২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সেই শাওনকে খুঁজছেন সালাউদ্দিন

সেই শাওনকে খুঁজছেন সালাউদ্দিন। - সংগৃহীত

এবারের জুনিয়র অ্যাথলেটিক্স মিটে অনূর্ধ্ব-১৭ বিভাগে ১০০ ও ২০০ মিটার স্বর্ণ জয় করেন শাওন আহমেদ। অ্যাথলেটিক্সের পাশাপাশি এলাকায় ফুটবল খেলেন শাওন। পজিশন স্ট্রাইকার। কিন্তু যে কোনো সার্ভিসেস দলে চাকুরীর জন্য ফুটবল ছাড়তে চান কুস্টিয়ার এই উঠতি ফুটবলার। যদিও এলাকায় খ্যাপে ফুটবল খেলে লাখ লাখ টাকা আয় করেছেন তিনি। এরপরও স্থায়ী চাকুরীর জন্য অ্যাথলেট হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে ফুটবল ত্যাগ করতে রাজী তিনি। দৈনিক নয়া দিগন্তে এই নিয়ে নিউজ করা হয়। বিষয়টি নজরে এসেছে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের। তিনি শাওনকে ফুটবলারই বানাতে চান।

সালাউদ্দিন জানান, পত্রিকায় এই খেলোয়াড়টি সম্পর্কে জেনেছি। তাকে আমি খুঁজছি। তার যে গতি আছে এর সাথে ভালো কোচিং যোগ হলে মানসম্পন্ন ফুটবলার হতে পারবে সে। আমি এই খেলোয়াড়টিকে পেলে টেকনিক্যাল এবং স্ট্র্যাজিক্যিাল ডিরেক্টর পল স্মলির তত্ববধানে দিয়ে দেব। পলের অধীনে এক বছর কোচিং পেলে বদলে যাবে ছেলেটি।’

কুষ্টিয়ায় দ্বিতীয় বিভাগ লিগে খেলা শাওন ২০১৪ সালে ঢাকায় এসেছিলেন কাওরানবাজার প্রগতি সংঘের হয়ে ফুটবল খেলতে। কিন্তু বয়স কম হওয়ায় তাকে নেয়নি এই ক্লাব। তবে এখনও এলাকায় ফুটবল চর্চা করে যাচ্ছেন। সে সাথে অপেক্ষায় কোনো বাহিনীতে চাকুরী পাওয়ার। বাফুফে সভাপতির এই তালাশের খবর শুনে শাওন জানান, আমি রাজী বাফুফের অধীনে যেতে।

 

আরো দেখুন : তবুও ফুটবল ছাড়বেন শাওন
রফিকুল হায়দার ফরহাদ; ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৭:২৭

‘এই তুমি কি বিমান বাহিনীর চাকুরীর বিজ্ঞাপন দেখনি। এখন কি বিমান বাহিনীতে চাকুরী করবে।’ মাত্রই ২০০ মিটারে প্রথম হওয়া শাওন আহমেদের পিছু নিয়ে তা এই প্রস্তাব দিলেন বিমান বাহিনীর অ্যাথলেটিক্স কর্মকর্তা হাফিজ। শাওনের মুখ থেকে হ্যাঁ বা না কোনো প্রতিউত্তরই বের হল না। খুলনার হয়ে এবারের জাতীয় জুনিয়র অ্যাথলেটিক্সে অংশ নেয়া শাওন কোনো আশ্বাস চান না। তার দরকার যে কোনো বাহিনীতে একটি চাকরি।


এবারের জুনিয়র মিটে কিশোর বিভাগে ১০০ ও ২০০ মিটার প্রিন্টে প্রথম হয়ে কুষ্টিয়ার এই অ্যাথলেট তার চাকুরীর বায়োডাটাও চূড়ান্ত করে ফেলেছেন। এখন তার প্রয়োজন রুটি রুজির নিশ্চয়তা। যে আয় বড় আকারে সাহায্য করবে তার শ্রমিক বাবাকে সংসারের খরচ নির্বাহে। শাওন জানালেন, ‘আমার বাহিনীতে একটা চাকুরী দরকার। তা পরিবারের জন্য। অ্যাথলেট হিসেবে চাকুরী পেলে আমি ফুটবল ছেড়ে দেবো।’ যুক্তি, ‘ফুটবল খেলে চাকুরী মিলবে না। যতোটা সহজে অ্যাথলেট হলে চাকুরী পাওয়া যাবে।’

