১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রোগ প্রতিরোধে আমলকী

রোগ প্রতিরোধে আমলকী -

আমাদের দেশে আমলকী অত্যন্ত সুপরিচিত এবং দেশীয় ফল। একসময় বাংলার গ্রামগঞ্জ, শহরে সর্বত্রই এ ফলের প্রচুর গাছ ছিল। বর্তমানে এ ফলের গাছটি কমে গেছে। সারা বছরই এ ফলটি বাজারে পাওয়া যায়। তবে বর্ষা ও শীত মওসুমে এ ফলটি বেশি পাওয়া যায়। ছোট ছোট হালকা সবুজ রঙের গোলাকৃতি হয় এই ফল। আমলকী জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। ফলটি খেতে টক এবং তেতো লাগে। আমলকী খেয়ে পানি খেলে মিষ্টি লাগে। আমলকীতে ভিটামিন ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান প্রচুর পরিমাণে আছে। মানব দেহের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান বা সাহায্য করে থাকে এ ফলটি। পুষ্টিবিদেরা আমলকীকে পুষ্টির ভাণ্ডার বলে থাকেন। এটি একটি উল্লেখযোগ্য ঔষধি ফল। প্রসাধনীসামগ্রী, খাদ্য ও ঔষধ হিসেবে আমলকী আমাদের জীবনের সাথে গুরুত্বসহকারে মিশে আছে। এ ফলটির নাম থেকে বোঝা যায় এটি কত উপকারী। ‘আম’ অর্থ সব আর ‘লকী’ (নকি) অর্থ পরিষ্কার করা।

যার অর্থ দাঁড়ায় দেহ থেকে দূষিত পদার্থ বের করে দেয়া। আমিষ জাতীয় খাদ্য পরিপাকের পর তা থেকে সৃষ্ট বর্জ্য উপাদান- ইউরিয়া ও ইউরিক এসিড ইত্যাদি অম্ল বা এসিড পদার্থ দেহের জন্য ক্ষতিকর বিষাক্ত পদার্থে পরিণত হয়। আমলকীর ক্ষারকীয় গুণ এসব পদার্থকে নিরপেক্ষ করে তোলে। ফলে বর্জ্য পদার্থ দেহের কোনো ক্ষতি করতে পারে না। প্রস্রাবের সাথে বেরিয়ে যায়। আমলকী একটি শক্তিশালী এন্টি অক্সিডেন্ট যা রক্তের গন্ধহীন গ্লুকোজ কমিয়ে রাখতে সাহায্য করে। অতিরিক্ত গ্লুকোজ গ্লিসারলে রূপান্তর হতে পারে না। এতে দেহে অতিরিক্ত চর্বি জমার সুযোগ পায় না। ফলে হার্টের ব্লক বা হৃদরোগ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। আমলকীকে এন্টি এইজিংও বলা হয়। যা নিয়মিত সেবনের ফলে বার্ধক্যের চাপ বা মানুষের বার্ধক্য বিলম্বিত করে দীর্ঘায়ু লাভ হয়। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আমলকী খুবই উপকারী। রক্তের শর্করাকে নিয়ন্ত্রণ করে আমলকী ভিটামিন সি’র বড় উৎস। অন্য কোনো ফলে এত ভিটামিন নেই।

সুতরাং ভিটামিন সি’র অভাব পূরণে আমলকী সবচেয়ে বড় ওষুধ। প্রতিদিন কমপক্ষে দু’টি আমলকী খেলে প্রতিদিনের নানা ভিটামিনের অভাব পূরণ হয়ে যায়। আমলকীতে প্রচুর আঁশ থাকে এবং এর টক ও তেতো স্বাদ মুখের লালা বাড়িয়ে হজমে সহায়ক এনজাইমকে সক্রিয় করে। আমলকী বলকারক, রোগ প্রতিরোধ, যকৃৎ, পেশি, স্নায়ুমণ্ডলের শক্তি বর্ধক, রক্ত পরিষ্কারক এবং যৌনশক্তি বৃদ্ধি করে। এ ফলের বীজ পর্যন্ত সি-এর প্রাকৃতিক উৎস। একে ভিটামিন সি’র ভাণ্ডার বলা হয়। এ ফলে আরো আছে ট্যানিন, ফলয়েডীয় পদার্থ, ফাইল এমব্লিক এসিড, লিপিড, গ্রালিক এসিড, এলাজিক এসিড, লিউপিয়ল বিটা সিটোস্টেরল। বাংলাদেশের ফলের মধ্যে অন্য কোনো ফলে এত পরিমাণ ভিটামিন সি আর নেই। তাই ভিটামিন সি’র ঘাটতি পূরণে এ ফলটি খুবই প্রয়োজনীয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement