মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকালের সমস্যা
- ডা: রুমানা চৌধুরী
- ১৮ অক্টোবর ২০১৮, ১৪:০২
বয়ঃসন্ধিকাল বলতে আমরা মূলত কৈশোর অর্থাৎ ১০-১১ বছর বুঝি। এ সময় শরীরের ভেতরে হরমোনগত পরিবর্তনের সাথে সাথে মানসিক এবং শারীরিক নানা পরিবর্তন ঘটে। এ সময় আমাদের স্বভাবে ফুটে ওঠে কিছু বৈশিষ্ট্য ও পরিবর্তন। বয়ঃসন্ধিকালে যখন কোনো কিশোর-কিশোরী কোনো মানসিক রোগের শিকার হয়, সেটাকে তার বয়ঃসন্ধিকালের স্বভাবগত পরিবর্তন বলে ধরা হয়।
মানসিক রোগ শুরুর আগে রোগের পূর্বলক্ষণ বা সূচনা শুরু হওয়ায় সময়কে ‘প্রোড্রোমাল ফেজ’ বলে। এই সময়ের মানসিক পরিবর্তনগুলো অনেকসময় বয়ঃসন্ধিকালের বৈশিষ্ট্যগুলোর সাথে মিলে যায়। ফলে যথার্থ সময় মানসিক রোগীকে চিহ্নিত করা মুশকিল হয়। আবার যথার্থ সময়ের মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ না নিতে পারলে রোগ দীর্ঘস্থায়ী হয়ে যায়। তাই প্রোডোমাল ফেজের লক্ষণগুলো জানা খুবই দরকার। মানসিক বিশেষজ্ঞরা রোগের লক্ষণ অনুযায়ী মানসিক রোগকে বহুভাগে ভাগ করেছেন। কিন্তু সাদামাটাভাবে আমরা দুই ধরনের রোগী দেখতে পাই।
এদের মধ্যে এক শ্রেণীর রোগী আছেন যারা বুঝতে পারেন যে তাদের কিছু সমস্যা আছে এবং তারা ডাক্তারের পরামর্শ বা সাহায্য চাইতে আসেন। এ ধরনের অসুখ সাধারণত নিউরোসিন শ্রেণীভুক্ত আরেক শ্রেণীর রোগী নিজেদের যেকোনো মানসিক সমস্যা আছে সেটা বুঝতে পারেন না বা স্বীকারও করেন না। বাইর থেকে তাদের আচার-আচরণের মাধ্যমে বোঝা যায় তারা মানসিকভাবে অসুস্থ। এ ধরনের অসুস্থতা সাধারণত সাইকোসিস শ্রেণীভুক্ত। এই সাইকোসিসের শুরুতে কিছু রোগে প্রাথমিক পূর্ব লক্ষণ ফুটে ওঠে। যেহেতু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এ রোগের সূচনা হয় ১৫ থেকে ২০ বছর বয়সের মধ্যে। অতএব সহজেই আমরা একে বয়ঃসন্ধিকালের পরিবর্তন বলে মেনে নেই। তাই যৌবনের প্রারম্ভে ও যথার্থ সময়ে চিকিৎসা না করার দরুণ পরবর্তীতে তা সেরে উঠতে কখনো কখনো বেশ কয়েক বছর লেগে যায়। তবে চিকিৎসা করতে দেরি হওয়ার কারণ হিসেবে রোগ নির্ণয়ও দেরি হতে পারে।
তাই বয়ঃসন্ধিকালে সন্তানের প্রতি বিশেষভাবে নজর রাখা দরকার এবং কোনোরকম অসঙ্গতি বা অস্বাভাবিক লক্ষ করা গেলে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ দরকার।
নারীর বন্ধ্যত্বের কারণ
ডা: এম এ রাজ্জাক
প্রাপ্তবয়স্ক কোনো নারীর যদি এক থেকে দুই বছর কাল অবধি উপযুক্ত সময়ে যথাযথভাবে কোনো প্রকার জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি/কৌশল ছাড়া জন্মদানে সক্ষম এমন পুরুষের সাথে/(স্বামীর) সাথে স্বাভাবিক যৌনমিলন বা মেলামেশার পরও ওই নারী গর্ভবতী না হন তবে তাকেই নারী বন্ধ্যত্ব বলে।
মোট বন্ধ্যত্বের অর্ধেকের বেশিই নারীর কারণ। আর এক-তৃতীয়াংশ হয়ে থাকে পুরুষের কারণে।
নারীর বন্ধ্যত্ব ২ প্রকারের হয় :
