২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নবজাতকের গোসল

নবজাতকের গোসল - ছবি : সংগৃহীত

নবজাতককে কখন গোসল দেয়া দরকার? জন্মের পরপরই? এক দিন পর, সাতদিন পর? এ নিয়ে মতভেদ বা বিতর্ক আছে। বিতর্ক থাকতেই পারে। কারণ জন্মের পরই শিশুর শরীর ময়লা হয়ে যায় না। ধুলো মাটিতে সে খেলা শুরুই করেনি। তার পোশাকও ময়লা হয়নি। সুতরাং এত শিগগিরই গোসল কেন? আবার জন্মকালীন শিশুর ত্বকে এক ধরনের কাই জাতীয় জিনিস একটু আধটু থাকতে পারে। অতএব গোসলটা একটু তাড়াতাড়িই দিতে হবে, এ কথা বলতে পারেন কেউ কেউ। অনেকে মনে করেন, নাভি থেকে নাড়ি শুকিয়ে খসে না পড়া পর্যন্ত পানিতে গামছা ভিজিয়ে শিশুর শরীর মুছে দেয়াই শ্রেয়। গোসলের প্রয়োজন নেই। আবার অনেকে বলেন, শিশুকে পানিতে ভিজিয়ে গোসল করালেও নাভিতে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় না। গোসলের পাত্র ও পানি পরিষ্কার হওয়া চাই।

তবে গোসল দেয়া শুরু করার পর থেকে প্রতিদিনই নিয়মিত গোসল করানো প্রয়োজন পড়ে না। বরং প্রতিদিন গোসল করালে শিশুর ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। তবে প্রতিদিন কুসুম গরম পানি দিয়ে মাথা ধুয়ে দেয়া ভালো। তা হলে মাথায় খুসকি জাতীয় জিনিস তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। গোসল করানোর সময় প্রথমে মুখমণ্ডল এবং সবশেষে মাথা ভিজানো উচিত। এতে শিশু তার শরীরের তাপ ধরে রাখতে পারবে বেশি। গোসলের পর তোয়ালে বা অন্যান্য কাপড় দিয়ে ভালো করে শিশুকে ঢেকে দিতে হবে যেন তার ঠাণ্ডা না লাগে।

সাবান-শ্যাম্পু ব্যবহার জরুরি নয়। সাবানের কাজ ত্বকের তেল, চর্বি বা ময়লাকে আলগা করে দেয়া। তবে কুসুম গরম পানি আর গামছা দিয়েই ভালো করে পরিষ্কার করা সম্ভব। শিশুর ত্বকের পিএইচ ৫.৬ থেকে ৫.৮। পক্ষান্তরে সাবানের পিএইচ ৯ থেকে ১০ এর মধ্যে। ক্ষারধর্মী। তাই সাবান শিশুর ত্বকের কিছু ক্ষতি করতেও পারে। কোন সাবান বা শ্যাম্পু ব্যবহার করা যাবে, তা শিশু থেকে শিশুতে ভিন্ন হতে পারে। পরখ করে ব্যবহার করতে হবে। প্রথমে শরীরের কোনো এক জায়গায় একটু ব্যবহার করে কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে। যদি কয়েক ঘণ্টা পর ওই স্থানের ত্বকে কোনোরূপ পরিবর্তন না ঘটে, তা হলে ওই সাবান বা শ্যাম্পু ব্যবহার করা যাবে। সাবান-শ্যাম্পু লাগিয়ে ভীষণ জোরে ঘষাঘষি করা উচিত নয়।

গোসলের আগে তেল বা লোশন ব্যবহার করা যেতে পারে। কিন্তু গোসলের পর তেল বা লোশন ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণ তেল বা লোশন শিশুর শরীরের ত্বকের ঘর্ম গ্রন্থির ছিদ্রপথ বন্ধ করে দিতে পারে। এতে শরীরে দানা দানা ফুসকুরি বের হতে পারে।

লেখক : বিভাগীয় প্রধান, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগ,
কমিউনিটি বেজড মেডিক্যাল কলেজ, ময়মনসিংহ।

আরো পড়ুন :
নিমের উপকারিতা
নবীন চৌধুরী

প্রাচীনকাল হতে, মানুষ রোগ আরোগ্যের জন্য ভেষজ উদ্ভিদ ব্যবহার করে আসছে। কোন উদ্ভিদের রোগ নিরাময় ক্ষমতা থাকলে তাকে ভেষজ উদ্ভিদ বলে। এ ছাড়া উদ্ভিদ মানুষের জীবনে উপকার হিসেবেই কাজ করে আসছে। যেমন নিম গাছ, নিম গাছের সাথে সবাই কমবেশি পরিচিত আছে। বাংলায় যেমন নিম বা নিম গাছ, হিন্দি ও উর্দুতে নিম এবং সংস্কৃতে নিম নামে পরিচিত, বৈজ্ঞানিক নাম অ্যাজাডিরাকটা ইনডিকা মেলিয়েসি গোত্রের।

নিম গাছের উপকারিতা- খ্রিষ্টপূর্ব আনুমানিক ৪০০ সালে বৈদিক যুগে নিম জীবাণু ধবংসকারী হিসেবে প্রয়োগ হতো। ক্ষয় রোগ, কৃমি প্রভৃতি রোগে নিমের উপকারিতার প্রমাণ পাওয়া যায়। দূষিত বায়ু বা অন্য কোনো কীটের উপদ্রব থেকে রক্ষা করতে এর ভূমিকা আছে।

নিম গাছের গুণাগুণ- নিমের ছাল অজীর্ণ রোগে ৪-৫ গ্রাম নিমের ছাল ১ কাপ গরম জলে রাতে ভিজিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে উপকার পাওয়া যায়। যেকোনো বয়সে স্বপ্নদোষে নিমের ছালের রস ২৫-৩০ ফোঁটা কাঁচা দইসহ সেবন করলে উপকার পাওয়া যায়। গায়ে চুলকানি বা শরীরে সর্বদা চুলকায় সে ক্ষেত্রে শুকনা নিমপাতা তেলে ভেজে ভাতের সাথে খেলে সপ্তাহ মধ্যে এ অসুবিধা থাকে না। গুঁড়ো কৃমি- ৫-৭টি নিমপাতার গুঁড়ো করে খেলে ফলদায়ক হয়। নিম ফুল- রাতকানা রোগে নিমের ফুল ভেজে খেলে এ অসুবিধা থাকে না। দীর্ঘদিনের ক্ষতে নিমের ছাল জ্বাল দিয়ে কাথ করে খেলে ক্ষতের আরোগ্য হয়।

বেশি বমি হলে ৫-৭ ফোঁটা নিম পাতার রস দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে বমিভাব থাকে না।
৩-৪টি নিমপাতা ও ১ গ্রাম কাঁচা হলুদ এক সাথে বেটে খালি পেটে খেলে প্রস্রাব ও সেই সাথে চুলকানি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। যে সমস্ত বহুমূত্র রোগীর গায়ের ঘা সারতে চায় না সে ক্ষেত্রে নিমের বাটা দেড় গ্রাম মাত্রায় দুধের সাথে খেলে উপকার পাওয়া যায়। এক গ্রাম নিমের ছাল, অর্ধ গ্রাম কাঁচা হলুদ ও একগ্রাম আমলকীর গুঁড়ো সকালে খালি পেটে সপ্তাহ খেলে যকৃতের ব্যথা উপশম হয়।
মোট কথা নিমগাছ যে বাড়ির আঙ্গিনায় থাকে রোগ বালাই কম থাকে বলে ধারণা করা হয়।


আরো সংবাদ



premium cement