২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
আবাহনী ২:২ মাজিয়া

ড্র করে শংকায় আবাহনী

ড্র করে শংকায় আবাহনী - ছবি : নয়া দিগন্ত

৯০ মিনিটের ম্যাচ শেষে ফিলিপাইনের রেফারীর বাঁশী। খেলার স্কোর লাইন ২-২। মানে জয় পরাজয় হয়নি। এই রেজাল্টে মাজিয়া স্পোর্টস অ্যান্ড রিক্রিয়েশনের ফুটবলারদের যতোটা উল্লাস ঠিক এর বিবরীত অবস্থানে ঢাকা আবাহনীর খেলোয়াড়রা। হতাশায় মাথা নিচু আকাশী নীল জার্সীধারীদের। নেপথ্য একটাই। অ্যাওয়েতে যা করা দরকার সেই কাজই করেছে মালদ্বীপের ক্লাবটি।

এএফসি কাপের প্রিলিমিনারী রাউন্ড টু এর এই ড্র হওয়া ম্যাচে দুই গোল দিয়ে এগিয়ে গেল মাজিয়া। এখন ১২ ফেব্রুয়ারী মালেতে তারা গোলশূন্য বা ১-১ এ ড্র করতে পারলেই চলে যাবে প্লে-অফে।

অন্য দিকে ১৯ ও ২৬ ফেব্রুয়ারী প্লে-অফে খেলতে আবাহনীকে এখন মালদ্বীপের মাঠে নূন্যতম ৩-৩ গোলে ড্র করতে হবে। আর জিতলেতো কথাই নেই। বুধবার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ড্র এর ফলে এএফসি কাপে মালদ্বীপের ক্লাবের বিপক্ষে জয়ের দেখা এবারও পেল না বাংলাদেশেরে কোনো ক্লাব। কাল প্রিলিমিনারী রাউন্ড টু এর অপর খেলায় ভারতের ব্যাঙ্গালুরু এফসি থিম্পুর মাঠে ১-০তে হারিয়েছে পারো এফসিকে।

হোম ম্যাচ। প্রত্যেক দলেরই যাবতীয় পরিকল্পনা থাকে এই হোমে এগিয়ে থাকতে। ঢাকা আবাহনীর কোচের ভাবনাতেই ছিল নিজ মাঠে দারুন জয় তুলে নেয়া। তবে পারফরম্যান্স মোটেই কাংখিত মাত্রায় করতে পারেনি বাংলাদেশী ক্লাবটি। তাদের ফুটবলারদের খেলা দেখে মনেই হয়নি এই দলটি গতবছর এএফসি কাপে গ্রুপ সেরা হয়ে ইন্টার জোন প্লে-অফ সেমি ফাইনালে খেলেছিল। ভুল পাসে ভরা ছিল খেলা। বরং তাদের উপর ছড়ি ঘুরিয়ে ম্যাচে দুই দফা লিড নেয় মালদ্বীপের মাজিয়া। তেমন কোনো আহামরি টিম নয় মাজিয়া। তবে তাদের ক্যারিবিয়ান দ্বীপ রাষ্ট্র সেন্ট ভিনসেন্টের স্ট্রাইকার কর্নেলিউস ইজিকিয়েল বেশ ভয়ংকর। পায়ের কাজে দারুন দক্ষ এই ফরোয়ার্ডকে ঠেকাতইে পারছিল না আবাহনীর ডিফেন্স লাইন। এই সেন্ট ভিনসেন্ট অধিনায়কের গোলেই লিড মালদ্বীপের ক্লাবটির।

