২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

এই রোগের শিকার নারীরাই বেশি হয়

শরীরের এক অঙ্গ থেকে সরাসরি লসিকা বা রক্তের মাধ্যমে অন্য অঙ্গে গিয়ে আবার একই... - সংগৃহীত

শরীরের যেকোনো অবাঞ্ছিত চাকাকেই টিউমার বলে। যখন শরীরের অন্যান্য অঙ্গের মতো স্তনে টিউমার হয় তখন তাকে বলে স্তন টিউমার।

স্তন টিউমার দুই ধরনের- বেনাইন আর মেলিগন্যান্ট।

১) বেনাইন টিউমার : এগুলো ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়, শরীরে মারাত্মক কোনো উপসর্গ তৈরি করে না এবং শরীরে কোনো ক্ষতি করে না। তবে কখনো কখনো ক্যান্সারে রূপান্তর হতে পারে।

২) মেলিগন্যান্ট টিউমার : এগুলো ক্যান্সার, অতি দ্রুত বৃদ্ধি পায়, শরীরের এক অঙ্গ থেকে সরাসরি লসিকা বা রক্তের মাধ্যমে অন্য অঙ্গে গিয়ে আবার একই জাতের টিউমার সৃষ্টি করে। রোগীর শরীরে খ্যাদ্য গ্রহণ ছাড়াও রক্তক্ষরণসহ অন্যান্য মারাত্মক ক্ষতিকর উপসর্গ তৈরি করে রোগীকে মৃত্যুর দিকে ধাবিত করে।

স্তন ক্যান্সারের কারণ : বিজ্ঞানের এই চরম উন্নতির যুগে স্তন ক্যান্সারের কারণ সম্পূর্ণ জানা যায়নি। তবে কিছু কিছু কারণকে দায়ী করা হয়, যেমন-

১) ভৌগোলিক অবস্থান- পশ্চিমা দেশগুলোতে বেশি হয়।
২) বয়স- সাধারণত ২০ বছর আগে দেখা যায় না, তবে বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা বাড়তে থাকে।
৩) লিঙ্গ- মাত্র ০.৫% পুরুষের মধ্যে আর বাকি সব নারীদের।
৪) বংশগত- এই রোগে বংশগত প্রভাব আছে।
৫) খাবার- অধিক চর্বিজাতীয় খাবার ও মাদক গ্রহণ এর কারণে হতে পারে।
৬) হরমোনের প্রভাব- কৃত্রিম হরমোন গ্রহণ, কম বয়সে মাসিক শুরু ও অধিক বয়সে মাসিক শেষ ইত্যাদি।
৭) অন্যান্য- দেরিতে বিয়ে করা, দেরিতে প্রথম সন্তান নেয়া, সন্তানকে বুকের দুধ না খাওয়ানো এর কারণ হতে পারে। তা ছাড়া বিআরসিএ-১ জিন ও বিআরসিএ-২ জিন এই রোগের জন্য দায়ী বলে ধারণা করা হয়।

উপসর্গ
১) স্তনে চাকা- প্রথমপর্যায়ে নড়াচড়া করলেও ধীরে ধীরে নিচের মাংসে বা বক্ষপিঞ্জরের সাথে বা ওপরে চামড়ার সাথে লেগে যেতে পারে এমনকি চামড়ায় ঘা হতে পারে।
২) স্তনের আকৃতি পরিবর্তন।
৩) বোঁটার আকৃতি পরিবর্তন- দেবে যেতে পারে।
৪) বোঁটা দিয়ে রক্ত ঝরতে পারে।
৫) বগলে লসিকাগ্রন্থি বড় হতে পারে।
৬) তা ছাড়া ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ার ফলে কাশির সাথে রক্ত, পেটে পানি এসে পেট ফোলা, হাড়ে ব্যথা, খিঁচুনিসহ অজ্ঞান হওয়া ইত্যাদি হতে পারে।

রোগ নির্ণয়-
ক) রোগের ইতিহাস শুনে
খ) সরাসরি পরীক্ষা করে এবং
গ) ইনভেস্টিগেশন করে যেমন- মেমোগ্রাম, আল্ট্রাসনোগ্রাম, এফএনসি বা বায়প্সি করে।

চিকিৎসা : বেনাইন টিউমারের জন্য অপারেশন যথেষ্ট হলেও ক্যান্সার চিকিৎসায় প্রয়োজন অপারেশন, রেডিওথেরাপি, ক্যামোথেরাপি, হরমোন থেরাপি ইত্যাদি প্রয়োগ করা।

উপসর্গ আসার আগেই নিজে নিজে পরীক্ষা করে, স্বাস্থ্যকর্মী দিয়ে এ রোগ পরীক্ষা করে বা মেমোগ্রাম করে এ রোগ নির্ণয় করা যায়। একে বলে স্তন স্কিনিং। স্তন ক্যান্সার সারা বিশ্বে মহিলাদের মৃত্যুর দ্বিতীয় কারণ, যার গুরুত্ব অনুধাবন করে সরকার অক্টোবর মাসকে স্তন ক্যান্সার অ্যায়ারনেস মাস হিসেবে ঘোষণা করেছে।

প্রাথমিকপর্যায়ে শনাক্ত হলে স্তন ক্যান্সার সম্পূর্ণ নিরাময় হয়। যার জন্য প্রয়োজন সচেতনতা। তাই স্তনে যেকোনো অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত সার্জারি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন।


আরো সংবাদ



premium cement