১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এবার শিরোপা পুনরুদ্ধারের মিশন

- ছবি : সংগৃহীত

বেশ ফুরফুরে মেজাজে বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়রা। চাপে নেই কোচ গোলাম রাব্বানী ছোটনও। তবে এই টেনশন মক্তির আড়ালে বিষয়টি এমন নয় যে সব পাওয়া হয়ে গেছে বাংলাদেশ দলের? তাদের প্রথম লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে। ফাইনালে খেলার টার্গেট ছিল। তা পূরণ হয়েছে লিগের দ্বিতীয় ম্যাচে নেপালকে হারানোর পর। ভারত ভয় পেয়েছে গত পরশু। নতুন সাত ফুটবলার নিয়েও তাদের সাথে ১-১ গোলে ড্র করা। তাই এখন শামসুন্নাহারদের লক্ষ্য শিরোপা পূনরুদ্ধার করা। যে শ্রেষ্টত্ব তারা হারিয়েছে গতবছর এই ভুটানের থিম্পুর চাংলিমিথান স্টেডিয়ামে। তা এই ভারতের কাছে ০-১ গোলে হেরেই। অনূর্ধ্ব-১৫ মহিলা সাফের এই চ্যাম্পিয়ন ট্রফি ফিরে পেতেই আজ সন্ধ্যা ছায়টায় ভারতের সামনে বাংলাদেশ দল। বাংলাদেশ কোচ গোলাম রাব্বানী ছোটন এবং অধিনায়ক শামসুন্নাহারের কন্ঠেও এই হারানো গৌবর ফিরে পাওয়ার প্রত্যয়। এই ফাইনাল সরাসরি সম্প্রচার করবে মাইকুজো ওয়েবসাইড।

 ২০১৮ সালে বাংলাদেশ ভুটানে এসেছিল তাদের ২০১৭ সালের সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলের শিরোপা ধরে রাখার জন্য। সাবলীল গতিতেই তাদের ফাইনালে আসা। সেমিফাইনাল পর্যন্ত দুই দলের পাফরম্যান্স বিচার  করে সবাই বলেছিল বাংলাদেশই চ্যাম্পিয়নশিপ ধরে রাখবে। কিন্তু গোল মিসের খেসারত দিয়ে তারা ফাইনালে হেরে বসে ভারতের কাছে। মারিয়া. মনিকা, তহুরাদের নিয়ে গড়া সেই দল অনেক গোছানো  ছিল। ম্যাচ খেলে তারা ছিল অভিজ্ঞ। কিন্তু এবারের দলটি নতুন। রুপনা, শামসুন্নাহাার, রিপা এবং রোজিনা ছাড়া বাকীরা অনভিজ্ঞ। তার উপর ভারতের এবারের দলে বেশী বয়স্ক ফুটবলারের উপস্থিতি। এদের গড় বয়স ১৮ তো হবেই। তা তাদের মুখ এবং শরীরের মাসল দেখেই স্পষ্ট। এই ‘বুড়ি’ দের বিপক্ষে ‘ পিচ্চি’ পিচ্চি’ মেয়েদের নিয়ে গড়া বাংলাদেশ দল। উচ্চতায় রেহেনা, নওশন, রিপা, স্বপ্নারা থাকেন তাদের গলার নীচে পড়ে। এটাই বাংলাদেশ দলের নেতিবাচক দিক আজকের ফাইনালে। এবার শিরোপা ধরে রাখতেই হবে এমন চাপও নেই অনভিজ্ঞ এই ফুটবলারদের।

তাই বলে ছেড়ে দেয়ার প্রশ্নই আসে না ভারতকে। বরং ফুটবরারদের মধ্যে গত ফাইনালে হারের বদলা নেয়ার মরিয়া প্রত্যয়। অধিনায়ক শামসুন্নাহারের মতে, ‘আমাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল ফাইনালে খেলা। তা পূরন হয়েছে। লিগের শেষ ম্যাচ ভারতের সাথে ড্র করেছি। এই সবই প্রতিকূলতাকে জয় করে। এখন আমরা ফাইনালে। এবার লক্ষ্য একটাই শিরোপা পুনরুদ্ধার। গতবার ভালো খেলেও এই ভারতের কাছে হেরে গিয়েছিলাম।’ কোচ ছোটনের বক্তব্য, ফাইনাল ম্যাচ সবার জন্যই উন্মুক্ত। আমরা শিরোপা নির্ধরনী এই ম্যাচে মাঠে নামবো ট্রফি ফের হাতে নেয়ার জন্য।’ যোগ করেন, আমাদের মেয়েরা গত ম্যাচে খুব ভালো ভাবে সামলিয়েছে ভারতকে। এই নতুন নতুন মেয়েরা তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেছে। বিশেষ করে ট্যাকটিক্যাল সাইডে। বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার আমিরুল ইসলাম বাবুর মতে, আজকের ফাইনাল ফিফটি ফিফটি ম্যাচ দুই দলের জন্যই। দুই দলই ভালো খেলেছে গত তিন ম্যাচ।

ছোটনের মতে, ‘ভারতীয় দল ¯্রফেই ফিজিক্যাল সাইডে আমাদের চেয়ে এগিয়ে আছে। তাদের ফুটবলাররা বয়স্ক। লম্বা চওড়া গড়নের। তবে আমাদের খেলোয়াড়রা ফিট। এটাই আমাদের বড় শক্তি।’ জানান , গত ম্যাচে আমরা তাদের কয়েক ফুটবলারকে প্ল্যান করেই খেলতে দেয়নি। আজও থাকবে সেই পরিকল্পনা। আমরা প্রেসিং ফুটবল খেলে তাদের কাবু করবো।

এই ম্যাচে চাপ বাড়বে বাংলাদেশ দলের রক্ষনভাগের উপর। তা নিয়ে অবশ্য কোনো চিন্তা নেই দুই স্টপার ব্যাক  আফেইদা খন্দকার প্রান্তি এবং  সুরমা জান্নাতের। প্রান্তির মতে, ডিফেন্স ঠিক মতো পজিশন নিয়ে খেলতে পারলে ভারত কোনো আতংকই সৃষ্টি করতে পারবেনা। আমরা শতভাগ দিয়ে ফাইট করবো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য।’ সুরমা জান্নাতের বক্তব্য, ‘ভারত লেফট সাইড দিয়ে আক্রমন করে। এই দিকে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আমরা তিন ম্যাচ ভালো খেলেছি। এখন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পালা।’

অনূর্ধ্ব-১৪ ও ১৫ বয়স ভিত্তক ফুটবলে ভারত ও বাংলাদেশের মোকাবেলা হয়েছে ছয় বার। এর দু’টি ড্র ১-১। বাকী চার ম্যাচের তিনটিতে জয় বাংলাদেশের। হার শুধু গত সাফের ফাইনালে। লাল সবুজদের জয় গুলো ৩-০, ৪-১, ৩-০ এবং ১-০তে। প্রথম দুই জয় তাজিকিস্তানের মাটিতে এএফসি রিজিওনাল ফুটবলে। পরের দুই জয় ২০১৭ সাফে ঢাকায়।


আরো সংবাদ



premium cement