১৪ মিনিটে আবাহনীর দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে তার নেয়া শট গোলরক্ষক সোহেল সোজা গেলেও ৪২ মিনিটে আর ভুল নয়। আকাশী নীল শিবিরের নড়বড়ে রক্ষনভাগকে পুঁজি করে বারবার ঢুকে পড়ছিল মালদ্বীপের ফরোয়ার্ডরা। সেই ধারা ক্রমেই স্বাগতিকদের কয়েক ডিফেন্ডারকে পরাস্ত করে বক্সে ঢুকে পড়েন মাজিয়ার ইব্রাহিম। এরপর তার ক্রস আবাহনীর ডিফেন্স এবং গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে চলে আসে ফাঁকায় থাকা কর্লেনিউসের কাছে। গোললাইনের উপর থেকে তাতে টোকা মেরে বল জালে পাঠান এই ক্যানিবিয়ান ফুটবলার। যদিও রেফারী গোল দিয়েছেন ইব্রাহিমকে।

তবে এর আগে এগিয়ে যাওয়ার মতো সুযোগ পেয়েছিল আবাহনীই। ৩১ মিনিটে মামুনুলের কর্নারে সানডের হেড পোস্টে প্রতিহত হলে, ৩২ মিনিটে হাইতির বেলফোর্ড এবং ৩৯ মিনিটে ব্রাজিলিয়ান মাইলসনের ফ্রি-কিকের শট মাজিয়ার আফগান কিপার ওভায়েজ আজিজি প্রতিহত করলে গোল বঞ্চিত আবাহনী। অবশ্য পিছিয়ে পড়েও মারিও লেমসের দল দ্বিতীয়ার্ধ পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকেনি সমতা আনতে। তাদের ম্যাচে ফেরা প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমেই। লেফট ব্যাক পজিশনে খেলা রায়হানের ক্রস থেকে বল পেয়ে রিসিভ করেন মাইলসন। এরপর গায়ে গায়ে থাকা রক্ষনকর্মীকে বোকা বানিয়ে ঘুরেই মাইলসন বাম পায়ের যে ভলি নেন তা ভেঙ্গে দেয় বিপক্ষ কিপারের প্রতিরোধ।

প্রথম পয়তাল্লিশ মিনিটে খেলায় ফেরা আবাহনীর আরো উজ্জীবিত হয়ে খেলার কথা বিরতির পর। অথচ উল্টো ৬৩ মিনিটে আবার পিছিয়ে পড়া গতবছর এএফসি কাপে চেন্নাইয়ান এফসি, এপ্রিল ২৫, মানাং মার্সিয়ান্দি এবং মিনার্ভা পাঞ্জাবের বিপক্ষে জয় পাওয়া দলটি। ৪৬ মিনিটে কর্নেলিউসের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হলেও ৬৩ মিনিটে গোল করেন। নাইজ হাসানের শট সোহেল ফেরালে ফিরতি বলে গোল মাজিয়ার স্ট্রাইকারের। ৭৬ মিনিটে তার শট রায়হান বিপদ ঘটার আগেই ক্লিয়ার করেন। এর আগে৭৩ মিনিটে বেলফোর্ড ও সানডের দুটি শট ব্যর্থ। ৭৭ মিনিটে সোহেল রানার শট পোস্টে বাতাস দিয়ে গিয়ে হোম টিমের মাঠে আসা হাজার খানেক দর্শকদের হতাশা বাড়ালে থাকে। শেষ পর্যন্ত ৭৮ মিনিটে স্বস্তি। রায়হানের থ্রোতে বেলফোর্ড পা লাগাতে না পারলেও নাইজেরিয়ান সানডে তাতে শট নিয়ে আশায় রাখেন আবাহনীকে।

এই ড্রয়ের ফলে গতবছর থেকে হোমে না হারার রেকর্ড ধরে রাখলো বাংলাদেশী ক্লাবটি।
ঢাকা আবাহনী: সোহেল, রায়হান, মাইলসন, সাদ , নাসির, মামুনুল, সোহেল রানা, জীবন, সানডে, এডগার ( রুবেল ৭৬ মি.) বেলফোর্ড।


আরো সংবাদ



premium cement