২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

পাকিস্তান বলেই বড় জয়ের স্বপ্ন বাংলাদেশের

শনিবার সকালের অনুশীলনে বাংলাদেশী ফুটবলার - নয়া দিগন্ত

বলাই যায় প্রথমবারের মতো শুরু হওয়া সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবলের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়েছে পাকিস্তানের। শুক্রবার নিজেদের প্রথম ম্যাচে তাদের গোল বন্যায় ভাসিয়েছে নেপাল। ১২ গোলে ওই ম্যাচ হারের পর তাদের আর ঘুরে দাঁড়াতে পারার কথা নয়। এই পাকিস্তানই রোববার বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ।

গ্রুপ ‘বি’ এর এই ম্যাচ জিতলেই সেমি ফাইনালে চলে যাবে বাংলাদেশ। সাথে নেপালও। পাকিস্তানীদের বিপক্ষে জয়েরই কথা লালসবুজ মেয়েদের। তবে রোববার তাদের মাথায় বড় জয়ের পরিকল্পনা। নেপালকে টপকে গ্রুপ সেরা হতে হলে রোববার ১২ গোলের বেশী দিতে হবে ছোটন বাহিনীকে। তা যে অসম্ভব নয় সে ইংগিত দিয়ে দিয়েছে নেপাল। ভুটানের চাংলিমিথান স্টেডিয়ামে রোববার সন্ধ্যা সাতটায় বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের এই ম্যাচ।

এমনিতেই মহিলা ফুটবলে তেমন ভালো ছিল না পাকিস্তান। এর সাথে ফিফার তিন বছরের নিষেধাজ্ঞা যোগ হওয়ায় আরো পিছিয়েছে তাদের নারী ফুটবলের মান। গত মাসেই এই ভুটানের মাটিতে অনূর্ধ্ব-১৫ মহিলা সাফে তারা গ্রুপের দুই ম্যাচের প্রত্যেকটিতে হেরেছিল। বাংলাদেশ তাদের উড়িয়ে দিয়েছিল ১৪-০ গোলে। এরপর নেপালের কাছে ৪ গোলের হার। সেই বাংলাদেশ দলের ১৩ ফুটবলার আছেন এবারের অনূর্ধ্ব-১৮ দলে। সাথে যোগ হয়েছেন গতবছর এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ আসরের চূড়ান্ত পর্বে খেলা ১০ খেলোয়াড়। এদের সমন্বয়ে আজ পাকিস্তানের বিপক্ষে বিশাল জয়ই পাওয়ার কথা মৌসুমীদের।

শুধু এই আসরের শিরোপা জয়ের আত্মবিশ্বাস যোগাতেই যে রোববার বড় জয় দরকার তা নয়। নেপালকে চাপে রাখতেও তথা জরুরী। পাকিস্তানের জালে ১২ বার বল পাঠিয়ে নেপালীরা বুঝিয়ে দিয়েছে তারা ২ অক্টোবর গোলাম রাব্বানী ছোটন বাহিনীর জন্য বড় বাধা হতে পারে। অনূর্ধ্ব -১৫ ফুটবলে তারা বাংলাদেশের কাছে ৩ গোলে হারলেও প্রথমার্ধে সমান তালেই লড়ছিল। বাংলাদেশ যদি রোববার ১২ গোলের চেয়ে বড় ব্যবধানে জিততে পারে তাহলে ২ তারিখে নেপালের সাথে তাদের ড্র দরকার হবে সেমিতে দুর্বল প্রতিপক্ষকে পেতে। যে দৌড়ে আছে ভুটান ও মালদ্বীপ।

অনূর্ধ্ব-১৮ বাংলাদেশ দল সম্মিলিতভাবে কোনো প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেনি। এটা তাদের বড় সমস্যা। রোববার পাকিস্তানের বিপেক্ষ তাদের ম্যাচটি এক অর্থে দল গোছানোর পর্বও। ঢাকা ত্যাগের আগে এমন ইংগিতই দিয়েছিলেন কোচ ছোটন। এই দলের সিনিয়র দশ ফুটবলার এক বছরেরও বেশী সময় ধরে আর্ন্তজাতিক ম্যাচের বাইরে। ফলে কৃষ্ণা, স্বপ্না, মৌসুমী. মারজিয়াদেরও আজ নিজেদের পরখ করে দেখার সুযোগ।

অনূর্ধ্ব -১৫র দলের ইনফর্ম স্ট্রাইকার তহুরা, আনুচিং দের সাথে স্বপ্না, কৃষ্ণাদের অর্ন্তভূক্তি ফরোয়ার্ড লাইনকে আরো শক্তিশালী করবে। বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় ফরোয়ার্ড স্বপ্নার আজ ফের নিজেকে প্রমানের সুযোগ।

আরো পড়ুন : তবুও ফুটবল ছাড়বেন শাওন
রফিকুল হায়দার ফরহাদ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২০:১৯

‘এই তুমি কি বিমান বাহিনীর চাকুরীর বিজ্ঞাপন দেখনি। এখন কি বিমান বাহিনীতে চাকুরী করবে।’ মাত্রই ২০০ মিটারে প্রথম হওয়া শাওন আহমেদের পিছু নিয়ে তা এই প্রস্তাব দিলেন বিমান বাহিনীর অ্যাথলেটিক্স কর্মকর্তা হাফিজ। শাওনের মুখ থেকে হ্যাঁ বা না কোনো প্রতিউত্তরই বের হলনা। খুলনার হয়ে এবারের জাতীয় জুনিয়র অ্যাথলেটিক্সে অংশ নেয়া শাওন কোনো আশ্বাস চান না। তার দরকার যে কোনো বাহিনীতে একটি চাকুৃরী।

