১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পারিশ্রমিকের রেকর্ড কোচ মারুফুলের!

-

দলবদল শুরু হলে কোন ফুটবলারের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক সে আলোচনাই থাকে সবার মুখে মুখে। গত বছর বসুন্ধরা কিংসের ফুটবলার ইমন মাহমুদ বাবু ছিলেন দেশের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকধারী খেলোয়াড়। তিনি ৬৫ লাখ টাকা পেয়েছিলেন। এবারো তিনি ক্লাবটির সবচেয়ে বেশি টাকার ফুটবলার।

এমনটা গত পরশু সংবাদ সম্মেলনে জানান ক্লাবটির সভাপতি ইমরুল হাসান। যদিও জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া গত মৌসুমে সাইফ স্পোর্টিং থেকে ৭৭ লাখ টাকা পান বলে নিশ্চিত করেছেন ক্লাবটির এমডি ইঞ্জিনিয়ার নাসির উদ্দিন চৌধুরী। তার মতে, ‘জামালই ছিলেন গত সিজনের সবচেয়ে বেশি টাকা পাওয়া ফুটবলার।’

খোলায়াড়দের এই বিপুল অঙ্কের পারিশ্রমিক পাওয়ার বিপরীতে আড়ালেই থেকে যায় কোচদের পারিশ্রমিক প্রসঙ্গ। তারাও যে কোচ হিসেবে রেকর্ড গড়া টাকা পাচ্ছেন তা কমই আলোচনায় আসে। যেমন এবার সেই কাজই করে ফেলেছেন কোচ এ কে এম মারুফুল হক। এবার তিনি চট্টগ্রাম আবাহনীর কোচ। তাকে পেতে ক্লাবটিকে ৬৫ লাখ টাকা পারিশ্রমিক দিতে হয়েছে; ক্লাবটির বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য। আর দলের গোলরক্ষক কোচ পনির পাচ্ছেন ১২ লাখ টাকা।

বুধবার চলতি ফুটবল মৌসুমের কোচ হিসেবে চট্টগ্রাম আবাহনীর সাথে চুক্তি হয় মারুফের। এই হেড কোচের সাথে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ক্লাবটির এ বছরের চুক্তি। উল্লেখ্য, গত বছর মারুফ ৪০ লাখ টাকা পেয়েছিলেন আরামবাগ থেকে।

এই মৌসুমে আরামবাগ ক্রীড়া সঙ্ঘেই থাকার কথা ছিল মারুফের। সে মোতাবেক ফুটবলারদের নিয়ে দলও গুছিয়েছিলেন উয়েফা লাইসেন্সধারী এই কোচ; কিন্তু ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে ধরা পড়া ক্লাবটি আর তাকে রাখতে পারেনি। এমনকি প্রতিষ্ঠিত ফুটবলারদেরও ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় ক্লাবের দায়িত্বশীলরা। এই অবস্থায় ক্লাব না পাওয়ার শঙ্কা জাগে দেশের সেরা এই কোচের। শেষ পর্যন্ত চট্টগ্রাম আবাহনীতে ঠিকানা।

মারুফের চট্টগ্রাম আবাহনীর কোচ হওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখে এবারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপে দলের পারফরম্যান্স। আসরে তারা চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলেও দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখায় পুরো আসরে। দলকে ফাইনাল পর্যন্ত টেনে নেন তিনি। সেখানে মালয়েশিয়ান তেরাঙ্গানা এফসির কাছে হেরে রানার্সআপ। তখন থেকেই চট্টগ্রাম আবাহনীর সাথে এই মৌসুমের কোচ হতে কথা চলে মারুফের। এই কোচ অবশ্য তার জন্য প্রথম দিকে আরামবাগে যোগ দেয়া ফুটবলারদের গতি না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষায় ছিলেন।

এখন পর্যন্ত বিপিএল এ চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি বন্দরনগরীর ক্লাবটি। দুই বছর পর আবার চ্যাম্পিয়ন ফাইটিং দল গঠন তাদের। তাই এবার এই দলকে শিরোপা এনে দিতে চান মারুফ। গতকাল চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শেষে সংবাদ সম্মেলনে জানান তিনি। তার মতে, ‘আমার দলে যেসব স্থানীয় এবং বিদেশী ফুটবলার আছেন তাদের দিয়েই সিজনের সব ট্রফি জেতা সম্ভব। তবে এ জন্য ফুটবলার এবং কর্মকর্তা সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।’

