১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আবাহনীর হ্যাটট্রিক শিরোপায় ৪ লালকার্ডের কলঙ্ক

আবাহনীর হ্যাটট্রিক শিরোপা - ছবি : নয়া দিগন্ত

বহুদিন পর বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ফুটবলের ফাইনাল দেখতে গ্যালারিতে প্রচুর দর্শকের উপস্থিতি। বসুন্ধরা কিংস ও ঢাকা আবাহনীর দর্শকে প্রায় পরিপূর্ণ গ্যালারি। আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে ভরা এই ম্যাচে গোল হয়েছে চারটি। এর মধ্যে আবাহনী তিন গোল দিয়ে ৩-১ ফাইনাল জয় করে নেয়। যা তাদের হ্যাটট্রিক ফেডারেশন কাপ জয়। সে সাথে সব মিলিয়ে ১১তম ফেডকাপ জয়।

তবে চিত্তকর্ষক এই ওয়ালটন ফেডারেশন কাপের ফাইনালের সৌন্দর্য্য নষ্ট করেছে মাঠে দুই দলের ফুটবলারদের মারামারি। রেফারি মিজানুর রহমান দুই দলের দুই জন করে চারজন খেলোয়াড়কে লালকার্ড দেখানোর ঘটনাও গত ২৫/৩০ বছরে আর ঘটেনি ঢাকার ফুটবলে। এর মধ্য দিয়েই শুক্রবার মওসুমের প্রথম শিরোপা জিতে নিয়েছে ঢাকা আবাহনী।

এর ফলে এবারের এএফসি কাপে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে দলটি। আর বিগ বাজেটের দল ও বিশ্বকাপের ফুটবলার সমৃদ্ধ বসুন্ধরা কিংস রানার্সাপ হয়ে এখন স্বাধীনতা কাপের জন্য প্রস্তুত হবে।

যে দুই ফুটবলার ছিলেন ফাইনালের স্পট লাইটে সেই সানডে ও কলিনড্রেস গোল করে মন ভরান দর্শকদের। তবে জোড়া গোল করে ম্যাচের নায়ক হয়ে গেলেন সানডে। আসরে মোট ৬ গোল দিয়ে তিনি হয়েছেন টুর্নামের্ন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা। তবে ৮৮ মিনিটে নাসিরের ফাউলের শিকার হয়ে মাঠ থেকে হাসপাতালে যাওয়ার এই নাইজেরিয়ানেরর পক্ষে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা সম্ভব হয়নি। ম্যাচে দুঃখজনক ঘটনার সূত্রপাত সেই ফাউল থেকেই। এই ফাউল নিয়ে দুই দলের ফুটবলাররা পরস্পরের প্রতি তেড়ে যান। রেফারি হলুদ কার্ড দেখিয়ে সতর্ক করেন নাসিরকে। এর রেশেই ৭ মিনিটের ইনজুরি টাইমে মারামারিতে লিপ্ত হন আবাহনী ও বসুন্ধরা কিংসের ফুটবলাররা। যা ম্যাচের সৌন্দর্যই শুধু কমিয়েছে।

মাঝ মাঠে বলের দখল নিতে গিয়ে হাতাহাতিতে লিপ্ত হন বসুন্ধরার ডিফেন্ডার সুশান্ত ত্রিপুরা ও আবাহনীর স্ট্রাইকার নাবিব নেওয়াজ জীবন। এক পর্যায়ে জীবন ঘুষি মারেন সুশান্তের মুখে। জবাবে সুশান্ত লাথি মারেন জীবনের পেটে। এই সময়ে আবাহনীর ডিফেন্ডার মামুন মিয়া ফ্লাইংকিক মারেন সুশান্তের পিঠে। বসুন্ধরার অধিনায়ক তৌহিদুল আলম সবুজ এসে আবার লাথি মারেন মামুন মিয়াকে। আবাহনীর ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রুপু মাঠে ঢুকে থাপ্পড় মারতে মারতে নিজ দলের মামুন মিয়াকে দূরে সরিয়ে নেন। সবুজ তখনও রাগ দমাতে পারছিলেন না। তিনি তেড়ে যেতে থাকেন মামুন মিয়ার দিকে। এরপর রেফারি বসুন্ধরার সবুজ ও সুশান্ত এবং আবাহনীর জীবন ও মামুন মিয়াকে লালকার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বহিষ্কার করেন। ম্যাচ শেষে আবাহনীর সমর্থকরা গায়ে হাত তোলেন বসুন্ধরা কিংসের বল বয়দের।

ম্যাচের এই দুঃখজনক ঘটনা বাদ দিলে বেশ উপভোগ্যই ছিল ফাইনালটি। ২১ মিনিটে বসুন্ধরা কিংস এগিয়ে যায় কোষ্টারিকার কলিনড্রেসের মাটি ঘেঁষা শটে। আলমগীর রানার ক্রস আবাহনীর কিপার সোহেল ঠিক মতো ফিস্ট করতে ব্যর্থ হলে বল গিয়ে পড়ে বক্সে থাকা কলিনড্রেসের পায়ে। এরপর তিনি এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বাম পায়ের শটে পরাস্ত করেন কিপারকে। এরপর আবাহনী প্রথমার্ধে ম্যাচে ফিরতে পারেনি বেলফোর্ডের হেড গোলরক্ষক জিকো ঠেকানোর ফলে।

বিরতির পর ৪৬ মিনিটে সানডের শট ক্রসবারে প্রতিহত হলেও ৫০ মিনিটে তিনি খেলায় ফেরান আবাহনীকে। রায়হানের লম্বা থ্রো ছিল উৎস। ৭৯ মিনিটে সোহেল রানা একক প্রচেষ্টায় বক্সে ঢুকে সানডেকে যে পাস দেন তা থেকে ডান পায়ের প্লেসিং শটে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন সানডে। ৮২ মিনিটে আবাহনীর শিরোপা নিশ্চিত হয়ে যায় ওয়ালীর কর্নারে হাইতির বেলফোর্ডের হেডে।

আসরের সেরা ফুটবলার হয়েছেন সানডে। ফাইনাল সেরা আবাহনীর মিডফিল্ডার সোহেল রানা। ফেয়ার প্লে ট্রফি পেয়েছে শেখ রাসেল। চ্যাম্পিয়ন আবাহনী ট্রফি ও ৫ লাখ এবং বসুন্ধরা কিংস ৩ লাখ টাকা পেয়েছে।

ঢাকা আবাহনী ৩: ১ বসুন্ধরা কিংস


আরো সংবাদ



premium cement