিশ্রামে থাকতে বলতে পারেন যেটা রোগীর প্রাকৃতিক চিকিৎসায় একই সাথে এর সংক্রমণও রোধ করে।

তা হলে দেখা যাচ্ছে, প্রাকৃতিক চিকিৎসাকেই আমরা সাহায্য করছি মাত্র। যেহেতু এটি একটি ভাইরাসজনিত সমস্যা তাই অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের কোনো প্রশ্নই এখানে ওঠে না।

অথবা ধরুন আপনার শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। চিকিৎসক কী করতে পারেন তার জন্য-

১. ডায়রিয়ার ধরন ও ইতিহাস বিশ্লেষণ করে যদি মনে হয় এটি কোনো ভাইরাসজনিত ডায়রিয়া তা হলে তো অ্যান্টিবায়োটিক দরকার হবে না। তখন লক্ষণজনিত চিকিৎসা যেমন খাবার স্যালাইন বা শিরায় স্যালাইন দিতে পারেন যা আপনার শিশুর পানিশূন্যতা রোধ করবে। সাথে সাথে বমি, জ্বর বা পেটে ব্যথা ইত্যাদি থাকলে তার জন্য কোনো ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন। আবার যদি দৃশ্যমান হয় যে, এটি জীবাণুঘটিত তবে একটি অ্যান্টিবায়োটিক দিতে পারেন যা শিশুর শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতার পাশাপাশি সাহায্যকারী হিসেবে ওই জীবাণুর বিরুদ্ধে কার্যকর হবে।

এ ক্ষেত্রেও দেখুন আমরা প্রাকৃতিক চিকিৎসাকেই শুধু সমর্থন করছি মাত্র। আমাদের শরীরের ভেতরে সৃষ্টিকর্তা একটি একক প্রতিরোধ ক্ষমতা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। যাকে বলি ইম্যুনিটি, এটি কিন্তু পারিপার্শ্বিকতার পরিবর্তনের সাথে সাথে নিজেরও পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করে থাকে আমাদের অজান্তেই। এটাকেই কিন্তু আমরা অভিযোজনের একটা অংশ হিসেবে ধরে নিতে পারি। শুধু রোগ-জীবাণুই যে পরিবর্তিত হয়, তাদের প্রকৃতি বদলায় তা নয়; সাথে সাথে আমাদের এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতারও পরিবর্তন সাধিত হয়। এই পরিবর্তন জীবন আছে এ রকম সব কিছুর মধ্যেই পরিলক্ষিত হয়; বেঁচে থাকার তাগিদে। অবশ্য আমাদের মানুষের ক্ষেত্রে বলতে হবে শুধু বেঁচে থাকা নয়, বাঁচার মতো বাঁচার জন্য। এ জন্য আমাদের শরীরের এ রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা সদাই জাগ্রত। যখনই কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দেয় তখনই এই ক্ষমতা প্রয়োজন মাফিক প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করে। অবশ্য মাঝে মধ্যে তা মাত্রাতিরিক্ত হয়ে যায়। এতে অনেক সময় নিজের শরীরের প্রচণ্ড ক্ষতি সাধিত হয়। এই প্রতিরোধের মাত্রা বেশি হলে কমিয়ে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসাই চিকিৎসকদের কাজ। কিন্তু লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, আমরা এই মূলমন্ত্র ভুলে এখন অদ্ভুত সব আচরণ করছি। ‘গাদা গাদা ওষুধ ব্যবহার করলেই রোগ তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যাবে’ এই মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে উঠছি।

মানুষের স্বাভাবিক প্রচেষ্টা, পরিমিতির চর্চা, হাঁটাচলা, ব্যায়াম করা ইত্যাদির প্রচার প্রচারণা অধিকহারে চালানো উচিত। বিশেষ করে আমরা যারা চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত আছি তাদের। যেকোনো অসুস্থতা মানেই ডাক্তারের কাছে যাওয়া। ডাক্তারের কাছে যাওয়া মানেই অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা আর ওষুধ নতুবা অপারেশন এবং এটাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই লাগাতার পৌনঃপুনিকতায় পর্যবসিত হয়ে উঠেছে। এসব অভ্যাস পরিহার করা উচিত।

লেখক : কনসালট্যান্ট ফিজিশিয়ান, জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল, ঢাকা।

 


আরো সংবাদ



premium cement
শিবপুরে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় পথচারীর নিহত চকরিয়ায় ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৩ গাজা মানবিক নরকে পরিণত হয়েছে : জাতিসঙ্ঘ প্রধান রাফা হামলার পরিকল্পনা ইসরাইলের ত্যাগ করা উচিত : চীন গাজা যুদ্ধে নতুন যে কৌশল অবলম্বন করল ইসরাইল হাসপাতালের শৌচাগারে মিলল নবজাতক শিশু ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিসিডিপি গঠন করা হবে : পরিবেশমন্ত্রী অননুমোদিত জমি ভরাট কার্যক্রমের সন্ধান পেলে দ্রুত ব্যবস্থার নির্দেশ ভূমিমন্ত্রীর ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এক ব্যক্তিকে গলা কেটে হত্যা ইসরাইলকে পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাতের ব্যাপারে সতর্ক করলো আইআরজিসি

সকল