২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দাম্পত্য কলহে জটিল রোগ!

দাম্পত্য কলহে জটিল রোগ! - ছবি : সংগৃহীত

স্বামী-স্ত্রী’র মধ্যে ছোটখাট ঝগড়াঝাটি হয় না এমন দম্পতি মেলা ভার। শোয়ার সময় কে মশারি টাঙাবে, টিভি দেখার সময় রিমোট কার হাতে থাকবে, কে কোন চ্যানেল দেখবে ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রী’র মধ্যে ছোটখাট তর্ক-বিতর্ক হয়েই থাকে। কিন্তু আধুনিক গবেষণা বলছে, স্বামী-স্ত্রী’র এমন সব দ্বন্দ্ব বা ঝগড়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

‘সাইকোনিউরোত্রন্ডোক্রোনোলজি’ জার্নালের সাম্প্রতিক সংখ্যায় বিজ্ঞানীদের এই সংক্রান্ত একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বিজ্ঞানীরা লিখেছেন, যেসব দম্পতি নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করেন তাদের ‘লিকি গাটস’ নামক সমস্যায় ভোগার সমস্যা বেশি থাকে। এটি এমন একটি সমস্যা যা রক্তে ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে দেয়। ফলে রোগ সৃষ্টিকারী প্রদাহ হতে পারে।
গবেষণা প্রবন্ধটির প্রধান লেখক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওহিও স্টেট ইউনিভার্সিটির ডক্টর জিনস কাইলোল্ট গ্লাসার বলেন, আমরা দেখেছি যে এই ধরনের দৈনন্দিন দাম্পত্য কলহ অন্তত কিছু মানুষের ক্ষেত্রে অন্ত্রে পরিবর্তন ঘটায় যা প্রদাহে রূপ নিতে পারে এবং পরবর্তীকালে অসুস্থতার কারণ হতে পারে।

গবেষক এই দলটি ৫০ জন সুস্থ-বিবাহিত দম্পতিদের সম্পর্কে উপর জরিপ করেন। তারপর দম্পতিদের নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে দৃঢ় মতানৈক্যের জন্য উদঘটিত দ্বন্দ্ব সমাধান করতে উৎসাহিত করা হয়। গবেষকরা দম্পতিদের একান্তে এই আলোচনার সুযোগ দেন। তাদের পারস্পরিক আলোচনা ২০ মিনিট ভিডিও রেকর্ড করা হয় এবং পরে দেখা হয় তারা কীভাবে তর্ক-বিতর্ক করছেন।

গবেষকরা দম্পতিদের মৌখিক এবং আচরণগত বা অ-মৌখিক বদানুবাদের আচরণবিন্যাস শ্রেণীভুক্ত করেন। এক্ষেত্রে দম্পতিদের প্রতিকূল আচরণ এবং কিছু বিষয় যেমন চোখের ভাষা, একে অন্যের সমালোচনা করা ইত্যদি গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা হয়। যে স্বামী অথবা স্ত্রী তাদের একান্ত আলোচনার সময় অধিক প্রতিকূল আচরণ করেছেন, তার মধ্যে সঙ্গীর থেকে বেশি লিকি গাটস এবং লিপোপলিস্যাকারাইড বাইন্ডিং প্রোটিন পাওয়া গেছে।

লিপোপলিস্যাকারাইড বাইন্ডিং প্রোটিন ব্যাকটেরিয়ার লিপোপলিস্যাকারাইডের সঙ্গে বন্ধন সৃষ্টি করে এবং তা সংক্রমণ সৃষ্টি করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের সঙ্গীর সঙ্গে প্রতিকূল সম্পর্ক রয়েছে এবং একই সঙ্গে বিষণ্ণতা অথবা মেজাজ সংক্রান্ত ব্যাধি আছে তাদের ক্ষেত্রে লিকি গাট ছিল সবচেয়ে বেশি। গবেষণায় সঙ্গীর সঙ্গে বিরূপ সম্পর্কের ক্ষেত্রে লিপোপলিস্যাকারাইড বাইন্ডিং প্রোটিন-এর একটি শক্তিশালী সংযোগ দেখা গেছে, যা রক্তে ব্যাকটিরিয়ার উপস্থিতি নির্দেশ করে। তাছাড়া এই প্রোটিনটির সঙ্গে প্রদাহেরও শক্তিশালী সংযোগ পাওয়া গেছে।

গবেষক কাইকোল্ট গ্লাসার বলেন, লাইফস্টাইল বা জীবনযাত্রায় পরিবর্তন করলে অন্ত্র সংক্রান্ত প্রদাহ কমতে পারে। যেমন খাদ্যে বেশি পরিমাণ চর্বিহীন প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি, ফল, শাকসব্জি এবং আস্ত শস্যদানা রাখতে হবে। প্রোবায়োটিক (স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী অণুজীব) সমূহ এক্ষেত্রে ফলপ্রসূ হতে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement