২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আর্জেন্টিনার মান-সম্মান খোয়া যেতে বসেছে!

আর্জেন্টিনার মান-সম্মান খোয়া যেতে বসেছে! - সংগৃহীত

রাশিয়ায় অনুষ্ঠেয় ২১তম ফিফা বিশ্বকাপের আগে নিজ দেশকে নিয়ে সমালোচনা মুখরিত হলেন আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি খেলোয়াড় ডিয়েগো ম্যারাডোনা। আসন্ন বিশ্বকাপে বড় ধরণের বিপদে পড়বে আর্জেন্টিনা বলে মনে করেন তিনি। তার মতে, ‘গ্রুপ পর্বে কঠিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলতে হবে আর্জেন্টিনাকে। এই পর্বের বাঁধা টপকে যাওয়া কঠিনই হবে মেসি-মারিয়াদের।’

আসন্ন বিশ্বকাপে ‘ডি’ গ্রুপে খেলবে আর্জেন্টিনা। গ্রুপের অন্য দলগুলো হলো- আইসল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া ও নাইজেরিয়া। ১৬ জুন আইসল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আসন্ন বিশ্বকাপে যাত্রা শুরু করবে দু’বারের চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। গ্রুপ পর্ব টপকানোটাই আর্জেন্টিনার জন্য কঠিন বলে মনে করেন দেশটির অন্যতম সেরা খেলোয়াড় ম্যারাডোনা।

গ্রুপ পর্বে নাইজেরিয়াকে তো বটেই অন্যান্য দলকেও আর্জেন্টিনা হারাতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন জাতীয় দলের হয়ে ৯১ ম্যাচে ৩৪ গোল করা ম্যারাডোনা। তিনি বলেন, ‘আমি খুব সন্দিহান এবং সত্যিই অনেক বেশি সংশয়ের ব্যাপার এটি। আশা করি প্রথম পর্বে সবকিছু ভালোভাবেই করতে পারবে তারা। এই গ্রুপে আইসল্যান্ড, নাইজেরিয়া ও ক্রোয়েশিয়া আছে এবং এজন্যই এটি সহজ হবে না, মোটেও সহজ হবে না।’

১৯৭৮ ও ১৯৮৬ সালে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপের জয়ের সদস্য ম্যারাডোনা আবুধাবি স্পোর্টকে দেয়া একটি সাক্ষাতকারে জাতীয় দল নিয়েই বেশিরভাগ কথা বলেন। কোচ হোর্হে সাম্পাওলির সমালোচনা করে ৫৭ বছর বয়সী ম্যারাডোন বলেন, ‘এটি এমন একটা দল যাদের কোন অভিজ্ঞতা নেই, তাদের কোন নেতা নেই এবং তাদের ম্যাচ নিয়ে নেই কোন পরিকল্পনাও। মনে হচ্ছে এবার আমাদের মানসম্মান অনেক ঝুঁকির মধ্যে পড়তে যাচ্ছে, মানসম্মান বিসর্জন হতে যাচ্ছে।’

দল নিয়ে সমালোচনার পাশাপাশি আসন্ন বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার ফরমেশন নিয়েও কথা বলেন ম্যারাডোনা। তিনি বলেন, ‘আর্জেন্টিনা থেকে জানতে পেরেছি তিনি(কোচ) ২-৩-৩-২ ফরমেশনে খেলতে চায়। এটা অদ্ভুত। ১৯৩০ সালে এভাবে খেলা হতো।’

চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে রিয়ালের জয় রথ থামাতে চায় লিভারপুল

মোহাম্মদ সালাহ’র অসাধারণ পারফর্মেন্স অনুপ্রানীত লিভারপুলকে পৌঁছে দিয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে। কিয়েভে অনুষ্ঠিতব্য ম্যাচে ইংলিশ ক্লাবটির প্রতিপক্ষ সাম্প্রতিক সময়ে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শিরোপা সহজলভ্য হয়ে ওঠা রিয়াল মাদ্রিদ। টানা তৃতীয়বারের মত শিরোপা ঘরে তুলতে চায় রিয়াল মাদ্রিদ। তাদের ওই জয়রথ থামিয়ে এবার শিরোপা ঘরে তুলতে বদ্ধপরিকর জার্গেন ক্লপের লিভারপুল।

শুরুতে এই টুর্নামেন্টটির নাম ছিল ইউরোপীয়ান কাপ। যেখানে টানা পাঁচবার শিরোপা জয় করে নিজেদের অনন্য এক উচ্চতায় তুলে রেখেছে স্প্যানিশ জায়ান্টরা। এখন ক্লাবটির আরেক দফা স্বর্ণালী যুগ চলছে। যে যুগে বিগত ৫ বছরের মধ্যে টানা চারবার শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখছে রিয়াল মাদ্রিদ। টুর্নামেন্টের সাম্প্রতিক ফাইনালে রিয়াল তরকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে যেমন থামাতে পারেনি অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ, তেমনি থামাতে পারেনি জুভেন্টাস।
তবে আক্রমণাত্মক মেজাজ নিয়েই এবার টুর্নামেন্টের ফাইনালে পৌঁছেছে লিভারপুল। যে কারণে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে অবস্থিত অলিম্পিক স্টেডিয়ামের এই ফাইনাল ম্যাচটি চরম আক্রমন ও প্রতিআক্রমনের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

