১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জেনিটাল হার্পিস

জেনিটাল হার্পিস - ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশে বিভিন্ন যৌনব্যাধির প্রকোপ যেন বেড়ে চলেছে। ফলে আমাদের সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ রোগগুলোর বেশির ভাগই ছোঁয়াচে অর্থাৎ সহজে একজন থেকে অন্যের দেহে ছড়িয়ে যায়। ফলে এর প্রভাব আমাদের পারিবারিক জীবনেও পড়ে। এ রোগগুলোর অন্যতম জেনিটাল হারপিস। এটি ভাইরাসবাহিত একটি যৌনরোগ, যা পুরুষ ও মহিলার নাভীর নিচে যৌনাঙ্গকে আক্রমণ করে।
কারণ : ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে হারপিস সিমপ্লেক্স টাইপ-২ এবং ২০ শতাংশ ক্ষেত্রে হারপিস সিমপ্লেক্স টাইপ-১ এ রোগ হওয়ার একমাত্র কারণ।

লক্ষণ : বিশেষ লক্ষণগুলো হলো-
আক্রান্ত স্থানের ত্বক লাল হয়ে তার ওপর ব্যথাযুক্ত ফুসফুড়ি তৈরি হয়।
ষ কয়েক দিনের মধ্যে ফুসকুড়িগুলো ফেটে ঘা হয়ে যায়।
ষ ফুসকুড়িগুলো বারবার একই জায়গায় হয়।
ষ মহিলাদের মাসিকের রাস্তা হয়ে পানির মতো রস বের হয়।
ষ প্রস্রাবের সময় ব্যথা যা সাধারণত প্রথম আক্রমণ ২-৪ সপ্তাহ স্থায়ী হয় এবং পরবর্তী আক্রমণ ৭-৮ দিন স্থায়ী হয়। আক্রমণ স্থানের আশপাশের গ্রন্থিগুলো ব্যথাযুক্ত হয়ে ফুলে উঠতে পারে।

রোগ নির্ণয় পরীক্ষা
ষ রক্তের রুটিন পরীক্ষা
ষ রক্তের বিশেষ কয়েকটি পরীক্ষা, যেমন- রক্তের সুগার, ভিডিআরএল টেস্ট, টিপিএইচ এবং এইচবিএসএজি পরীক্ষা
ষ ইমিউনোলজিক্যাল পরীক্ষা
ষ ভাইরাস এন্টিবডি শনাক্তকরণ
ষ ভাইরাস স্পেসিফিক পরীক্ষা পাঞ্চ বায়োবসি
চিকিৎসা : তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-
জেনারেল : উত্তেজক ফ্যাক্টরগুলো শনাক্ত করে দূর করা, জ্বরজনিত সমস্যার চিকিৎসা করা, আক্রান্ত সময়ে যৌনমিলন এড়িয়ে চলা।

লোকাল : এন্টিসেপটিক এন্টিভাইরাল ক্রিম প্রয়োগ।
সিস্টেমিক : বিশেষ মাত্রায় এন্টিভাইরাল থেরাপি। তবে রোগটির আক্রমণ প্রতিরোধে দীর্ঘদিন স্বল্পমাত্রার এ ওষুধটি চালিয়ে যেতে হবে।
রোগটি যৌনবাহিত ও ছোঁয়াচে বলে আক্রান্ত হওয়ার পরপরই রোগীকে চলাফেরা ও দাম্পত্য মিলনে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। মনে রাখবেন চিকিৎসকের কাছে যেতে দ্বিধা ও সংকোচ রোগের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।

লেখক : ত্বক, যৌন ও এলার্জি বিশেষজ্ঞ, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
ফোন : ০১৭২৭-০৯০৪৯৯


আরো পড়ুন :
অ্যাজমা রোগে যোগ ব্যায়াম
ডা: রুমানা নুশরাত চৌধুরী

মেডিক্যাল সায়েন্স বলে, হাঁপানি সারে না। আমরা কেউই মেডিক্যাল সায়েন্সের ঊর্ধ্বে নই। সে জন্য সরাসরি না বলে একটু ঘুরিয়ে বলতে পারি, প্রত্যেক দিন যোগাসন করলে এক দিনও হাঁপানি আক্রমণ করতে পারবে না। তার মানে কিন্তু এই নয় যে, যার হাঁপানি নেই, যোগাসন করলে তাকে কোনো দিনই হাঁপানি আক্রমণ করবে না। যার হাঁপানি আছে নিয়মিত যোগ ব্যায়াম করলে তার হাঁপানি সেরে যাবে। হাঁপানি আসলেই কোনো রোগ নয়, এটি একটি উপসর্গ মাত্র। ভেতরের রোগটির জন্যই মানুষ হাঁপাতে থাকে। তবে সাধারণভাবে এ রোগকে সবাই হাঁপানি বলেই উল্লেখ করে থাকে।

