২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

চিনি-লবণ ও সাথে এক 'সাদা বিষ'

চিনি-লবণ ও সাথে এক 'সাদা বিষ' - ছবি : সংগৃহীত

স্বাস্থ্য নিয়ে যারা সচেতন, তারা দুটি ‘সাদা বিষ’ এড়িয়ে চলেন। এগুলো হল চিনি ও লবণ। চিনির বিষয়টা অনেকেরই ভালো করে জানা। অনেকে ভাবছেন লবণ আবার বিষ হলো কীভাবে? আসলে কাঁচা লবণ শরীরের জন্য বিষই। অতিরিক্ত লবণ ক্ষতিকর। কিন্তু এই দুটি বস্তু ছাড়াও নিজের অজান্তেই আরো একটি মারাত্মক সাদা বিষ প্রতিনিয়ত গ্রহণ করে চলেছি আমরা। তার নাম সোডিয়াম গ্লুটামেট বা মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট। এটি প্রক্রিয়াজাত খাবারের অন্যতম উপাদান। রেস্তরাঁ’র খাবারে এর ব্যবহার সম্পর্কে অনেকেরই কোনও ধারণা নেই। তবে প্রাকৃতিকভাবেই কিছু খাবারে সোডিয়াম গ্লুটামেট থাকে। সাধারণত এটি সাদা রঙের ক্রিস্টালাইন পাউডার আকারে থাকে। দেখতে অনেকটা চিনি বা লবণের মতোই। স্বাদ-গন্ধ বাড়ানোর একটি উপাদান এটি। স্বাদ বাড়াতে অনেকে এটি খাবারে ঢেলে দেন। কিন্তু ঘটনা অন্য খানে ঘটতে থাকে।

মানবদেহের স্নায়ুতন্ত্রের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে সক্ষম এটি। বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিমাণ যদি নগণ্য হয় তবে নিরাপদ হতে পারে এটি। কিন্তু সামান্যতেই দারুণ ক্ষতি ঘটে যেতে পারে। বিশেষ করে যাদের অ্যালার্জি আছে এবং এই উপাদানটিতে সংবেদনশীল, তাদের বিপদের শেষ নেই। বেশি খেলে তো কথাই নেই। বেশিরভাগ প্রক্রিয়াজাত খাবারে মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট থাকে। চিপস, প্যাকেটজাত স্যুপ, ক্যানের খাবারে এটা প্রচুর দেয়া হয়। এসব খাবার অস্বাস্থ্যকর হওয়ার কারণই হলো এই বস্তুটির উপস্থিতি।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, প্রাকৃতিক খাবার ও প্রক্রিয়াজাত খাবারে মেলা এই উপাদানটি একই। তবে প্রক্রিয়াজাত খাবারে এটি থাকে বেশি পরিমাণে। তাই সেগুলি খুব ক্ষতিকর। ক্যানে থাকে এমন সসেজ, চিপস, স্যুপ, হট ডগস, বিয়ার এবং আরো এ ধরনের অনেক খাবারে এটি থাকে। আর প্রকৃতিগতভাবে পনির, টোম্যাটো সস, ওয়ালনাট, ডাল, গম ইত্যাদিতেও থাকে মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট। এ কারণে ওই সব খাবার আরও বেশি খেতে মন চায়। অতিরিক্ত খাওয়ার নেশা চাপে। স্থূলতা এবং বিপাকক্রিয়ায় সমস্যা দেখা দেয়।

খাওয়ার পর মাদক যেমন মস্তিষ্কের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করে, একই আচরণ করে এই উপাদানটি। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, খাবারে সোডিয়াম গ্লুটামেট থাকার কারণে ডায়াবেটিসও দানা বাঁধে। অ্যাড্রিনাল স্ট্রোকের ঝুঁকি বয়ে আনে এই উপাদান। কাজেই এখন থেকে তৃতীয় এই সাদা বিষ থেকে সাবধান হতে শুরু করুন।

আরো পড়ুন :

প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া কেন হয়?
ডা: সোনিয়া মুখার্জি
 প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া সমস্যা কমবেশি অনেকেরই হয়ে থাকে। বিশেষ করে যারা কম পানি পান করেন তাদের এ সমস্যা বেশি। প্রস্রাবের সময় ব্যথা, জ্বালাপোড়া ও অস্বস্তি হয়। এটি কোনো রোগ নয়; রোগের উপসর্গ। এটি নারী ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই খুব প্রচলিত সমস্যা। তবে পুরুষের তুলনায় নারীর সমস্যা একটু বেশি হয়।