স্বপ্নের ফাইনাল:
এ পর্যন্ত ১২ বার ইউরোপীয় এই শিরোপা জয়ের কারণে রিয়াল মাদ্রিদ অন্তত এই টুর্নামেন্টে অন্য ক্লাব গুলোকে ছাড়িয়ে গেছে বহুদূর। লিভারপুলও অন্তত ৫ বার জয় করেছে এই ট্রফিটি। তবে সর্বশেষ তারা ইউরোপীয় ট্রফি জয় করেছে ২০০৫ সালে।

গত আগস্টে প্লে অফ ম্যাচে হফেনহেমকে হারিয়ে এবার ক্লপের অধীনে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে অংশগ্রহনের যোগ্যতা অর্জন করে লিভারপুল। এর পর তারা দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ম্যানচেস্টার সিটিকে হারিয়ে এগিয়ে যায় সামনের দিকে। এরপর রোমাকে হারিয়ে নিশ্চিত করে চূড়ান্ত পর্ব।
এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লীগে সর্বমোট ৪৬টি গোল করেছে লিভারপুল। যার মধ্যে একা সালাহ করেছেন ১১টি গোল। যদিও গত বছর রোমা থেকে লিভারপুলে যোগ দেয়া এই মিশরীয় এবারের আসরে ক্লাবটির হয়ে সব রকম ম্যাচ থেকে আদায় করেছে ৪৪টি গোল।
লিাভলপুলের ওয়েবসাইটকে দেয়া সাক্ষাৎকারে কোচ ক্লাপ বলেন,‘ আমরা যদি এবার শিরোপা জয় করতে পারি তাহলে সেটি হবে একটি ব্যতিক্রমী ব্যাপার। এটি হবে অসাধারণ ঘটনা।’

যদিও কোচ হিসেবে গত ৫টি বড় টুর্নামেন্টে পরাজয়কেই সঙ্গী করেছেন ক্লপ। তন্মধ্যে ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লীগে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের হয়ে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে হারটিও রয়েছে। তালিকায় আরো রয়েছে ২০১৬ সালের ইউরোপা লীগে লিভারপুলের হয়ে সেভিয়ার কাছে হার।

অভিজ্ঞতার কথা বললে কিয়েভে লিভারপুলকে আমলেই নেয়া যাবেনা। ক্লাবের কোন খেলোয়াড়ের নেই অতীতে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে খেলার অভিজ্ঞতা। তবে ক্লপ জানেন, তাদের অবজ্ঞা করার সুযোগ নেই জিনেদিন জিদানের দলের।
দলে সালাহর ভূমিকা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। তাকে মোকাবেলা করতে হবে রিয়াল মাদ্রিদের লেফট ব্যাক মার্সেলোর। এদিকে জিদান যদি তার আক্রমণভাগে গ্যারেথ বেলকেও অন্তর্ভুক্ত রাখেন তাহলে সঙ্গী কাসেমিরো, টনি ক্রুস এবং লুকা মড্রিচকে থামানোর জন্য লিভারপুলের মিডফিল্ড কি করবে সেটিই দেখার বিষয়। আর রোনালদোকে থামাতে সেন্ট্রাল ডিফেন্সই বা কি করবে?

রিয়াল মাদ্রিদই প্রথম কোন ক্লাব যারা ৫ বার চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শিরোপা জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে।
লিভারপুলকে হারাতে পারলে রোনালদো হবেন ৫বার লীগ শিরোপা বিজয়ী তারকা। যার সুবাদে তিনি হয়তো পেয়ে যাবেন সর্বাধিক ব্যালন ডিঅঁর খেতাব।

এদিকে রিয়ালের জিনেদিন জিদানও কোচ হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের টানা তিনটি শিরোপা জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছেন। ডিফেন্ডার রাফায়েল ভারানে বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে ইতিহাস গড়েছি। এখন শিরোপা জয়ের মাধ্যমে সেটিকে আরো সমৃদ্ধ করতে চাই। আর সেটি হবে অসাধারণ। আমি এখনো অনুধাবন করতে পারিনা, কি অর্জন করেছি এবং কি করতে যাচ্ছি। তবে যখন সবকিছু শেষ হয়ে যাবে তখন বুঝতে পারব।

অভিজ্ঞতার আলোকে এই টুকু বুঝতে পারছি জয় পাওয়াটা আমাদের জন্য কতটা কঠিন হবে। তবে অভিজ্ঞতা আমাদেরকে অবশ্যই আরো বেশী নিরাপদ এবং প্রশান্তি দিবে। এদিকে দুই ক্লাবের সমর্থকরাই কিয়েভের ম্যাচটি তাদের জন্য বেশী ব্যয়বহুল বলে অভিযোগ করেছে। বিশেষ করে আবাসন ব্যয় অত্যাধিক। সেই সঙ্গে সংকটও রয়েছে আবাসনে। লিভারপুলের প্রধান নির্বাহী পিটার মুরের দাবী এত বড় ইভেন্ট আয়োজন করার মত সামর্থ্য ওই শহরটির নেই। এদিকে উয়েফা সভাপতি আলেক্সান্ডার সেফেরিন নিশ্চিত করেছেন যে এমন পরিস্থিতিতে সেখানে যেতে রাজি হচ্ছেনা রিয়ালের সমর্থকরা। যে কারণে তাদের জন্য বরাদ্ধকৃত ১০০০ টিকিট ফিরিয়ে দিয়েছে ক্লাবটি। ওই টিকিট গুলো স্থানীয়ভাবে বিক্রয়ের উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।


আরো সংবাদ



premium cement