বিভিন্ন কারণে এই রোগ হয়ে থাকে। সর্দি-কাশি থেকে ব্রঙ্কাল অ্যাজমা হতে পারে। ধুলাবালি থেকে হাঁপানি হতে পারে। বংশগত কারণে এই রোগ হতে পারে। এই রোগ আসলে নিঃশ্বাসের। ফুসফুস প্রয়োজন মতো বাতাস টানতে পারে না, প্রয়োজনীয় অক্সিজেন ফুসফুসে পৌঁছায় না। যোগ ব্যায়ামের মাধ্যমে আমরা যেটা করি সেটা হলো, ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করা। কতগুলো ব্যায়ামের সাহায্যে ফুসফুসকে সক্রিয় করে তোলা যায়।

তবে এসব ব্যায়াম এবং আসন রোগের অবস্থা বুঝে করতে হয়। যেমন- নিঃশ্বাসের কষ্ট দুই রকমের হতে পারে। কারো শ্বাস টানতে কষ্ট হয়, কারো শ্বাস ফেলতে কষ্ট হয়। কেউ দীর্ঘদিন ধরে এই রোগে ভোগেন, আবার কেউ অল্প দিন ধরে ভুগছেন।
হাঁপানি রোগীকে কী কী যোগ ব্যায়াম বা আসন করতে হবে। এগুলো খুবই সহজ ব্যায়াম। যে কেউ করতে পারবেন।

১. ডিপ ব্রিদিং উইথ চেস্ট এক্সপ্যানশন : সোজা হয়ে দাঁড়ান। হাত দু’টি সোজা করে সামনের দিকে তুলুন। হাতের পাতা দু’টি এক সাথে থাকে। এবার জোরে নিঃশ্বাস নিতে নিতে হাত দু’টি বুকের দু’পাশে ছড়িয়ে নিয়ে আসুন, একই সাথে গোড়ালি উঁচু করতে হবে। এবার নিঃশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে হাত দু’টি আগের অবস্থায় নিয়ে আসুন। ১০ বার করুন। একটু বিশ্রাম নিন। এভাবে তিনবার করুন, না পারলে পাঁচবার করে।
২. সিট আপ : চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন। দু’হাত মাথার পাশ দিয়ে সোজা করে রাখুন। এবার আস্তে আস্তে হাত সোজা রেখেই কোমর বাঁকিয়ে দু’হাতের আঙ্গুল দিয়ে দু’পায়ের পাতা স্পর্শ করুন। আবার হাত সোজা রেখেই আস্তে আস্তে চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন।

৩. লেগ ক্রসিং : পা সোজা করে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়–ন। এবার দু’টি পা-ই ৪৫ ডিগ্রি উঁচু করে তুলে ধরুন। এবার দু’টি পা-ই এক সাথে উপর-নিচ করে ক্রস করতে থাকুন। ২০ বার করে না পারলে ১০ বার করে করুন। মনে রাখতে হবে প্রত্যেকটি ব্রিদিং এক্সারসাইজের পর একটু বিশ্রাম নিতে হবে। সাধারণ ডিপ ব্রিদিং নেবেন। সবগুলো এক্সারসাইজের পর তিন থেকে পাঁচ মিনিট শবাসনে বিশ্রাম নেবেন। হাঁপানি আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে ব্রিদিং এক্সারসাইজ ছাড়াও আপনাকে কয়েকটি যোগাসন করতে হবে।

৪. উপবিষ্ট পবনমুক্তাসন : পা দু’টি সোজা করে ছড়িয়ে বসুন। এবার বাম পাটি মুড়ে বামদিকের বুকের সাথে বা হাঁটু দু’হাত দিয়ে জড়িয়ে চেপে ধরুন। ২০ বার গুনুন। এবার আস্তে আস্তে পা ছেড়ে দিয়ে সোজা করুন। একইভাবে ডান পা ডান বুকে চেপে ধরুন। ২০ বার গুনতে থাকুন। গোনা হয়ে গেলে দু’পা সোজা করুন। শবাসনে বিশ্রাম নিন।
৫. অর্ধ কুর্মাসন : বজ্রাসনে বসুন। হাত দু’টি জড়ো করে নিঃশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে মাথা মাটিতে ছোঁয়ান। পেট এবং বুক উরুর সাথে লেগে থাকবে। ২০ বার পর্যন্ত গুনুন। নিঃশ্বাস নিতে নিতে উঠে বসুন। তিনবার করুন। শবাসনে বিশ্রাম করুন।

৬. মৎস্যোসন : পদ্মাসনে বসে চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন। হাঁটু দু’টি মাটির সমান্তরালে থাকবে। গলা ও মুখ ওপরের দিকে তুলে ঘাড় যথাসম্ভব পেছনের দিতে বেঁকিয়ে দিতে হবে। ব্রমতালু মাটি স্পর্শ করবে। ঘাড় পেছন দিকে বেঁকিয়ে নেয়ার সময় পেট ও বুক ওপরের দিকে তুলে দিতে হবে। ডান হাত দিয়ে বাম পায়ের বুড়ো আঙুল ধরুন।
পদ্মাসনে বসতে কষ্ট হলেও বা না পারলে সুখাসনে বসেও এই আসন করতে পারেন। আবার পিঠের নিচে বালিশ দিয়ে এই আসনটি করতে পারেন। যাদের চেস্ট বা বুকের খাঁচার গঠনে ত্রুটি আছে তাদের জন্য এই আসন খুবই উপকারী।

 


আরো সংবাদ



premium cement