প্রস্রাবে সংক্রমণ কেন হয়?
জরায়ুমুখের প্রদাহ, যোনিপথে ছত্রাক সংক্রমণ বা ক্ল্যামাইডিয়ার মতো জীবাণু সংক্রমণের কারণে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হতে পারে। এ ছাড়া তলপেটে ব্যথা, মাসিক ব্যথা, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, সাবান বা কসমেটিকস বা প্যাডে অ্যালার্জিসহ বিভিন্ন কারণে প্রস্রাবে সংক্রমণ হতে পারে। বারবার সংক্রমণ হলে ডায়াবেটিস, কিডনি বা পাথর সমস্যা, মূত্রথলিতে কোনো সমস্যা আছে কি না দেখে নিন।


প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুয়ায়ী সঠিক মেয়াদে ও সঠিক মাত্রায় সঠিক অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করতে হবে। আর যাদের ঘন ঘন সংক্রমণ হয়, তারা দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা নিতে পারেন।
এসব বিষয়ে জানিয়েছেন এ্যাপোলো হাসপাতালের গাইনি কনসালট্যান্ট ডা: সোনিয়া মুখার্জি।

তিনি বলেন, প্রস্রাবের জ্বালাপোড়ার সঙ্গে বেশির ভাগ নারীই পরিচিত। বিশেষ করে মধ্য বয়সী ও বয়স্ক নারীদের প্রস্রাবে জ্বালাপোড়ার সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। প্রস্রাবে সংক্রমণ সন্দেহ হলে অবশ্যই পরীক্ষা করা ও ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত। যাদের ঘন ঘন সংক্রমণ হয়, তারা দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা নিতে পারেন।
ডা: সোনিয়া বলেন, মাসিকের সময়, অধিক সময় নেপকিন ব্যবহার, সঙ্গীর প্রস্রাবে সংক্রমণ, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াও বিভিন্ন কারণে নারীর প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া হতে পারে।

এক্ষেত্রে অবশ্যই সাবধান হতে হবে। সুস্থ থাকতে হলে অবশ্যই প্রচুর পানি পান করতে হবে।
আসুন জেনে নিই প্রস্রাবে সংক্রমণ থেকে বাঁচতে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে-
প্রচুর পানি পান করুন
প্রস্রাবে সংক্রমণ থেকে বাঁচতে হলে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। প্রস্রাবে সংক্রমণ থেকে বাঁচতে বিশুদ্ধ পানি পান করা জরুরি।

আমিষ নয়; প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি খাওয়া উচিত
মাসিক চলাকালীন আমিষ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এ সময় আমিষের বদলে প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি খেতে হবে।
ঘন ঘন সংক্রমণ
প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুয়ায়ী সঠিক মেয়াদে ও সঠিক মাত্রায় সঠিক অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করতে হবে। আর যাদের ঘন ঘন সংক্রমণ হয়, তারা দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা নিতে পারেন।

পানিপানের পরিমাণ বাড়ান
পানিপানের পরিমাণ বাড়ালে প্রস্রাবের সময় ব্যথা বা জ্বালাপোড়ার সমস্যা কম হবে। পানি শরীর থেকে দূষিত ব্যাকটেরিয়াগুলো বের করে দেবে। এটি প্রস্রাব ঠিকঠাকমতো হতে সাহায্য করবে। এ ছাড়া প্রস্রাবে জ্বালাপোড়ার সমস্যা হলে তরল খাবারের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে। যেমন ধরুন- স্যুপ, জুস এবং পাশাপাশি পানিজাতীয় ফল ও সবজি খেতে হবে।
গরম চাপ
গরম চাপও দিতে পারেন। এতে ব্লাডারের চাপ কমবে এবং ব্যথা কমবে। এ জন্য আপনি হিটিং প্যাড ব্যবহার করতে পারেন অথবা কোনো কাপড় তাপে গরম করে পেটে ব্যবহার করতে পারেন। একে তলপেটে ৫ মিনিট রাখুন। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। আবার দিন। এভাবে কয়েকবার করুন।

দই
দইয়ে রয়েছে স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া। এটি শরীরের পিএইচের ভারসাম্য রক্ষা করে। প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া কমাতে প্রতিদিন দুই থেকে তিন কাপ দই খান।
সঙ্গীর সঙ্গে মেলামেশা
সঙ্গীর সঙ্গে মেলামেশার আগে একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যে, আপনার সঙ্গীর প্রস্রাবে সংক্রমণ হয়েছে কিনা। যদি তা হয়ে থাকে, তবে অবশ্যই মেলামেশা থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ সঙ্গীর প্রস্রাবে সংক্রমণ হলে তা আপনারও হতে পারে।

 


আরো সংবাদ



premium cement