রোহিঙ্গা নির্যাতন : মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৯ অক্টোবর ২০১৮, ১৪:৫৬
জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার বিষয়ক এক দূত বলেছেন, রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা তদন্তে মিয়ানমার ‘অসমর্থ ও অনিচ্ছুক’।
তিনি ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তাদের বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে করার জোর আহ্বান জানান। খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।
জাতিসঙ্ঘ তদন্ত দল মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংস অভিযানকালে সংঘটিত গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের জন্যে দেশটির শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় আনতে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছিল। ভয়াবহ ওই নির্যাতনের হাত থেকে প্রাণ বাঁচাতে রাখাইন রাজ্য থেকে ৭ লাখ ২০ হাজারেরও বেশি সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে যায়। খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।
তবে মিয়ানমার তাদের বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে। তারা উল্টো জাতিসংঘের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তোলে এবং সরকার অপরাধ তদন্তে নিজস্ব কমিটি গঠন করেছে বলে জানায়।
কিন্তু মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসঙ্ঘ বিশেষ দূত ইয়াগি লি বলেন, মিয়ানমার সরকার ওই সহিংসতার ঘটনা তদন্তে তাদের নিরপেক্ষ অবস্থানের খুব সামান্য প্রমাণই দিয়েছে। তিনি বলেন, তদন্তের জন্যে মিয়ানমার খুবই সীমিত ও অপর্যাপ্ত পদক্ষেপ নিয়েছে।
উল্লেখ্য, ডিসেম্বর মাস থেকে আন্তর্জাতিক সংস্থার এই প্রতিনিধিকে মিয়ানমারে ঢুকতে দিচ্ছে না সে দেশের সরকার।
সোমবার টুইটারের মাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে লি বলেন, ‘মিয়ানমার একটি গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ তদন্ত চালাতে অসমর্থ ও অনিচ্ছুক।’
মিয়ানমার তার নিজ দেশের অপরাধীদের বিচার করতে অস্বীকার করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের বিচারটি এখন আন্তর্জাতিক আদালতের ওপর নির্ভর করছে।
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘দেশটির ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়টি এখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ওপর নির্ভর করছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিচারকার্য শুরুতে বিলম্ব হলে আরো সহিংসতা চালানো হবে।’
তিনি তার প্রতিবেদনের উপসংহারে জাতিসঙ্ঘকে ‘অবিলম্বে মিয়ানমারের পরিস্থিতির পর্যবেক্ষণ ও বিচারের দায়িত্ব আন্তর্জাতিক আদালতকে’ দেয়ার সুপারিশ করেন।
আরো খবর
রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে প্রস্তুত নয় মিয়ানমার : রেড ক্রস
রয়টার্স
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি এখনো রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য প্রস্তুত নয় বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি (আইসিআরসি)। সম্প্রতি রাখাইন অঞ্চল পরিদর্শনকারী আইসিআরসির প্রেসিডেন্ট পিটার মাউরার রোববার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এমন পর্যবেণের কথা জানিয়েছেন। মাউরার বলেন, রাখাইন সফরে গিয়ে যা দেখেছেন, তাতে তিনি মনে করছেন না শিগগিরই প্রত্যাবাসন শুরু হবে। তবে এ ব্যাপারে মিয়ানমার সরকারের বক্তব্য জানা যায়নি।
গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। জাতিগত নিধন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা। মিয়ানমার শুরু থেকেই রোহিঙ্গাদের বাঙালি মুসলিম আখ্যা দিয়ে নাগরিকত্ব অস্বীকার করে আসছে। তবে এবারের ঘটনায় আন্তর্জাতিক চাপ জোরালো হওয়ার একপর্যায়ে প্রত্যাবাসন চুক্তিতে বাধ্য হয় মিয়ানমার। তবে সেই চুক্তির পর বেশ খানিকটা সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো ধোঁয়াশা কাটছে না। চুক্তির আওতায় এখনো একজন রোহিঙ্গাকেও ফিরিয়ে নেয়নি মিয়ানমার।
এর মধ্যেই গত ৬ জুন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রশ্নে মিয়ানমারের সাথে সমঝোতা চুক্তি স্বার করেছে জাতিসঙ্ঘ। তবে সেখানেও নাগরিকত্ব প্রশ্নটি অমীমাংসিত থাকায় এরই মধ্যে ওই চুক্তি নিয়েও হতাশা প্রকাশ করেছে রোহিঙ্গারা। মিয়ানমার সরকার দাবি করে আসছে, তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে প্রস্তুত। মিয়ানমার বলছে, প্রত্যাবাসনের জন্য দু’টি অভ্যর্থনা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে এবং প্রত্যাসিত রোহিঙ্গাদেরকে প্রথমে রাখার জন্য রাখাইন সীমান্তে একটি অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। তবে মিয়ানমারের এ প্রস্তুতি নিয়ে মোটেও সন্তুষ্ট নন আইসিআরসি প্রেসিডেন্ট।
আইসিআরসির প্রেসিডেন্ট পিটার মাউরার সম্প্রতি রাখাইন রাজ্য পরিদর্শন করেন। পরে গত রোববার তিনি বাংলাদেশে রোহিঙ্গাশিবির পরিদর্শন করেন। এ দিন তিনি বলেন, সম্প্রতি মিয়ানমার সফর করে যে পরিস্থিতি দেখে এসেছেন তাতে সেখানে রোহিঙ্গাদের এখনই ফেরত পাঠানো সম্ভব নয়। মাউরার বলেন, ‘আমি মনে করি, বড় আকারের প্রত্যাবাসনের পরিকল্পনাকে বাস্তবে পরিণত করতে এখনো অনেক কাজ বাকি। প্রত্যাবাসিত রোহিঙ্গাদের অভ্যর্থনা ও গ্রহণসংক্রান্ত অবকাঠামো নির্মাণ, প্রস্তুতি এবং পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদেরকে আবারো নিজেদের মধ্যে গ্রহণ করতে রাখাইনের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রস্তুতি...সব কাজই এখনো অসম্পূর্ণ।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা