১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এএফসি কাপে আবাহনীর ইতিহাস

ঢাক আবাহনী - ফাইল ছবি

সেই ২০০৪ সাল থেকে এএফসি কাপ খেলে আসছে বাংলাদেশী ক্লাবগুলো; কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা, ব্রাদার্স, মোহামেডান, শেখ রাসেল, শেখ জামাল বা গতবার পর্যন্ত ঢাকা আবাহনীর পক্ষেও সম্ভব হয়নি এই আসরের নক আউট পর্বে যেতে। এ বার সেই প্রতীক্ষার অবসান। তা এএফসির আসরে সবচেয়ে বেশী খেলা ঢাকা আবাহনীর কল্যাণেই।

নানা নাটক আর দুঃশ্চিন্তার পর আফগান ফুটবলার মাসি সাইঘানীর গোলে ইতিহাস গড়লো বাংলাদেশী ক্লাবটি। ৯৩ মিনিটে এই ডিফেন্ডারের গোলে প্রথম বাংলাদেশী ক্লাব হিসেবে এএফসি কাপে ইতিহাস গড়লো আবাহনী। ‘ই’ গ্রুপ থেকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে নক আউট পর্বে বা ইন্টার জোন প্লে-অফ সেমিফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করলো আকাশী নীল শিবির।

বুধবার ভারতের গৌহাটির ইন্দিরা গান্ধী স্টেডিয়ামে মিনার্ভা পাঞ্জাবকে ১-০ গোলে হারিয়ে তারা টিকিট কাটলো এএফসি কাপের পরের রাউন্ডের। ৬ খেলায় ১৩ পয়েন্ট আবাহনীর।

একইদিন শেষ ম্যাচে নেপালের মানাং মাসিংয়ান্দিকে ৩-২ গোলে হারিয়েও লাভ হলো না ভারতীয় ক্লাব চেন্নাইয়ান এফসির। ১১ পয়েন্ট নিয়ে রানার্সআপের সন্তুষ্টি তাদের। প্লে-অফ সেমিফাইনালের প্রতিপক্ষ এবং তারিখ এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

অনিশ্চয়তার পর আবাহনীর এই সাফল্য। আবাহনী যদি ড্র করতো মিনার্ভার সাথে তাহলে ঢাকায় আবাহনীর বিপক্ষে করা দুই অ্যাওয়ে গোলের সুবাদে নক আউট পর্বে চলে যেত চেন্নাইয়ান। বুধবার কাঠমান্ডুতে মানাং মার্সিয়ান্দির বিপক্ষে ৬৬ মিনিট পর্যন্ত ২-০ গোলে এগিয়ে ছিল ভারতীয় ক্লাবটি। আবাহনী তখন পর্যন্ত কোনো গোল করতে পারেনি আসামের মাঠে। ঠিক এরপরই ৭১ ও ৭৯ মিনিটে জোড়া গোল করে বসেন চট্টগ্রাম আবাহনীতে খেলে যাওয়া মানাংয়ের নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার আফিজ ওলাদিপো। অর্থাৎ ২-২ স্কোর লাইন মানাং এবং চেন্নাইয়ানের ম্যাচে। আবাহনী তখন কিছুট টেনশন মুক্ত। ওই অবস্থায় কাঠমান্ডুতে খেলা শেষ হলে এবং আবাহনী মিনার্ভার সাথে ড্র করলে আবাহনীই হবে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন; কিন্তু এরপর হতাশার খবর। ৮৮ মিনিটে মোহাম্মদ রাফি তার দ্বিতীয় গোল করে চেন্নাইয়ানকে ৩-২ গোল এগিয়ে নেয়।

এই অবস্থায় আবাহনীর জয় ছাড়া আর কোনো বিকল্প ছিল না। খেলা ৯০ মিনিট শেষে ইনজুরি টাইমের পাঁচ মিনিটের দ্বিতীয় মিনিট শেষ করেছে। তখনই মাসির শট ঠেকাতে গিয়ে কর্নার করেন মিনার্ভার ডিফেন্ডার। কে জানতো এই সেট পিসেই কপাল খুলবো আবাহনীর। স্ট্রাইকার নাবিব নেওয়াজ জীবনের নেয়া কর্নার কিক গোল পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তাতে হেড করে বল ছোট বক্সের উপরে ফেলেন হাইতির বেলফোর্ড। সেই বলে মাথা লাগিয়ে আবাহনীকে গ্রুপ সেরার মর্যাদা এনে দেন মাসি সাইঘানী। এই মাসি এবার একেবারে প্রথম ম্যাচে মানাংয়ের বিপক্ষেও জয়ের নায়ক ছিলেন। ঢাকায় চেন্নাইয়ানের বিপক্ষে ফ্রি-কিকে দূর্দান্ত গোল করেছিলেন। ঢাকায় ২-২ গোলে ড্র হয়েছিল আবাহনী এবং মিনার্ভার ম্যাচ।

তবে আবাহনী তাদের ডিফেন্ডারদের বেশ কয়েকবার গোল খাওয়ার কাছাকাছি চলে গিয়েছিল। ভাগ্যও তাদের সহায় ছিলো। ৭৯ মিনিটে মিনার্ভার একটি শট পোষ্টে প্রতিহত হয়। ৮৩ মিনিটের ত্রাতা গোলরক্ষক এবং অধিনায়ক সোহেল। ৮৬ মিনিটেও কোনো মতে রক্ষা। অবশ্য আবাহনী মাত্র দুই বিদেশী নিয়ে খেলেও জীবন ,জুয়েল রানা , সোহেল রানা এবং মামুনুলরা গোলের সুযোগ মিস করায় শেষ সময় পর্যন্ত থাকতে হয়েছে টেনশনে।


আরো সংবাদ



premium cement