২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বয়ঃসন্ধিকালের সমস্যা

-

বয়ঃসন্ধিকাল বলতে আমরা মূলত কৈশোর অর্থাৎ ১০-১১ বছর বুঝি। এ সময় শরীরের ভেতরে হরমোনগত পরিবর্তনের সাথে সাথে মানসিক এবং শারীরিক নানা পরিবর্তন ঘটে। এ সময় আমাদের স্বভাবে ফুটে ওঠে কিছু বৈশিষ্ট্য ও পরিবর্তন। বয়ঃসন্ধিকালে যখন কোনো কিশোর-কিশোরী কোনো মানসিক রোগের শিকার হয়, সেটাকে তার বয়ঃসন্ধিকালের স্বভাবগত পরিবর্তন বলে ধরা হয়।
মানসিক রোগ শুরুর আগে রোগের পূর্বলক্ষণ বা সূচনা শুরু হওয়ায় সময়কে ‘প্রোড্রোমাল ফেজ’ বলে। এই সময়ের মানসিক পরিবর্তনগুলো অনেকসময় বয়ঃসন্ধিকালের বৈশিষ্ট্যগুলোর সাথে মিলে যায়। ফলে যথার্থ সময় মানসিক রোগীকে চিহ্নিত করা মুশকিল হয়। আবার যথার্থ সময়ের মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ না নিতে পারলে রোগ দীর্ঘস্থায়ী হয়ে যায়। তাই প্রোডোমাল ফেজের লক্ষণগুলো জানা খুবই দরকার। মানসিক বিশেষজ্ঞরা রোগের লক্ষণ অনুযায়ী মানসিক রোগকে বহুভাগে ভাগ করেছেন। কিন্তু সাদামাটাভাবে আমরা দুই ধরনের রোগী দেখতে পাই। এদের মধ্যে এক শ্রেণীর রোগী আছেন যারা বুঝতে পারেন যে তাদের কিছু সমস্যা আছে এবং তারা ডাক্তারের পরামর্শ বা সাহায্য চাইতে আসেন। এ ধরনের অসুখ সাধারণত নিউরোসিন শ্রেণীভুক্ত আরেক শ্রেণীর রোগী নিজেদের যেকোনো মানসিক সমস্যা আছে সেটা বুঝতে পারেন না বা স্বীকারও করেন না। বাইর থেকে তাদের আচার-আচরণের মাধ্যমে বোঝা যায় তারা মানসিকভাবে অসুস্থ। এ ধরনের অসুস্থতা সাধারণত সাইকোসিস শ্রেণীভুক্ত। এই সাইকোসিসের শুরুতে কিছু রোগে প্রাথমিক পূর্ব লক্ষণ ফুটে ওঠে। যেহেতু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এ রোগের সূচনা হয় ১৫ থেকে ২০ বছর বয়সের মধ্যে। অতএব সহজেই আমরা একে বয়ঃসন্ধিকালের পরিবর্তন বলে মেনে নেই। তাই যৌবনের প্রারম্ভে ও যথার্থ সময়ে চিকিৎসা না করার দরুণ পরবর্তীতে তা সেরে উঠতে কখনো কখনো বেশ কয়েক বছর লেগে যায়। তবে চিকিৎসা করতে দেরি হওয়ার কারণ হিসেবে রোগ নির্ণয়ও দেরি হতে পারে।
তাই বয়ঃসন্ধিকালে সন্তানের প্রতি বিশেষভাবে নজর রাখা দরকার এবং কোনোরকম অসঙ্গতি বা অস্বাভাবিক লক্ষ করা গেলে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ দরকার।


আরো সংবাদ



premium cement