২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জয়ের আনন্দে যা করলেন পগবা-এমবাপেরা

জয়ের আনন্দে যা করলেন পগবা-এমবাপেরা - ছবি : সংগৃহীত

রাশিয়া বিশ্বকাপের সেরা আবিষ্কার তিনি। তাই তার হাতেই ফিফার বিচারক মণ্ডলী তুলে দিয়েছে সেরা প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলারের ট্রফি। তবে ব্যক্তিগত স্বীকৃতির চেয়েও কিলিয়ান এমবাপে বেশি রোমাঞ্চিত ফ্রান্সের দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জয়ের অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পেরে। দেশের মানুষকে খুশি করতে পেরে গর্ববোধ করছেন ১৯ বছর বয়সী তরুণ এই ফরোয়ার্ড।

মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে রবিবার ক্রোয়েশিয়াকে ৪-২ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের জন্য বিশ্বকাপ জেতে ফ্রান্স। ম্যাচের ৬৫ মিনিটে দলের চতুর্থ গোলটি করেন কিলিয়ান এমবাপে। সেই সুবাদে ১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপে ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি পেলের পর সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে ফাইনালে গোল করার কীর্তি গড়েন তিনি। সবমিলিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপে তাঁর নামের পাশে জ্বলজ্বল করছে ৪টি গোল। তাঁকে নিয়ে প্রশংসার বন্যা বইছে ফুটবল দুনিয়ায়। তবে সে সব নয়, দলের সাফল্যে অবদান রাখতে পারার আনন্দই আত্মহারা করে তুলেছে এমবাপেকে। টুর্নামেন্ট জুড়ে নিজের ধারাবাহিক পারফরম্যান্স এবং দলের সাফল্যে দারুণ খুশি তিনি।

মস্কো ছাড়ার আগে এমবাপে বলেন, ‘আমি খুবই খুশি। বিশ্বকাপের আসরে একের পর এক কঠিন বাধা পেরিয়ে যোগ্য দল হিসেবেই আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। ফরাসি জনগণকে খুশি করতে পেরে আমরা গর্বিত। তাঁদের দৈনন্দিন দিনের নানা সমস্যা ভুলিয়ে দেওয়ার গুরুদায়িত্ব ছিল আমাদের ওপর। আমরা নিছক ফুটবল খেলার জন্য নয়, বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যই রাশিয়ায় এসেছিলাম। সেই লক্ষ্যে আমরা সফল হয়েছি। ব্যক্তিগত ভাবে টুর্নামেন্টের সেরা প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলারের পুরস্কার আমাকে আনন্দ দিয়েছে ঠিকই, তবে সবচেয়ে বেশি তৃপ্তি পেয়েছি দল বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ায়।’

এমবাপের মতোই টুর্নামেন্টটা দুর্দান্ত কেটেছে আঁতোয়া গ্রিজম্যানেরও। ফাইনালে তিনিও করেছেন গোল। নির্বাচিত হয়েছেন ফাইনালের সেরা খেলোয়াড়। এবারের আসরে তাঁর গোল সংখ্যাও চারটি। বিশ্বকাপ জয়ের পর যেন বিশ্বাসই হচ্ছিল না আতলেতিকো মাদ্রিদের তারকা ফরোয়ার্ড গ্রিজম্যানের। ট্রফি উঁচিয়ে ধরার জন্য যেন তর সইছিল না তাঁর। নিজের অনুভূতি বর্ণনা করে তিনি বলেন, ‘ম্যাচ শেষের বাঁশিটা বাজার পর জানি না আমি কোন জগতে ছিলাম! মনে হচ্ছিল আমি যেন আকাশে ভাসছি। ম্যাচটা খুব কঠিন ছিল। ক্রোয়েশিয়া দারুণ খেলেছে। তাদের হারিয়ে ট্রফিটা তুলে ধরার জন্য আমি রীতিমতো উদগ্রীব হয়ে উঠেছিলাম। শেষ পর্যন্ত ফ্রান্সে বিশ্বকাপ ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পেরে আমরা গর্বিত।’

উচ্ছ্বাসের জোয়ারে ভাসছেন ফরাসি অধিনায়ক হুগো লরিসও। আবেগঘন কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘ফরাসিদের খুশি করতে পারা, তাদের হাসতে দেখা, তাদের এভাবে আনন্দে মেতে উঠতে দেখাটা দারুণ রোমাঞ্চকর। আমরা এভাবেই আমাদের দেশকে দেখতে পছন্দ করি। আর সেই সুখের মুহূর্ত বয়ে আনার মতো শক্তি যে ফ্রান্স ফুটবল টিমের রয়েছে, তা আজ প্রমাণিত। আমরা নিজেদের নিয়ে গর্বিত হতে পারি। অধিনায়ক হিসেবে ট্রফিটা উঁচিয়ে ধরাটা আমার জীবনের সেরা মুহূর্ত হয়ে থাকবে।’ দেশকে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জেতানোর কঠিন লড়াইয়ে অবদান রাখার জন্য সতীর্থদের ধন্যবাদও জানান লরিস।

ফ্রান্সের বিশ্বকাপ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন পল পগবা। ম্যাচ শেষে আবেগ যেন বাঁধ মানছিল না ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের এই তারকা মিডফিল্ডারটির। কখনো বৃষ্টিভেজা মাঠে ডাইভ দিচ্ছেন, কখনো ট্রফি হাতে হারকিউলিসের ভঙ্গিতে ছবির পোজ দিচ্ছেন, আবার কখনও বিজয়ীর পদক গলা থেকে থেকে খুলে মায়ের গলায় ঝুলিয়ে দিচ্ছেন।

জয় উদযাপন করতে গিয়ে ইংল্যান্ড দলকে নিয়ে বিদ্রূপও করে ফেলেন পগবা। বিশ্বকাপ জেতার পর ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন তিনি। ভিডিওটিতে দেখা যায় বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে নিয়ে গান গাইছেন তিনি। গানের ফাঁকে ‘ইটস কামিং হোম’ বলে ইংল্যান্ডকে বিদ্রূপ করা শুরু করেন পগবা। আসলে এই তিনটি শব্দ ছিল এবার ইংরেজ সমর্থকদের প্রত্যাশার থিম সং।

পগবার ওই পোস্টে ক্ষুব্ধ এক ইংলিশ সমর্থক কমেন্ট করেন, ‘পগবা ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে খেলে, আমিও একজন ম্যান ইউ সমর্থক। তবু বলব, ওর এ ধরণের আচরণ অত্যন্ত অশালীন।’ বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে পরে তা ‘নিছক মজা করেছি’ বলে চেপে যান পগবা।


আরো সংবাদ



premium cement