২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই দ্বিতীয় রাউন্ডে বাংলাদেশ

গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই দ্বিতীয় রাউন্ডে বাংলাদেশ । ছবি - নয়া দিগন্ত।

টিম বাসের সামনে উৎসুক ফুটবল প্রেমীদের ভীড়। এদের ঠেলে সামনে এগুতে পারছিলেন না কোচ ছোটন ও দুই ফুটবলার আঁখি খাতুন এবং তহুরা খাতুন। ‘বাংলাদেশ’,‘বাংলাদেশ’ স্লোগান আর মুর্হুমুহু করতালিতে তখন মুখরিত কমলাপুর স্টেডিয়ামের গেট। শেষ পর্যন্ত পুলিশের হস্তক্ষেপে তারা বাসে চড়লেন। বিকেলে ম্যাচ শেষে এভাবেই বাংলাদেশ দলকে অভিনন্দনে সিক্ত করছিলেন ফুটবল প্রেমীরা।

একটু আগেই যারা নিশ্চিত করেছে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ মহিলা ফুটবলের দ্বিতীয় রাউন্ড। তা কারো দয়ায় নয়। মানে সেরা দুই রানার্সআপের একটি হয়ে নয়। সরাসরি গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই। ভিয়েতনামকে ২-০তে হারিয়ে মারিয়া- আঁখিরা এখন ‘এফ’ গ্রুপের সেরা। নিশ্চত করেছে ২৩ ফেব্রুয়ারী থেকে ৩ মার্চ থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ আসরের দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলা। ভিয়েতনামের বিপক্ষে এই দুই গোল এসেছে তহুরা এবং আঁখির কল্যানে। অন্য দিকে হেরেও বেস্ট রানার্সআপ হিসেবে পরের রাউন্ডে ভিয়েতনাম। বাংলাদেশের পয়েন্ট ১২। ভিয়েতনামের ৯। দ্বিতীয় রাউন্ডের বাকী ছয় দল হলো: অস্ট্রেলিয়া, চীন, লাওস, ইরান, মিয়ানমার ও ফিলিপাইন। ফিলিপাইনও এসেছে বেস্ট রানার্সআপ হয়ে। 

ফিফা র‌্যাংকিংয়ে ভিয়েতনাম মহিলা দলের র‌্যাংকিং ৩৭। সেখানে বাংলাদেশ ১১২। তবে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ আসরে বাংলাদেশের অবস্থান তাদের উপরে। ‘এফ’ গ্রুপের বাছাইপর্বে বাংলাদেশের কঠিন প্রতিপক্ষ ছিল তারাই। তবে অন্য দলের কোচরা আগেই পাশ মার্ক দিয়ে রেখেছিলেন মারিয়াদের। তবে ভয় ছিল ‘জিততেই হবে’ এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে না খেই হারিয়ে ফেলে লালসবুজরা। যা এই তো সে দিন ভুটানের মাটিতে সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ ফুটবলের ফাইনালে হয়েছিল ভারতের বিপক্ষে। অবশ্য আর সেই ভুলে পা দেয়নি বাংলাদেশ দল। শুরু থেকে চড়াও হয়ে খেলা। এবং একচেটিয়া খেলেই টানা চার জয় তুলে নিয়ে ২০১৬ এর মতো গ্রুপ সেরা হওয়া।

তবে আগের তিন ম্যাচের মতো অতো গোলের সুযোগ পাওয়া যায়নি। যদিও অফসাইডে বাতিল হয়েছে বাংলাদেশের তিনটি গোল। ৩৭ মিনিটে ছোট শামসুন্নাহারের গোল অস্ট্রেলিয়ান রেফারী ক্যাথেরিনা জ্যাকিউইচ তার স্বদেশী সহকারী রেফারী রেনে কগহিলের সাথে শলাপরামর্শ করে বাতিল করায় তখন লিড পায়নি ছোটন বাহিনী। সহকারী রেফারী প্রথমে অফসাইড না দিলেও পরে রেফারীর সাথে কথা বলে মত বদলান। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে তহুরার গোলের সময় এই দুই রেফারির ফের বাক্য বিনিময়। এবার অবশ্য আর হতাশা নয়। পুরো বাংলাদেশ শিবিরে উল্লাস। আনাই মগিনির ক্রস বিপক্ষ গোলরক্ষকের হাত ফসকে বের হলে তাতে শট নেন ছোট শামসুন্নাহার। বল গোল লাইন অতিক্রম করার সময় তহুরা হেড করে তা জালে পাঠান। এটি তহুরার ৩৩তম আন্তর্জাতিক গোল।

এই ম্যাচে যে দল জিতবে তারাই যাবে পরের রাউন্ডে। ড্র করলেও সুযোগ থাকবে। এই মিশনে প্রথম থেকেই ডিফেন্সিভ খেলতে থাকে ভিয়েতনাম। বাংলাদেশও তাদের পাত্তা দিচ্ছিল না। তবে লালবুজরা দুটির বেশী গোল পায়নি বিপক্ষ গোলরক্ষক দুয়া থি’র দৃঢ়তায়। ৫৩ মিনিটে ছোট শামসুন্নাহারের শট ঠেকান তিনি। ৫৬ মিনিটে রিতু পূর্নার শট কর্নার করার ক্ষেত্রে বাধা এই কিপার। শেষ পর্যন্ত ৬৩ মিনিটে ডিফেন্ডার আঁখি খাতুনের গোলে টেনশন মুক্তি বাংলাদেশের। অধিনায়ক মারিয়া মান্ডার কর্নারে হেড করেন ছোট শামসুন্নাহার। তা পোস্টে প্রতিহত হলে আঁখির ডান পায়ের শটে বাধা ভিয়েতনামের শেষ প্রহরী। ফিরতি বলে আঁখির বাম পায়ের শট জালে। ৫৯ ও ৮৫ মিনিটে তহুরার দুটি গোল বাতিল হয় অফসাইডের কারনে।

কাল অন্য ম্যাচে বাহরাইনকে ১-০গোলে হারিয়ে পাঁচ দলের মধ্যে চতুর্থ হয়েছে সংযুক্ত আবর আমিরাত। আর বাহরাইন হয়েছে পঞ্চম।


আরো সংবাদ



premium cement