তথ্য দেন, ‘এবার আমার দলে কোনো তারকা ফুটবলার নেই; কিন্তু যারা আছেন তাদের সাথে তারকাদের তফাত সাড়ে ঊনিশ আর বিশ। ফুটবলাররা শতভাগ দিলে এই গ্যাপ দূর করা সম্ভব।’ আরো জানান, শেখ কামাল কাপে আমরা সাইফ স্পোর্টিংয়ের পাঁচজনকে নিয়ে খেললেও এখন এদের বিকল্প যাদের নিয়েছি তারা শুধু জাতীয় দলে খেলেনি এই যা।

গত দুই বছর চট্টগ্রাম আবাহনী বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামকে হোম ভেনু বানালেও এবার তারা চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামকে হোম ভেনু বানাবে। জানান, ক্লাবটির মহাসচিব সামশুল হক চৌধুরী এমপি। আগামীতে ক্লাবটি এএফসি কাপে খেলার লাইসেন্সও পাওয়ার চেষ্টা করবে। এই আশ্বাস দেন ক্লাব কর্মকর্তা তরফদার রুহুল আমিন। আর ক্লাব সভাপতি এম এ লতিফের হতাশা বিপিএলে ঢাকার বাইরের মাত্র একটি দল থাকায়।

মিসর-ব্রাজিলের ফুটবলার আবাহনীতে
সর্বশেষ এএফসি কাপের ইন্টার জোন প্লে-অফ সেমিফাইনালে খেলা ঢাকা আবাহনী। গত সিজনে লিগ এবং স্বাধীনতা কাপে তারা চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলেও জয় করেছিল ফেডারেশন কাপ। এই অর্জনই তাদের এএফসি কাপে খেলার ছাড়পত্র এনে দেয়। সেই দলের স্থানীয়দের মধ্যে মাত্র দুইজন তপু বর্মণ এবং আতিকুর রহমান ফাহাদ চলে গেছেন বসুন্ধরা কিংসে। তাদের বিকল্প বসুন্ধরার নাসির চৌধুরী এবং শেখ রাসেলের সোহেল রানা। বিদেশীদের মধ্যে হাইতির বেলফোর্ড ও নাইজেরিয়ান সানডে থেকে যাচ্ছেন।

এদের সাথে যোগ হয়েছেন মিসরের ঈসা, ব্রাজিলের মাইলসনরা। এদের নিয়েই এবার আরো ভালো করতে চায় আকাশি নীল শিবির। গতকাল দলবদলের শেষ দিনে ফুটবলারদের রেজিস্ট্রেশন করাতে এসে এই তথ্য দেন ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রুপু। কোচ মারিও লেমসও একই সুরে কথা বললেন। তার মতে, সিজনে তিনটি টুর্নামেন্ট আছে। এসবগুলোতে শিরোপার জন্য লড়ব। সে সাথে এএফসি কাপে গতবারের পারফরম্যান্স ধরে রাখতে চাই।

রুপু তথ্য দিলেন, ‘আমরা গত বছর সিজন শুরু করেছিলাম পাঁচ ইনজুরড ফুটবলার নিয়ে। এবার সেই সমস্যা নেই। তাছাড়া সর্বশেষ মওসুমে আমার অনেক গোল দিলেও গোল হজম করেছি বেশি। এটা একটা সমস্যা। তখন ডিফেন্সে সমস্যা ছিল। এবার দল গঠনের সময় সেই দিকে নজর দেয়া হয়েছে।’ তার মতে, ‘এবারের দল আরো ভালো। প্রতিবারের মতো এবারো আমরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য লড়ব। দলটা সেভাবেই গড়া।’

দলবদল করাতে এসে মুক্তিযোদ্ধার কোচ আবদুল কাইয়ুম সেন্টু বলেন, ‘আমরা গতবারের মতো লড়াই করতে চাই। লক্ষ্য লড়াই করে পয়েন্ট টেবিলের ওপরের দিকে থাকা। গোপালগঞ্জে তিন সপ্তাহের ট্রেনিং করব। পাঁচ বিদেশীও খারাপ না।’ রহমতগঞ্জ এবার অন্তত একটি টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলতে চায়। সাথে লিগ টেবিলের ৫-৬ এ থাকা। জানান কোচ সৈয়দ গোলাম জিলানী।


আরো সংবাদ



premium cement