১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পাকিস্তান বলেই সমীহ করছে বাংলাদেশ

-

আপাতত স্বস্তি বাংলাদেশ শিবিরে। ভুটান আতংক দূর হয়েছে। যে কাঙ্খিত জয়ে টুর্নামেন্ট শুরু জরুরী ছিল তাও সম্পন্ন। একই সাথে গোল পার্থক্যে এখন পর্যন্ত ‘এ’ গ্রুপ শীর্ষে লাল-সবুজরা। দেশের ফুটবল পাগল দর্শকদের স্টেডিয়ামে টেনে আনার প্রাথমিক কাজ করে ফেলেছেন জামাল, সুফিল, তপু বর্মনরা। অবশ্য ভুটানের বিপক্ষে গতকালের পাওয়া জয়ই এবারের সাফে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট নয় বাংলাদেশের জন্য। শেষ চারে যাওয়ার রাস্তায় পা রেখেছে তারা। এই যা। সে সাথে পরের দুই ম্যাচে আরো ভালো করার আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। ৯ বছর পর ফের সাফের সেমিতে যেতে জয়ের দেখা পেতে হবে পাকিস্তানের বিপক্ষে।

কিন্তু প্রতিপক্ষ পাকিস্তান বলেই যত টেনশন। তারাও প্রথম ম্যাচে নেপালকে হারিয়ে এখন হাওয়ায় ভাসছে। বাংলাদেশের মতোই তাদের পয়েন্ট এক খেলা শেষে তিন। তবে পাকিস্তানীদের একটু সমীহ করার কারণ তাদের শক্তি। তিন ডেনমার্ক প্রবাসী এবং ইংল্যান্ডে খেলা ফুটবলার নিয়ে গড়া দলটিই জেমি ডে বাহিনীর জন্য আতঙ্কের নাম। অবশ্য এই দুই দলের পারস্পরিক ম্যাচে যে দল জিতবে তাদের নক আউট পর্বে যাওয়া এক প্রকার নিশ্চিত। আগামীকাল সন্ধ্যা সাতটায় বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে এই দুই দেশের ফুটবল যুদ্ধ। বিকেল চারটায় ‘এ’ গ্রুপের অন্য ম্যাচে মুখোমুখি নেপাল ও ভুটান। প্রথম ম্যাচে হেরে দুই দলেরই এখন ঘুরে দাঁড়ানোর মরিয়া চেষ্টা।

সাফে এখনও শিরোপার স্বাদ পায়নি পাকিস্তান। তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে তাদের জয় আছে এই আসরে। ২০১৩ সালে ক্রুয়েফ- মামুনুল বাহিনীর স্বপ্ন ভঙ্গের কাহিনী এই পাকিস্তানীদের কাছে হেরেই। গ্রুপের শেষ খেলায় এমিলির গোলে লিড নিয়েও শেষ পর্যন্ত ১-২ গোল হার। এর আগে ১৯৯৫ সালের কলম্বোতে অনুষ্ঠিত সার্ক ফুটবলে ১-০তে জয় পাকিস্তানের। সাফ ও সার্ক মিলে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান ৬ বার মুখোমুখি হয়েছে। এতে দুই দলের জয় পরাজয় সমান দুটি করে। বাকী দুই ম্যাচ ড্র। তবে সব মিলিয়ে দুই দেশের ১৭ বার সাক্ষাত। এতে রেকর্ড লাল সবুজদের পক্ষে। তাদের জয় সাতটিতে। পাঁচটিতে শেষ হাসি পাকিস্তানের। বাকী পাঁচ ম্যাচে জয়ের দেখা পায়নি কোনো দলই।

এই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ২০০৯ সালে দুই দলের ম্যাচ গোলশূন্য ড্র করেছিল। তখন পাকিস্তানের কোচ ছিলেন ২০০৩ সালে বাংলাদেশকে সাফে চ্যাম্পিয়ন করানো জর্জ কোটান। এবার পাকিস্তান সাফে খেলছে ফিফা কর্তৃক তিন বছরের নিষেধজ্ঞা কাটিয়ে। এই লম্বা সময়ে তারা ফুটবল থেকে দূরে থাকলেও ব্রাজিলিয়ান কোচ হোসে নগেইরার ছোঁয়ায় এবং প্রবাসী ফুটবলারদের উপস্থিতিতে এরা অনেকটা গুছিয়ে নিয়েছে। যে সূত্র ধরেই সাফের অন্যতম ফেবারিট নেপালকে ২-১ গোল পরাজিত করে পাকিস্তান। গোলদাতাও তাদের দুই ডেনমার্ক প্রবাসী ফুটবলার হাসান বশির এবং মোহাম্মদ আলী।

যেহেতু তাদের দলে এই দুইজন ছাড়াও আছেন ডেনমার্কে খেলা গোলরক্ষক ইউসুফ ইজাজ ভাট ও ইংল্যান্ডে খেলা ডিফেন্ডার জেশ রহমান তাই তাদেরকে কোনো ভাবেই খাটো করে দেখার কোনো কারণ নেই। বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া এই বিষয়টি সামনে এনে বলেন, পাকিস্তান অবশ্যই ভালো দল। প্রবাসী ফুটবলার আছে তাদের। তারাও এক ম্যাচ জিতে এসেছে। তাদেরকে হালকাভাবে নেয়ার সুযোগ নেই। তবে ডেনমার্ক প্রবাসী জামাল ভূঁইয়ার মতে, ভুটানকে হারানোর পর আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেছে আমাদের। ফলে আমরাও জয়ের আশা করছি।

ভুটানের বিপক্ষে গোল করা ডিফেন্ডার তপু বর্মনের মতে, প্রথম ম্যাচ জয়ের পর এখন পাকিস্তানকেও হারানোর পণ করেছি। আমরা পাকিস্তানকে হারিয় তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে চাই। এরপর তিনি যোগ করেন, আমরা পাকিস্তানের খেলা দেখেছি। তাদের বিপক্ষে জিততে হলে ভুটানের বিপক্ষে যা খেলেছি এর চেয়েও ভালো খেলতে হবে। এই ম্যাচে জিতলে আমাদের সেমিতে খেলাটা অনেকটা নিশ্চিত হবে।

এদিকে পাকিস্তানের কোচ হোসে নগেইরা জানান, বাংলাদেশ শক্তিশালী দল। তারা বেশ গতি সম্পন্ন। স্বাগতিক হিসেবে তারা ফেবারিট। আমাদেরও লক্ষ্য তাদের বিরুদ্ধে জিতে সেমির পথে এগিয়ে যাওয়া।


আরো সংবাদ



premium cement