প্রাইমারি : উপরের সংজ্ঞানুযায়ী বা কেন নর-নারী যুগল যদি পূর্ণ সুযোগ সুবিধা ভোগ করাসহ দীর্ঘ এক-দুই বছর সময় সহাবস্থানে থেকে কোনো প্রকার নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যতিরেকে অবাধ মিলামেশার (যৌনমিলনের) পরও সন্তান ধারণে বা গর্ভবতী হতে সক্ষম না হন তবে তাকে প্রাইমারি নারী বন্ধ্যত্ব বলা হয়।
সেকেন্ডারি ইনফারটিলিটি : একটি বা দু’টি সন্তান জন্মদানের পর যদি সন্তান জন্মদানের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও এক থেকে দুই বছর কাল অবধি আর কনসেফ না করতে সক্ষম হন তবে তাকে সেকেন্ডারি বন্ধ্যত্ব বলে।
বন্ধ্যত্বের কারণ
যে অবস্থায় কখনো সন্তান আসে না :
# অপ্রাপ্ত বয়স্ক হলে।
# ম্যানোপজের পরে
# হিস্ট্রিক্টমির পর বা জরায়ু না থাকলে
# টিউরেক্টমির পর বা উভয় টিউভ না থাকলে
# বিবাহিত কিন্তু দুইজনই দূরে অবস্থান করলে অথবা একই সাথে অবস্থানের পরও যৌনমিলন না হলে।
নারীর বন্ধ্যত্বের গুরুত্বপূর্ণ কারণস্বরূপ :
# নারী হরমোনের সমস্যা
# হাইপার থাইরয়েডিজম
# অস্বাভাবিক জরায়ু থাকলে
# জরায়ুতে মোল থাকলে
# ফাইরয়েড থাকলে
# জরায়ুর মুখে পলিপ থাকলে
# জরায়ুর জন্মগত ত্রুটি থাকলে
# জরায়ুর মুখ অস্বাভাবিক থাকলে
# জরায়ুর ফাংশনগত ত্রুটির দরুন ব্লিডিং হতে থাকলে # মাসিক অনিয়মিত থাকলে (কারো দেখা যায় ছয় মাস একাধারে ব্লিডিং হতে থাকে আবার একাধারে ৬-৯ মাস মাসিক বন্ধ থাকে)
# ডিম্বাশয়ের জন্মগত ত্রুটি থাকলে, ব্লক থাকলে
# বয়সের জন্য জরায়ুর কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেললে
# পেলভিক এন্ডোম্যাট্রিয়সিস হলে।
আর যেসব ফ্যাক্ট বন্ধ্যত্বের জন্য সহযোগিতা করতে পারে :
ডায়াবেটিস মেলিটাস
# গনোরিয়া
# সিফলিসে ভোগা
# অ্যাপেন্ডিসাইটিস- অ্যাসাইটিসে ভোগা, ওভারিয়ান সিস্ট-টিউমার থাকা
# রেট্রোভারশন, ইউটেরাইন ইনফ্লামেশন, সালফিংজাইটিস
# জাজাইনাইটিস
# এন্ডোমেট্রিওসিস # ইউটেরাইন ফাইব্রয়েড
# ইউটেরাইন ক্যান্সার
# ফ্যালোপিয়ান টিউব ক্যান্সর
# ভ্যাজাইনাল ক্যান্সার
# ট্রাইকোমনা ইনফেকশন
# হাইম্যান পুরো হলে এবং ভ্যাজাইনার পথ যদি খুব সরু সঙ্কীর্ণ থাকলে।
আরো যেসব কারণ সহযোগিতা করতে পারে :
# খুব বেশি মুটিয়ে গেলে
# এক সন্তান নেয়ার পর দীর্ঘ অপেক্ষা করলে এবং ওরাল পিল নিলে ও অন্যান্য হরমোনাল চিকিৎসা নিলে
# কঠিন তাপে এবং কঠোর পরিশ্রান্ত থাকলে
# স্বাস্থ্যহীনা বা অ্যানিমিয়া থাকলে
# ভিটামিন বি ১২ এর অভাব থাকলে
# বয়স বেড়ে গেলে
# মানসিক দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হলে (কোলা/কমল পানিয়ে) ক্যাফেইন বেশি নিলে
# স্ত্রীর-স্বামীর অমিল থাকলে
# স্ত্রী/স্বামী দূরে থাকলে
# কামেচ্ছা না থাকা
# সঙ্গম ভীতি থাকা
# পুরুষ ভীতি থাকা
# কখনো কখনো পূর্বের সন্তান দুগ্ধপুষাবস্থায় পুনরায় সন্তান আসে না
# সিস্টেমেটিক সহবাসের অভাব হলে।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক, তানজিম হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, নারায়ণগঞ্জ। চেম্বার: সিটি হোমিও ইন্টারন্যাশনাল ২৩, জয়কালী মন্দির, ঢাকা।
ফোন : ০১৯১২৮৪২৫৮৮
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা