২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আসন্ন প্রসবা মায়েরা যেসব সমস্যায় পড়েন

আসন্ন প্রসবা মায়ের পরিচর্যা - ছবি : সংগৃহীত

একজন গর্ভবতী মা যখন আসন্ন প্রসবা হন, তখন তার পরিচর্যার গুরুত্ব অনেকখানি এবং বলতে গেলে প্রতিটি পরিবারেই কাউকে না কাউকে এমন দায়িত্ব নিতে হয়। তাই আসন্ন প্রসবা মায়ের পরিচর্যার একটি পরিপূর্ণ ধারণা থাকা আমাদের সবার একান্ত দরকার।

গর্ভকালীন পূর্ণ সময় হলো ২৮০ দিন বা ৪০ সপ্তাহ। এই সময়ে গর্ভবতী মায়ের পরিচর্যা করা বা যত্ন নেয়ার উদ্দেশ্যই হলো কোনো প্রকার অবাঞ্ছিত জটিলতা ছাড়া একটি সুস্থ শিশুর জন্মলাভ ও সুস্থ মাতৃত্ব লাভ। এ সময় একজন আসন্ন প্রসবা মা শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেকটা বিপর্যস্ত থাকেন। এ সময় তাকে যেমন একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে তেমনি তাকে আশ্বস্ত করতে হবে সফল ও জটিলতাহীন মাতৃত্ব লাভের আশু সম্ভাবনার। গর্ভাবস্থার শেষ দিকে একজন আসন্ন প্রসবা মাকে সপ্তাহে একবার একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত এবং কোনো প্রকার জটিলতা দেখা দিলে তাকে অবশ্যই নিকটস্থ মাতৃমঙ্গল কেন্দ্রে নিয়ে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা উচিত; যেমন-

ষ গর্ভাবস্থায় শেষ দিকে পা ফুলে যাওয়া,
ষ এই সময় পেটের উপরিভাগে অত্যন্ত ব্যথা হওয়া বা বমি বমি ভাব হওয়া,
ষ মাথা যন্ত্রণা হওয়া
ষ চোখে ঝাঁপসা দেখা
ষ যোনিপথে পানি বা রক্তক্ষরণ হওয়া ইত্যাদি।

এসব উপসর্গের সূচনাতেই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে এবং একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া একান্ত প্রয়োজন। গর্ভাবস্থার শেষ দিকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে সন্তান প্রসবের জন্য কোনো নিরাপদ ও স্বয়ংসম্পূর্ণ হাসপাতালের ব্যবস্থা নেয়ার কথা। আগে থেকে ঠিক সিদ্ধান্তের অভাবে প্রায়ই দেখা যায় প্রয়োজনের সময় দিশেহারা হয়ে হাতের কাছের গ্রাম্য দাই বা ধাত্রীর দ্বারা প্রসব করানোর প্রচেষ্টা নেয়া হয় এবং এর পরিণতিতে সম্পূর্ণ অস্বাস্থ্যকরভাবে প্রসব করানো হয়। প্রায় ক্ষেত্রেই প্রসূতি ও শিশু নানা জটিলতা ও অপূরণীয় ক্ষতির শিকার হয়। এমনকি ঠিক সময়ে প্রসব না করাতে পারলে প্রায় ক্ষেত্রেই শিশু মাতৃগর্ভে মারা যায়। অনেক সময় প্রসবজনিত জটিলতায় মায়ের জীবনেরও আশঙ্কা দেখা দেয়। তাই আমাদের প্রত্যেকেরই সাবধান হওয়া উচিত এ ব্যাপারে। আসন্ন প্রসবা মাকে কোনো অভিজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে অথবা কোনো আধুনিক হাসপাতালে রেখে তার প্রসবের ব্যবস্থা করা একান্ত প্রয়োজন। সব সময় মনে রাখতে হবে- আমরা এক সাথে দু’টি জীবনের দায়িত্বে নিয়োজিত একটি মা অপরটি তার গর্ভের শিশু। দু’টি জীবন এখানে একই সূত্রে গাঁথা- একটি ভালোমন্দে, অন্যটিও ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

একজন আসন্ন প্রসবা মায়ের শরীরে রক্তস্বল্পতা দেখা দিলে তা খুবই মারাত্মক- তাই তাকে পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে। নতুবা প্রসবকালীন জটিলতা ছাড়াও অপুষ্ট ও দুর্বল শিশুর জন্মের আশঙ্কা রয়েছে। অনেকেরই ভুল ধারণা আছে, গর্ভাবস্থায় ভালো বা পুষ্টিকর খাবার খেলে গর্ভস্থ শিশু অনেক বড় হবে এবং তাতে করে প্রসবকালে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হবে। এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। এ সময় আসন্ন প্রসবা মাকে পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে দু’টি কারণে- একটি হলো, সুস্থ শিশুর আমাদের সবারই কাম্য। দ্বিতীয়টি, প্রসবকালে প্রসবকারিণী মায়ের যে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের প্রয়োজন রুগ্ণ পুষ্টিহীন মা সে শক্তি প্রয়োগে অক্ষম এবং শিগগিরই সে প্রসবজনিত জটিলতার শিকারে পরিণত হয়। এমনকি ওই সময় পুষ্টিহীনতার জন্য তার মৃত্যুও হতে পারে।

তাই কুসংস্কার সম্পূর্ণরূপে বর্জন করে প্রতিটি আসন্ন প্রসবা মাকে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করুন এবং তার পুষ্টিকর খাবারের ব্যবস্থা করুন।

লেখক : সাবেক চেয়ারম্যান এবং প্রধান (গাইনি অ্যান্ড অবস), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।
ফোন : ০১৭১১৫২৯২২৬


আরো সংবাদ



premium cement
দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়ন করা হলে হামাস অস্ত্র ছাড়তে রাজি শনিবার থেকে শুরু গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা, প্রস্তত জবি ক্যাম্পাসগুলোতে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সমর্থন করেন বাইডেন: মুখপাত্র নোয়াখালীতে ইসতিসকার নামাজ আদায় জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব থাকবে বান্দরবানে বৃষ্টির চেয়ে চোখের পানি ফেলে বিশেষ নামাজ চকরিয়ায় যুবককে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা, গ্রেফতার ৭ উপজেলা নির্বাচনে ব্যর্থ হলে গণতন্ত্র ক্ষুণ্ন হবে: সিইসি বাগাতিপাড়ায় ইসতিসকার নামাজ পরিবর্তনশীল জলবায়ুর জন্য কাসাভা উপযুক্ত, হেক্টরপ্রতি ফলন ৩৫-৫০ টন : বাকৃবি অধ্যাপক বৃষ্টির জন্য হাকাকার, সাভারে ইসতিসকার নামাজ আদায়

সকল