বাংলাদেশের ফুটবলে কোনো পরিচিত বা অখ্যাত কোনো ফুটবলার নন শাওন। এবারের অনূর্ধ্ব-১৭ বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে তিনি খেলেছেন কুষ্টিয়া সদর পরিষদের হয়ে। তার পজিশন স্ট্রাইকার। তিন ম্যাচে গোলও করেছেন চারটি। কোনো লিগে না খেললেও কুষ্টিয়া এবং এর আশে পাশের জেলায় প্রচুর খ্যাপ খেলেন তিনি। জুনিয়র অ্যাথলেটিক্সে অংশ নিতে ঢাকায় আসার এক সপ্তাহ আগেই বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ খেলেছেন। এই আসর থেকে তার পকেটে তেমন টাকা না আসলেও খ্যাপ তার পকেট ভারী করেছে। এই উঠতি ফরোয়ার্ড তথ্য দেন, গত কয়েক বছরে খ্যাপ খেলেই আমি তিন চার লাখ টাকা আয় করেছি। এই অর্থ বাবাকে দিয়েছি সংসারের খরচ চালানোর জন্য। এখন দরকার স্থায়ী রোজগারের জন্য বাহিনীতে চাকুরী। যা আমার বাবার স্বপ্ন।

ঢাকার ফুটবলে অভিষেকের চেষ্টা করেছেন তিনি। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপের দল কাওরানবাজার প্রগতি সংঘে ট্রায়াল দিয়েছিলেন। টিকতে পারেননি। শাওনের জবাব, তখন আমি বেশ ছোট ছিলাম। তাই বাদ পড়েছি ট্রায়ালে।

এলাকায় ফুটবল খেলে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ সাড়ে সাত হাজার টাকা পেয়েছিলেন। তা কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় খেলতে গিয়ে। তাকে বলা হলো অ্যাথলেটিক্সের চেয়ে ফুটবলে টাকা বেশী। তাহলে কেন ফুটবল ছেড়ে দেবে। শাওন কণ্ঠ থেকে ভেসে এল, ফুটবল খেলে একবার পা ভেঙ্গে ছিলাম। তা ছাড়া আমার এখনই চাকুরী দরকার।

ইতোমধ্যে প্রিন্টার হিসেবে সেনাবাহিনীতে ট্রায়াল দিয়েছেন এএসসি পাশ করে কলেজে ভর্তি হওয়া শাওন। জানালেন, ‘সেনাবাহিনীর ট্রায়ালে আমি ১০.৮০ সেকেন্ড দৌড়েছিলাম। আমি আশাবাদী সেনাবাহিনী আমাকে ডাকবে। আমি তাদের এস এম এস এর অপেক্ষায়।’

এবারই প্রথম জাতীয় জুনিয়র মিটে অংশ গ্রহণ শাওনের। এসেই বিকেএসপির অ্যাথলেটদের টপকে জয় করেছেন ১০০ ও ২০০ মিটারের স্বর্ণ। অনূর্ধ্ব-১৯ কিশোর বিভাগে বিকেএসপি ১০০ মিটারের স্বর্ণ হারালেও অনূর্ধ্ব-১৭ বালক ও বালিকা বিভাগে প্রথম হয়েছেন বিকেএসপির অ্যাথলেটরা। বালকদের ১০০ মিটারে প্রথম হওয়া মামুন আলী আগে ছিলেন বাটার ফ্লাই এবং ব্রেস্ট স্ট্রোকের সাঁতারু।

‘সাঁতারের চেয়ে অ্য্যাথলেটিক্সে ভালো করবো এই আত্মবিশ্বাসে আমি সাঁতার ছেড়েছি।’ জানান দেশের সাঁতারের অন্যকম চারণ ভূমি কুষ্টিয়ার আমলার এই ক্রীড়াবিদ। মানিকগঞ্জের মেয়ে সুমাইয়া দেওয়ান বালিকাদের ১০০ মিটারে বিকেএসপিকে স্বর্ণ এনে দেন। এছাড়া ২০০ এবং ৪০০ মিটারেও প্রথম হন তিনি। মামুনের মতো সুমাইয়ারও স্বপ্ন পরবর্তীতে সিনিয়র জাতীয় মিটে স্বর্ণ জিতে এসএ গেমসে পদক জয়।


আরো সংবাদ



premium cement