১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বাংলাদেশের ভরসা ‘মেসি’, ‘নেইমার’, ‘রোনালদো’

- নয়া দিগন্ত

মূল স্ট্রাইকার সিরাত জাহান স্বপ্না নেই। দুই ম্যাচে জোড়া গোল করা কৃষ্ণা রানী সরকার সুস্থ্য হয়ে উঠলেও তাকে একাদশে খেলানো হচ্ছে না। ফলে শুক্রবার বঙ্গামাতা অনূর্ধ্ব-১৯ মহিলা ফুটবলের ফাইনালে লাওস বধে বাংলাদেশ দল তাকিয়ে তহুরা খাতুন, সানজিদা আক্তার, সাজেদা আক্তার এবং মারজিয়াদের দিকে।

এদের মধ্যে তহুরাকে ‘মেসি’, সাজেদাকে ‘নেইমার’ এবং সানজিদাকে ‘রোনালদো’ নামে ডাকা হয়। তবে এদের কাউকেই লাওসের পে’র সমপর্যায়ে ফেলার সুযোগ কম। তিন ম্যাচেই সেরা ফুটবলারের পুরস্কার জেতা পে এখন সর্ব্বোচ গোলদাতার দৌড়ে এককভাবে এগিয়ে। প্রথম দুই ম্যাচে জোড়া গোল করা পে সেমিফাইনালে করেছেন ৪ গোল। ৮ গোল দিয়ে তারই সেরা গোলদাতার পুরস্কার জেতার সম্ভবনা বেশী।

তাকে এবং লাওসকে টেক্কা দিয়ে শুক্রবার প্রথমবারের মতো এই আসরের চ্যাম্পিয়ন হতে এবং ফাইনাল সেরা হওয়ার জন্য লাল সবুজদের তহুরাদের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হবে। সেমিতে প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ হওয়া মনিকা চাকমা ত্রাতা হতে পারেন শুক্রবার।

তহুরা তার খেলার ধরণ এবং গোল করার স্টাইলের জন্য উপাধি পেয়েছেন ‘মেসি’ হিসেবে। তিন ম্যাচে এখনও গোল শূন্য সাজেদা। তাকে ডাকা হয় ‘নেইমার’ বলে। এবার কিরগিজস্তানের বিপক্ষে ৩০ সেকেন্ডে গোল করা সানজিদা পরিচিত ‘রোনালদো’ নামে।

তাদের এই বিশেষণ অবশ্য তাদের এলাকা ময়মনসিংহের কলসিন্দুরের। তাদের ফুটবলে হাতে খড়ি কলসিন্দুরে। সেখানে যখন বিভিন্ন স্থানে ফুটবল খেলতেন সে সময় তাদেরকে এলাকায় এই আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল এবং পর্তুগালের তারকা ফুটবলারের নামে ডাকা হতো। সানজিদা জানালেন, এখন আর এলাকায় খেলি না, তাই কেউ আর রোনালদো নামে এখন আর ডাকে না।

তহুরার মতোই স্ট্রাইকার পজিশনে খেলেন সাজেদা। এবার এই আসরে তিনি প্রথম দুই ম্যাচে খেলেছেন বদলী হিসেবে। সেমিতে প্রথম একাদশে তিনি খেললেও বিরতির পর আর তাকে মাঠে নামানো হয়নি। অবশ্য প্রতি ম্যাচেই গোল মিস করেন তিনি।

এসএসসি এবং টেস্ট পরীক্ষার জন্য এএফসি অনূর্ধ্ব-১৯ এবং এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলের দ্বিতীয় রাউন্ড মিস করা এই ফরোয়ার্ড অনুর্ধ্ব-১৫ সাফ- ২০১৮ তে তিনটি ও ২০১৭ সালে একটিসহ করেন মোট ৪টি গোল। গতি আর স্কিলে অপ্রতিরোধ্য তিনি।

রাইট উইংগার সানজিদা নিজে বলতে পারলেন না তার মোট গোল কয়টি। ২০১৪ সালের এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলের বাছাই পর্বে তার রয়েছে চারটি গোল। এর মধ্যে জর্ডানের বিপক্ষে জয়সূচক গোল করেন তিনি। অনূর্ধ্ব-১৮ সাফে তার একটি গোল ছিল ভূটানের বিপক্ষে সেমিতে।

তবে স্ট্রাইকার তহুরা তথ্য দিলেন, তার আন্তর্জাতিক গোল সংখ্যা ৩৮টি। বঙ্গমাতায় সেমিতে তিনি মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে বদলী হিসেবে নেমে করছিলেন একটি গোল। কিরগিজদের বিপক্ষেও নামেন বদলী হিসেবে। তবে প্রথম ম্যাচে আমিরাতের বিপক্ষে ছিলেন রিজার্ভ বেঞ্চে। এদের বাইরে মারজিয়া এবার সেমিতে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে একটি গোল করেছেন। অনূর্ধ্ব-১৮ সাফে তার হ্যাটট্রিক ছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে।

তবে বাংলাদেশ দলের স্ট্রাইকার স্বপ্না, কৃষ্ণা, মারজিয়ারা গোল মিস না করলে আজ এতোটা ফেবারিটের তালিকায় ফেলা যেত না লাওসকেও। স্রেফ লালসুবজ মেয়েরা গোল মিস করছে। আর লাওসের মেয়েরা দারুণ দারুণ সব গোল করে এখানে নিজেদের দক্ষতার পরিচয়ই দিয়েছেন।

লাওসের পে’র ৮ গোল ছাড়াও সাইসামনে করেছেন ৪ গোল। মূলত: ডিফেন্ডার হলেও গোল করেন দারুণ মুন্সিয়ানায়। হ্যাটট্রিক করেছেন সেমিতে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে। সেখানে বাংলাদেশ দলের সর্বোচ্চ দুই গোল কৃষ্ণা রানীর। একটি করে গোল তহুরা, সানজিদা, মনিকা, স্বপ্না এবং মারজিয়ার। বাংলাদেশ তিন ম্যাচে ৭ গোল দিয়ে হজম করেছে ১টি। অন্য দিকে লাওস তিন ম্যাচে করেছে ১৮ গোল। তাদের জালে একবারই বল ফেলতে পেরেছিল কিরগিজস্তান।

এক নজরে তিন ম্যাচে বাংলাদেশ এবং লাওস
বাংলাদেশ তিন ম্যাচে ৭ গোল
লাওস তিন ম্যাচে ১৮ গোল

বাংলাদেশ ২-০ সংযুক্ত আরব আমিরাত                                    লাওস ৫-০ মঙ্গোলিয়া
বাংলাদেশ ২-১ কিরগিজস্তান                                                  লাওস ৬-০ তাজিকিস্তান

সেমিফাইনাল

বাংলাদেশ ৩-০ মঙ্গোলিয়া                                                     লাওস ৭-১ কিরগিজস্তান

ব্যক্তিগত গোল
পে (লাওস) ৮টি
সাইসামনে (লাওস) ৪টি
কৃষ্ণা (বাংলাদেশ ) ২ গোল

দেখুন:

আরো সংবাদ



premium cement