এবারের জুনিয়র মিটে কিশোর বিভাগে ১০০ ও ২০০ মিটার প্রিন্টে প্রথম হয়ে কুষ্টিয়ার এই অ্যাথলেট তার চাকুরীর বায়োডাটাও চূড়ান্ত করে ফেলেছেন। এখন তার প্রয়োজন রুটি রুজির নিশ্চয়তা। যে আয় বড় আকারে সাহায্য করবে তার শ্রমিক বাবাকে সংসারের খরচ নির্বাহে। শাওন জানালেন, ‘আমার বাহিনীতে একটা চাকুরী দরকার। তা পরিবারের জন্য। অ্যাথলেট হিসেবে চাকুরী পেলে আমি ফুটবল ছেড়ে দেবো।’ যুক্তি, ‘ফুটবল খেলে চাকুরী মিলবে না। যতোটা সহজে অ্যাথলেট হলে চাকুরী পাওয়া যাবে।’


বাংলাদেশের ফুটবলে কোনো পরিচিত বা অখ্যাত কোনো ফুটবলার নন শাওন। এবারের অনূর্ধ্ব-১৭ বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে তিনি খেলেছেন কুষ্টিয়া সদর পরিষদের হয়ে। তার পজিশন স্ট্রাইকার। তিন ম্যাচে গোলও করেছেন চারটি। কোনো লিগে না খেললেও কুষ্টিয়া এবং এর আশে পাশের জেলায় প্রচুর খ্যাপ খেলেন তিনি। জুনিয়র অ্যাথলেটিক্সে অংশ নিতে ঢাকায় আসার এক সপ্তাহ আগেই বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ খেলেছেন। এই আসর থেকে তার পকেটে তেমন টাকা না আসলেও খ্যাপ তার পকেট ভারী করেছে। এই উঠতি ফরোয়ার্ড তথ্য দেন, গত কয়েক বছরে খ্যাপ খেলেই আমি তিন চার লাখ টাকা আয় করেছি। এই অর্থ বাবাকে দিয়েছি সংসারের খরচ চালানোর জন্য। এখন দরকার স্থায়ী রোজগারের জন্য বাহিনীতে চাকুরী। যা আমার বাবার স্বপ্ন।

ঢাকার ফুটবলে অভিষেকের চেষ্টা করেছেন তিনি। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপের দল কাওরানবাজার প্রগতি সংঘে ট্রায়াল দিয়েছিলেন। টিকতে পারেননি। শাওনের জবাব, তখন আমি বেশ ছোট ছিলাম। তাই বাদ পড়েছি ট্রায়ালে।

এলাকায় ফুটবল খেলে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ সাড়ে সাত হাজার টাকা পেয়েছিলেন। তা কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় খেলতে গিয়ে। তাকে বলা হলো অ্যাথলেটিক্সের চেয়ে ফুটবলে টাকা বেশী। তাহলে কেন ফুটবল ছেড়ে দেবে। শাওন কণ্ঠ থেকে ভেসে এল, ফুটবল খেলে একবার পা ভেঙ্গে ছিলাম। তা ছাড়া আমার এখনই চাকুরী দরকার।

ইতোমধ্যে প্রিন্টার হিসেবে সেনাবাহিনীতে ট্রায়াল দিয়েছেন এএসসি পাশ করে কলেজে ভর্তি হওয়া শাওন। জানালেন, ‘সেনাবাহিনীর ট্রায়ালে আমি ১০.৮০ সেকেন্ড দৌড়েছিলাম। আমি আশাবাদী সেনাবাহিনী আমাকে ডাকবে। আমি তাদের এস এম এস এর অপেক্ষায়।’

এবারই প্রথম জাতীয় জুনিয়র মিটে অংশ গ্রহণ শাওনের। এসেই বিকেএসপির অ্যাথলেটদের টপকে জয় করেছেন ১০০ ও ২০০ মিটারের স্বর্ণ। অনূর্ধ্ব-১৯ কিশোর বিভাগে বিকেএসপি ১০০ মিটারের স্বর্ণ হারালেও অনূর্ধ্ব-১৭ বালক ও বালিকা বিভাগে প্রথম হয়েছেন বিকেএসপির অ্যাথলেটরা। বালকদের ১০০ মিটারে প্রথম হওয়া মামুন আলী আগে ছিলেন বাটার ফ্লাই এবং ব্রেস্ট স্ট্রোকের সাঁতারু।

‘সাঁতারের চেয়ে অ্য্যাথলেটিক্সে ভালো করবো এই আত্মবিশ্বাসে আমি সাঁতার ছেড়েছি।’ জানান দেশের সাঁতারের অন্যকম চারণ ভূমি কুষ্টিয়ার আমলার এই ক্রীড়াবিদ। মানিকগঞ্জের মেয়ে সুমাইয়া দেওয়ান বালিকাদের ১০০ মিটারে বিকেএসপিকে স্বর্ণ এনে দেন। এছাড়া ২০০ এবং ৪০০ মিটারেও প্রথম হন তিনি। মামুনের মতো সুমাইয়ারও স্বপ্ন পরবর্তীতে সিনিয়র জাতীয় মিটে স্বর্ণ জিতে এসএ গেমসে পদক জয়।


আরো সংবাদ



premium cement