২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শীতের শুরুতেই রাজধানীতে মশার উপদ্রব

মশা - ছবি : সংগৃহীত

মশা নিয়ন্ত্রণে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন সম্প্রতি বিশেষ কর্মসূচি নিলেও রাজধানীতে মশার উপদ্রব কমেনি। উত্তর ও দক্ষিণ সিটির সর্বত্রই একই অবস্থা। দিনে রাতে সব সময় মশার অত্যাচার চলছে। মশারি, কয়েল, ইলেকট্রিক ব্যাট, স্প্রে কোনো কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। সুযোগ পেলেই কামড় বসিয়ে দিচ্ছে মশা। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন মশা নিয়ন্ত্রণে প্রতি বছরই বাজেট বাড়াচ্ছে। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। প্রতি বছরই মশার যন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছে রাজধানীবাসীকে। 

বর্তমানে শীত মওসুম চলায় রাজধানীর প্রায় প্রতিটি এলাকাতেই মশার উপদ্রব বেড়েছে। বাসা-বাড়ি থেকে অফিস-আদালত সর্বত্রই মশার অত্যাচার। মশা নিয়ন্ত্রণে গত ২ ডিসেম্বর থেকে সপ্তাহব্যাপী বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। কিন্তু এরপরও মশার অত্যাচার কমেনি এতটুকুও। দিনের বেলাতেও মশারি টানিয়ে ঘুমাতে হচ্ছে নগরবাসীকে। বাসাবো এলাকার গৃহবধূ রোকেয়া খাতুন নয়া দিগন্তকে বলেন, সন্ধ্যা হলেই দরজা-জানালা বন্ধ করে রাখতে হয়, না হলে রাতে মশার অত্যাচারে ঘরে থাকা দায় হয়ে পড়ে। দিনের বেলাতেও মশার যন্ত্রণা রয়েছে। ওষুধ ছিটানোর পর ঘণ্টা না পেরোতেই আবার শুরু হয় মশার অত্যাচার। 

সায়েদাবাদ এলাকার বাসিন্দা আনিসুর রহমান বলেন, ঢাকায় সারা বছরই মশার যন্ত্রণা পোহাতে হয়। কখনো একটু কমে আবার কখনো মশার যন্ত্রণায় টেকা যায় না। বেশির ভাগ সময়ই মশার যন্ত্রণা পোহাতে হয়। সিটি করপোরেশন ওষুধ ছিটালেও তাতে খুব বেশি কাজ হয় না বলেও অভিযোগ করেন তিনি। 

ঢাকা দক্ষিণের মতো উত্তর সিটির সর্বত্রই চলছে মশার অত্যাচার। কচুক্ষেত এলাকার বাসিন্দা ইখলাস হোসেন বলেন, মশার অত্যাচার মাঝে কিছুটা কমলেও এখন আবার বেড়েছে। বাড়িতে যখন থাকি তখনও মশা থাকে, আবার অফিসে গেলেও মশার অত্যাচার পোহাতে হয়। 

মিরপুর ১১ নম্বরের বাসিন্দা আলিমুন নেছা বলেন, সিটি করপোরেশন শুধু শব্দ করে ধোঁয়া দিয়ে যায়, কিন্তু কিছুক্ষণ পরই আগের অবস্থা। মশার কারণে দিনের বেলাতেও ছোট শিশুদের মশারির মধ্যে রাখতে হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। 
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা: শেখ সালাহউদ্দীন নয়া দিগন্তকে বলেন, এখন শীত মওসুম হওয়ায় মশার প্রজনন বেড়েছে। এজন্য আমরা মশা নিয়ন্ত্রণে গত ২ ডিসেম্বর থেকে সপ্তাহব্যাপী বিশেষ কর্মসূচি পালন করেছি। মশার ওষুধ ছিটানোর জন্য প্রত্যেক ওয়ার্ড কাউন্সিলরের নেতৃত্বে স্থানীয়ভাবে দায়িত্ব দেয়া রয়েছে। তারা নিয়মিত ওষুধ দিচ্ছে। তারপরও খিলগাঁও, যাত্রাবাড়ীসহ কিছু এলাকায় মশার উপদ্রব রয়েছে। এসব এলাকায় মশা প্রজনন ও বসবাসের উপযুক্ত পরিবেশ থাকার কারণেই এ ঘটনা ঘটছে। তিনি আরো বলেন, বর্তমান এ মওসুমে মশা কামড়ালেও ডেঙ্গু হওয়ার আশঙ্কা কম। তবে তারপরও সতর্ক থাকা উচিত। 

জানা যায়, মশা নিয়ন্ত্রণে সিটি করপোরেশন দুই ধরনের ওষুধ প্রয়োগ করে থাকে। এর মধ্যে ড্রেন-নালার মশার লার্ভা ধ্বংস করতে লার্ভি সাইড প্রয়োগ করা হয়। এছাড়া উড়ন্ত মশা নিয়ন্ত্রণে বিকেলে ফগার মেশিন দিয়ে এডালটিসাইড ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। মশা নিয়ন্ত্রণ কাজে চলতি অর্থ বছরে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের বাজেট রয়েছে ৪৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) বাজেট রয়েছে ২৬ কোটি টাকা এবং উত্তর সিটি করপোরেশনের বাজেট আছে ২১ কোটি টাকার। গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বাজেট অনেক বেশি। তারপরও কমছে না মশার অত্যাচার।


আরো সংবাদ



premium cement